মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ায় এবার ইসরায়েলি খেজুর বয়কট
- প্রকাশের সময় : ০১:৪৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪
- / ৪০ বার পঠিত
পবিত্র রমজান মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইসরায়েলি খেজুর বয়কট চলছে। এই অঞ্চলের বৃহৎ দুটি মুসলিম দেশ মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ায় ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের তালিকায় নতুন করে যোগ হয়েছে এই পণ্য। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার কাস্টমস স্থানীয় বাজারে ইসরায়েলি খেজুর বিক্রির অভিযোগে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। অপরদিকে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে ইসরায়েলি পণ্য আমদানি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় পর্যন্ত ৩০ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এহেন নৃশংস হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের মুসলমানরা এক মাস ধরে ইসরায়েলি পণ্য ও কোম্পানি বয়কট করেছে।
মালয়েশিয়ায় এই বয়কট কার্যকর হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ফলে। এতে দেশটিতে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন সব কোম্পানির বেচা-বিক্রি কমে গেছে। স্টারবাক্সের মালয়েশিয়া শাখা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে নানা কাকুতি-মিনতি করে যাচ্ছে। ম্যাকডোনাল্ডস আবার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে।
সর্বশেষ এই বয়কট পণ্যর তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইসরায়েলি খেজুর। মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চ্যাট গ্রুপে বলা হচ্ছে, ইসরায়েলি খেজুর মুসলিম দেশগুলোতে বেনামে বিক্রি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সেলাঙ্গরের ক্লাং পোর্টে একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে একজনকে আটকের পর সতর্ক করে মালয়েশিয়ার একজন মন্ত্রী বলেন, ইসরায়েলি পণ্য বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যারা ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করে তাঁদের কোনো ছাড় নেই।
মালয়েশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী আরমিজান মোহাম্মদ আলী বৃহস্পতিবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘অভিযানে অফিসারেরা জাম্বো মেডজুলের ৭৩ প্যাকেট খেজুর বাজেয়াপ্ত করেছে। এসব খেজুর ইসরায়েল থেকে এসেছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। আমরা এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখি এবং যারা ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
বুধবার মালয়েশিয়ার কাস্টমস কর্মকর্তারা বলেন, ২০২২ সালে ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে খেজুর আমদানি করা হয়েছিল। দেশটির শুল্ক উপ-মহাপরিচালক দাতুক সাজালি মোহাম্মদ বলেন, খেজুরগুলো খাদ্যসামগ্রী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং পরে স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য পুনরায় প্যাকেজ করা হয়েছিল।
বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশ প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়ার ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি খেজুর আমদানি ও বিক্রি বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা ইন্দোনেশিয়ান কাউন্সিল অব ওলেমা (এমইউআই) এবং বৃহত্তম মুসলিম গণ সংগঠন নাদহাতুল উলেমা ইসরায়েল থেকে আমদানি করা বা পশ্চিম তীরে জন্মানো খেজুর খাওয়ার বিরুদ্ধে পৃথক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
বুধবার এমইউআই প্রধান সুদারনোটো বলেছেন, ‘আমরা ইন্দোনেশিয়ান মুসলিম বা অন্য ধর্ম সম্প্রদায় মানবতার পাশে থাকতে রমজানে ইসরায়েলি খেজুর কেনা থেকে বিরত থাকব। এটি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই। ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্পোরেশনগুলোর পণ্য বর্জনও একইসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে।’
আলাদাভাবে নাদহাতুল উলেমার চেয়ারম্যান আহমেদ ফাহরুর রোজি বলেছেন, ‘তাঁর সংগঠন ৪ কোটি ইন্দোনেশিয়ান মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করে।’ ইসরায়েলি খেজুরকে হারাম বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করার বিষয়ে এমইউআইয়ের ফতোয়াকে সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি দেখাতে এটাই সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা।