নিউইয়র্ক ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কোভিডের পর উ. কোরিয়ায় প্রথম পর্যটক যারা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৫৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • / ৭৭ বার পঠিত

কোভিড মহামারির পর ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ায় গেলেন ১০০ পর্যটক। তারা সবাই রাশিয়ার নাগরিক। এর আগে টানা কয়েক বছর পর্যটকদের জন্য বন্ধ ছিল দেশটির দরজা। ফলে উত্তর কোরিয়ার ট্যুরিস্ট পাওয়ার পর অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।

তেমনই একজন লেনা বাইচকোভা। তিনি জানান, তার দলের সব সদস্যরা রাশিয়ার শহর ভ্লাদিভোস্তক থেকে উত্তর কোরিয়ায় যাত্রা শুরু করেন। কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা ‘এয়ার কোরিও’র একটি বিমানে করে গত ৯ই ফেব্রুয়ারি তারা রাজধানী পিয়ংইয়ং পৌঁছান। বাইচকোভা বলেন যে, তিনি কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে উত্তর কোরিয়া নিয়ে তার যে কৌতূহল ছিল তা শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে। এটি এমন একটি দেশ যেখানে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ সবাই পান না। তাই সে দেশটি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে পারেননি তিনি।

মিত্র দেশ হিসেবে রাশিয়ার পর্যটকদের জন্য এই বিরল সুযোগটি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।

উত্তর কোরিয়ার পর্যটন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। পর্যটন থেকে খুব বেশি আয়ও করে না দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ছাত্র অটো ওয়ার্মবিয়ারকে ২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়া সফরের সময় আটক করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি একটি প্রোপাগান্ডা পোস্টার চুরি করেছিলেন। ১৭ মাস পর তিনি মুক্তি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। এর কিছুদিন পরই তার মৃত্যু হয়।

রুশদের জন্য যদিও এমন আশঙ্কার কোনো বিষয় ছিল না। তবে ভ্রমণ ব্লগার ইলিয়া ভোসক্রেসেনস্কি বলেন, উত্তর কোরিয়া আমাকে অতীতের সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুভূতি দিয়েছিল। গোটা শহরে একেবারেই কোনো বিজ্ঞাপন ছিল না। সেখানে শুধুমাত্র দলীয় স্লোগান ও পতাকা প্রদর্শিত হচ্ছিল।

চার দিনের ওই ট্রিপে প্রতিটি দর্শনার্থীর খরচ হয় প্রায় ৭৫০ ডলার। এই গ্রুপের সঙ্গে সবসময় একজন দোভাষী ছিল। ভ্রমণের অংশ হিসেবে মানসু হিলে থাকা উত্তর কোরিয়ার প্রয়াত নেতা কিম ইল সুং এবং কিম জং ইলের ব্রোঞ্জ মূর্তি পরিদর্শন করেন তারা। এছাড়া ম্যাঙ্গয়ংডে চিলড্রেনস প্যালেসে শিশুদের একটি সঙ্গীত ও নৃত্য উপভোগ করেন তারা। সবথেকে বড় আকর্ষণ ছিল মাসিকরিয়ং স্কি রিসোর্ট। সেখানে তিন দিন ছিলেন তারা।

মিত্র দেশ হলেও ছবি ও ভিডিও করার ক্ষেত্রে রাশিয়ানদের জন্যেও কঠিন নিয়ম ছিল। বাইচকোভা বলেন, আমাদেরকে সামরিক বাহিনী বা সাধারণ ইউনিফর্ম পরা লোকদের ছবি না তুলতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি নির্মাণ সাইট বা নির্মাণাধীন ভবনগুলির ছবি না তোলার নির্দেশনাও ছিল। নেতাদের প্রতিকৃতি বা ভাস্কর্যের সামনে কি কি করা যাবে না তাও বলে দেয়া হয়েছিল আগে থেকেই। বাইচকোভা বলেছেন যে, সেখান থেকে কেনার মতো খুব বেশি কিছু ছিল না। তবে দুটি দোকান ছিল একটি বিমানবন্দরে এবং একটি রাজধানীতে। সেখান থেকে তিনি বিভিন্ন খেলনা কিনতে পেরেছেন।

মহামারির আগে উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের সবচেয়ে বড় উৎস ছিল চীন। তবে প্রথম অনুমতি দেয়া হয়েছে রাশিয়ানদেরই। যা উত্তর কোরিয়ায় রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার লক্ষণ। বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার একে অপরের প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মধ্যেও শঙ্কা বাড়ছে।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এখনও। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনকে রাশিয়ায় উৎপাদিত একটি বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র একে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছে। সূত্র : মানবজমিন

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কোভিডের পর উ. কোরিয়ায় প্রথম পর্যটক যারা

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

কোভিড মহামারির পর ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ায় গেলেন ১০০ পর্যটক। তারা সবাই রাশিয়ার নাগরিক। এর আগে টানা কয়েক বছর পর্যটকদের জন্য বন্ধ ছিল দেশটির দরজা। ফলে উত্তর কোরিয়ার ট্যুরিস্ট পাওয়ার পর অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।

তেমনই একজন লেনা বাইচকোভা। তিনি জানান, তার দলের সব সদস্যরা রাশিয়ার শহর ভ্লাদিভোস্তক থেকে উত্তর কোরিয়ায় যাত্রা শুরু করেন। কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা ‘এয়ার কোরিও’র একটি বিমানে করে গত ৯ই ফেব্রুয়ারি তারা রাজধানী পিয়ংইয়ং পৌঁছান। বাইচকোভা বলেন যে, তিনি কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে উত্তর কোরিয়া নিয়ে তার যে কৌতূহল ছিল তা শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে। এটি এমন একটি দেশ যেখানে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ সবাই পান না। তাই সে দেশটি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে পারেননি তিনি।

মিত্র দেশ হিসেবে রাশিয়ার পর্যটকদের জন্য এই বিরল সুযোগটি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।

উত্তর কোরিয়ার পর্যটন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। পর্যটন থেকে খুব বেশি আয়ও করে না দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ছাত্র অটো ওয়ার্মবিয়ারকে ২০১৬ সালে উত্তর কোরিয়া সফরের সময় আটক করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি একটি প্রোপাগান্ডা পোস্টার চুরি করেছিলেন। ১৭ মাস পর তিনি মুক্তি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। এর কিছুদিন পরই তার মৃত্যু হয়।

রুশদের জন্য যদিও এমন আশঙ্কার কোনো বিষয় ছিল না। তবে ভ্রমণ ব্লগার ইলিয়া ভোসক্রেসেনস্কি বলেন, উত্তর কোরিয়া আমাকে অতীতের সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুভূতি দিয়েছিল। গোটা শহরে একেবারেই কোনো বিজ্ঞাপন ছিল না। সেখানে শুধুমাত্র দলীয় স্লোগান ও পতাকা প্রদর্শিত হচ্ছিল।

চার দিনের ওই ট্রিপে প্রতিটি দর্শনার্থীর খরচ হয় প্রায় ৭৫০ ডলার। এই গ্রুপের সঙ্গে সবসময় একজন দোভাষী ছিল। ভ্রমণের অংশ হিসেবে মানসু হিলে থাকা উত্তর কোরিয়ার প্রয়াত নেতা কিম ইল সুং এবং কিম জং ইলের ব্রোঞ্জ মূর্তি পরিদর্শন করেন তারা। এছাড়া ম্যাঙ্গয়ংডে চিলড্রেনস প্যালেসে শিশুদের একটি সঙ্গীত ও নৃত্য উপভোগ করেন তারা। সবথেকে বড় আকর্ষণ ছিল মাসিকরিয়ং স্কি রিসোর্ট। সেখানে তিন দিন ছিলেন তারা।

মিত্র দেশ হলেও ছবি ও ভিডিও করার ক্ষেত্রে রাশিয়ানদের জন্যেও কঠিন নিয়ম ছিল। বাইচকোভা বলেন, আমাদেরকে সামরিক বাহিনী বা সাধারণ ইউনিফর্ম পরা লোকদের ছবি না তুলতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি নির্মাণ সাইট বা নির্মাণাধীন ভবনগুলির ছবি না তোলার নির্দেশনাও ছিল। নেতাদের প্রতিকৃতি বা ভাস্কর্যের সামনে কি কি করা যাবে না তাও বলে দেয়া হয়েছিল আগে থেকেই। বাইচকোভা বলেছেন যে, সেখান থেকে কেনার মতো খুব বেশি কিছু ছিল না। তবে দুটি দোকান ছিল একটি বিমানবন্দরে এবং একটি রাজধানীতে। সেখান থেকে তিনি বিভিন্ন খেলনা কিনতে পেরেছেন।

মহামারির আগে উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের সবচেয়ে বড় উৎস ছিল চীন। তবে প্রথম অনুমতি দেয়া হয়েছে রাশিয়ানদেরই। যা উত্তর কোরিয়ায় রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার লক্ষণ। বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার একে অপরের প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মধ্যেও শঙ্কা বাড়ছে।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এখনও। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনকে রাশিয়ায় উৎপাদিত একটি বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র একে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত করেছে। সূত্র : মানবজমিন

হককথা/নাছরিন