নিউইয়র্ক ০৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশ-ভারত ১০ সমঝোতা স্মারক ও নথি সই

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২০:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪
  • / ১২৫ বার পঠিত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরকালে ১০টি সমঝোতা স্মারক ও নথি সই হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি নতুন সমঝোতা স্মারক, ৩ সমঝোতা স্মারক নবায়ন এবং ভবিষ্যৎ কাজের ক্ষেত্র হিসেবে ২ যৌথ কার্যক্রমের নথি সই করেছে দুই দেশ। এদিকে ভারত সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর যৌথ এক সংবাদ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে স্বাক্ষরিত হয়েছে পাঁচটি নতুন সমঝোতা স্মারক তিনটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন। ডিজিটাল অংশীদারত্ব’ এবং ‘টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারত্ব’ বিষয়ক দুটি সমন্বিত রূপকল্প সামনে রেখে কাজ করবে ভারত এবং বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দুটি যৌথ কার্যক্রমের নথি সই করে দুই দেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা আমাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছি। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও একান্ত বৈঠক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আজ শনিবার আমাদের দু’পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমরা অন্য পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও সংযোগ, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, জ্বালানি ও শক্তি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমরা আমাদের দুই দেশের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তার সুবিধাজনক সময়ে যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ সফর করার আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে ঢাকা ও দিল্লি নতুনভাবে পথচলা শুরু করেছে, সে ধারাবাহিকতায় আমরা ‘রূপকল্প ২০৪১’র ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি। দুই দেশের মধ্যকার সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত এবং দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে আমরা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততার পথ এবং কার্যপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি আরও বলেন, উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের দিকনির্দেশনা দিতে ‘ভিশন স্টেটমেন্ট সমর্থন করেছে। বাংলাদেশ ও ভারত ‘ডিজিটাল পার্টনারশিপ’ ও ‘টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারত্বের’ জন্য একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গত জানুয়ারিতে নতুন সরকার গঠনের পর এটি তাঁর প্রথম কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফর বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের প্রধান প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু ও আঞ্চলিক অংশীদার। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম নেওয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত মূল্য দেয়। এর আগে দিল্লিতে এ মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এবারের সফরে শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার সকালে দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চৌকস একটি দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এখন নয়াদিল্লিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ-ভারত ১০ সমঝোতা স্মারক ও নথি সই: ডিজিটাল অংশীদারত্ব এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারত্ব বিষয়ক দুটি সমন্বিত রূপকল্প সামনে রেখে কাজ করবে ভারত এবং বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দুই যৌথ কার্যক্রমের নথি সই করে বাংলাদেশ। এগুলো হলো- ১. বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল অংশীদারত্বের বিষয়ে অভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা এবং ২. টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশ-ভারত সবুজ অংশীদারত্বের বিষয়ে অভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক নথি সই।

নতুন ৫টি সমঝোতা স্মারক হলো: ১. বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের সুনীল অর্থনীতি ও সমুদ্র সহযোগিতার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক; ২. ভারত মহাসাগরের ওশানোগ্রাফির ওপর যৌথ গবেষণা ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে বাংলাদেশের বিওআরআই ও ভারতের সিএসআইআরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক; ৩. বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগের ওপর সমঝোতা স্মারক; ৪. যৌথ ছোট স্যাটেলাইট প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ভারতের ন্যাশনাল স্পেস প্রোমোশন অ্যান্ড অথোরাইজেশন সেন্টারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক এবং ৫. ডিফেন্স স্টাফ কলেজের মধ্যে একাডেমিক সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক।

নবায়নকৃত ৩ সমঝোতা স্মারক হলো: ১. মৎস্যসম্পদ সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন; ২. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন এবং ৩. স্বাস্থ্য ও ওষুধ খাতে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন।

মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা: ভারতে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পৌঁছালে রাজঘাট সমিতি তাকে স্বাগত জানায়। পরে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা। ভারতের এ মহান নেতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি সমাধিতে ফুলের পাপড়িও ছিটিয়ে দেন। পরে তিনি পরিদর্শন বইয়ে সই করেন। গতকাল শনিবার বিকেলে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের কার্যালয়ে তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি পুনরায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যান। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেন। নয়াদিল্লির সময় বিকেল ৬টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ বিমানে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ঢাকা পৌঁছাবেন। সূত্র: দৈনিক সংগ্রাম।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ-ভারত ১০ সমঝোতা স্মারক ও নথি সই

প্রকাশের সময় : ০৮:২০:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরকালে ১০টি সমঝোতা স্মারক ও নথি সই হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি নতুন সমঝোতা স্মারক, ৩ সমঝোতা স্মারক নবায়ন এবং ভবিষ্যৎ কাজের ক্ষেত্র হিসেবে ২ যৌথ কার্যক্রমের নথি সই করেছে দুই দেশ। এদিকে ভারত সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর যৌথ এক সংবাদ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে স্বাক্ষরিত হয়েছে পাঁচটি নতুন সমঝোতা স্মারক তিনটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন। ডিজিটাল অংশীদারত্ব’ এবং ‘টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারত্ব’ বিষয়ক দুটি সমন্বিত রূপকল্প সামনে রেখে কাজ করবে ভারত এবং বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দুটি যৌথ কার্যক্রমের নথি সই করে দুই দেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা আমাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছি। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও একান্ত বৈঠক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আজ শনিবার আমাদের দু’পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমরা অন্য পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও সংযোগ, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, জ্বালানি ও শক্তি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমরা আমাদের দুই দেশের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তার সুবিধাজনক সময়ে যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ সফর করার আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে ঢাকা ও দিল্লি নতুনভাবে পথচলা শুরু করেছে, সে ধারাবাহিকতায় আমরা ‘রূপকল্প ২০৪১’র ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’ অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি। দুই দেশের মধ্যকার সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত এবং দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে আমরা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততার পথ এবং কার্যপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি আরও বলেন, উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের দিকনির্দেশনা দিতে ‘ভিশন স্টেটমেন্ট সমর্থন করেছে। বাংলাদেশ ও ভারত ‘ডিজিটাল পার্টনারশিপ’ ও ‘টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারত্বের’ জন্য একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গত জানুয়ারিতে নতুন সরকার গঠনের পর এটি তাঁর প্রথম কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফর বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের প্রধান প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু ও আঞ্চলিক অংশীদার। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম নেওয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত মূল্য দেয়। এর আগে দিল্লিতে এ মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এবারের সফরে শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

গতকাল শনিবার সকালে দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে শেখ হাসিনাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চৌকস একটি দল তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এখন নয়াদিল্লিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার দিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ-ভারত ১০ সমঝোতা স্মারক ও নথি সই: ডিজিটাল অংশীদারত্ব এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারত্ব বিষয়ক দুটি সমন্বিত রূপকল্প সামনে রেখে কাজ করবে ভারত এবং বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দুই যৌথ কার্যক্রমের নথি সই করে বাংলাদেশ। এগুলো হলো- ১. বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল অংশীদারত্বের বিষয়ে অভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা এবং ২. টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশ-ভারত সবুজ অংশীদারত্বের বিষয়ে অভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক নথি সই।

নতুন ৫টি সমঝোতা স্মারক হলো: ১. বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের সুনীল অর্থনীতি ও সমুদ্র সহযোগিতার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক; ২. ভারত মহাসাগরের ওশানোগ্রাফির ওপর যৌথ গবেষণা ও দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে বাংলাদেশের বিওআরআই ও ভারতের সিএসআইআরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক; ৩. বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগের ওপর সমঝোতা স্মারক; ৪. যৌথ ছোট স্যাটেলাইট প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ভারতের ন্যাশনাল স্পেস প্রোমোশন অ্যান্ড অথোরাইজেশন সেন্টারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক এবং ৫. ডিফেন্স স্টাফ কলেজের মধ্যে একাডেমিক সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক।

নবায়নকৃত ৩ সমঝোতা স্মারক হলো: ১. মৎস্যসম্পদ সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন; ২. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন এবং ৩. স্বাস্থ্য ও ওষুধ খাতে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নবায়ন।

মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা: ভারতে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পৌঁছালে রাজঘাট সমিতি তাকে স্বাগত জানায়। পরে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শেখ হাসিনা। ভারতের এ মহান নেতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি সমাধিতে ফুলের পাপড়িও ছিটিয়ে দেন। পরে তিনি পরিদর্শন বইয়ে সই করেন। গতকাল শনিবার বিকেলে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের কার্যালয়ে তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি পুনরায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যান। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেন। নয়াদিল্লির সময় বিকেল ৬টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ বিমানে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ঢাকা পৌঁছাবেন। সূত্র: দৈনিক সংগ্রাম।