নিউইয়র্ক ০৯:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কুমির নয়, খাল কেটে পানি আনছে আফগানরা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪
  • / ১১০ বার পঠিত

যুদ্ধবিদ্ধস্ত আফগানরা যেনো ফিনিক্স পাখি। পুড়ে গিয়েও আবার নবজন্ম হয় নতুন উদ্যমে। কিছু দিন আগেই কথা হচ্ছিলো যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানদের অর্থনীতি নিয়ে। বিশ্বমন্দায় বাঘা বাঘা দেশগুলো যেখানে খাবি খাচ্ছে সেখানে আফগানরা এগিয়ে যাচ্ছে দোর্দন্ড প্রতাপে। এবার আফগানদের নিয়ে নতুন আলোচনা সুয়েজ খালের চেয়েও বড় খাল খনন। রুক্ষ মরুভূমিতে ২৮৫ কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যের খাল খননের ভিডিও প্রকাশ করে বিশ্বকে আবারো চমকে দিল তালেবান সরকার।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বালির ওপর গর্জন করছে একঝাঁক অত্যাধুনিক খননযন্ত্র। প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ ,তিন হাজারের বেশি যন্ত্রপাতি নিয়ে দিন রাত কাজ করছে কোশ টেপা খাল খননে। কোশ টেপা খাল দিয়ে মূলত বয়ে যাবে আমু দরিয়ার পানি। প্রশ্ন হচ্ছে কোশ টেপা খননে আফগানদের লাভ কি?

আফগানিস্তান-তাজিকিস্তান সীমান্তে সৃষ্ট আমু দরিয়া উজবেকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কোশ টেপা খাল প্রকল্প এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে উত্তর আফগানিস্তানের শুষ্ক এলাকায় আমুদরিয়া নদীর ২০ শতাংশ পানি বয়ে নিয়ে যায়। তালেবানের আশা, তাদের প্রকল্প এ বাস্তবায়িত হলে মধ্য এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘতম নদীর নীল জলে সবুজ শ্যমল হয়ে উঠবে আফগানিস্তানের সাড়ে পাঁচ লাখ হেক্টর বালুকাময় মরুভূমি।

কোশ টেপা খালটিকে জোজনন প্রদেশের বিভিন্ন গ্রামের জন্য ‘গেমচেঞ্জার’ বা দিন বদলে পালা হিসবে বলা হচ্ছে । দেশের অন্যান্য জায়গার মতো এখানকার বাসিন্দারাও ক্রমবর্ধমান খাদ্য ঘাটতি, চার দশকের যুদ্ধ, টানা তিন মৌসুমের তীব্র ক্ষরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আফগানিস্তানজুড়ে গড় তাপমাত্রা ৭০ বছর ধরে ১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। খাল খনন শেষ হলে এর মাধ্যমে মরুভূমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে এবং চাষের আওতায় আসবে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হেক্টর জমি। এছাড়া আফগানিস্তানের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ এক তৃতীয়াংশ বেড়ে যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে সংকটের চরম সীমায় থাকা আফগানিস্তান।

২৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রকল্পটি বস্তবায়ন করতে আফগানদের গুনতে হবে ৯ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। এই বিশাল পরিমান অর্থ যোগানে কোন বিদেশি সাহায্য পাচ্ছে না তালেবান সরকার। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে খনন হবে কোশ টেপা খাল। ইতিমধ্যে ১০ মাসে ১০০ কিলোমিটারের বেশি খাল খনন করা হয়েছে। এই প্রথম আট মাসে খালটি খনন করতে আফগানিস্তানের খরচ হয়েছে অভ্যন্তরীণ রাজস্বের আট শতাংশ।

কোশ টেপা খাল খনন প্রকল্পটি অবশ্য নতুন নয়। উত্তর আফগানিস্তানে একটি খাল খননের পরিকল্পনা কয়েক দশক ধরে আলোচনায় ছিল। তবে তালেবান প্রশাসনের হাতে প্রকল্পটির অগ্রগতি অসাধারণ। এখন দেখার বিষয় এই মেগা প্রকল্পটি কতটা প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়। সূত্র : একাত্তর টিভি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কুমির নয়, খাল কেটে পানি আনছে আফগানরা

প্রকাশের সময় : ১১:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪

যুদ্ধবিদ্ধস্ত আফগানরা যেনো ফিনিক্স পাখি। পুড়ে গিয়েও আবার নবজন্ম হয় নতুন উদ্যমে। কিছু দিন আগেই কথা হচ্ছিলো যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানদের অর্থনীতি নিয়ে। বিশ্বমন্দায় বাঘা বাঘা দেশগুলো যেখানে খাবি খাচ্ছে সেখানে আফগানরা এগিয়ে যাচ্ছে দোর্দন্ড প্রতাপে। এবার আফগানদের নিয়ে নতুন আলোচনা সুয়েজ খালের চেয়েও বড় খাল খনন। রুক্ষ মরুভূমিতে ২৮৫ কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যের খাল খননের ভিডিও প্রকাশ করে বিশ্বকে আবারো চমকে দিল তালেবান সরকার।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বালির ওপর গর্জন করছে একঝাঁক অত্যাধুনিক খননযন্ত্র। প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ ,তিন হাজারের বেশি যন্ত্রপাতি নিয়ে দিন রাত কাজ করছে কোশ টেপা খাল খননে। কোশ টেপা খাল দিয়ে মূলত বয়ে যাবে আমু দরিয়ার পানি। প্রশ্ন হচ্ছে কোশ টেপা খননে আফগানদের লাভ কি?

আফগানিস্তান-তাজিকিস্তান সীমান্তে সৃষ্ট আমু দরিয়া উজবেকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কোশ টেপা খাল প্রকল্প এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে উত্তর আফগানিস্তানের শুষ্ক এলাকায় আমুদরিয়া নদীর ২০ শতাংশ পানি বয়ে নিয়ে যায়। তালেবানের আশা, তাদের প্রকল্প এ বাস্তবায়িত হলে মধ্য এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘতম নদীর নীল জলে সবুজ শ্যমল হয়ে উঠবে আফগানিস্তানের সাড়ে পাঁচ লাখ হেক্টর বালুকাময় মরুভূমি।

কোশ টেপা খালটিকে জোজনন প্রদেশের বিভিন্ন গ্রামের জন্য ‘গেমচেঞ্জার’ বা দিন বদলে পালা হিসবে বলা হচ্ছে । দেশের অন্যান্য জায়গার মতো এখানকার বাসিন্দারাও ক্রমবর্ধমান খাদ্য ঘাটতি, চার দশকের যুদ্ধ, টানা তিন মৌসুমের তীব্র ক্ষরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আফগানিস্তানজুড়ে গড় তাপমাত্রা ৭০ বছর ধরে ১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। খাল খনন শেষ হলে এর মাধ্যমে মরুভূমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে এবং চাষের আওতায় আসবে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হেক্টর জমি। এছাড়া আফগানিস্তানের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ এক তৃতীয়াংশ বেড়ে যাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে সংকটের চরম সীমায় থাকা আফগানিস্তান।

২৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রকল্পটি বস্তবায়ন করতে আফগানদের গুনতে হবে ৯ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। এই বিশাল পরিমান অর্থ যোগানে কোন বিদেশি সাহায্য পাচ্ছে না তালেবান সরকার। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে খনন হবে কোশ টেপা খাল। ইতিমধ্যে ১০ মাসে ১০০ কিলোমিটারের বেশি খাল খনন করা হয়েছে। এই প্রথম আট মাসে খালটি খনন করতে আফগানিস্তানের খরচ হয়েছে অভ্যন্তরীণ রাজস্বের আট শতাংশ।

কোশ টেপা খাল খনন প্রকল্পটি অবশ্য নতুন নয়। উত্তর আফগানিস্তানে একটি খাল খননের পরিকল্পনা কয়েক দশক ধরে আলোচনায় ছিল। তবে তালেবান প্রশাসনের হাতে প্রকল্পটির অগ্রগতি অসাধারণ। এখন দেখার বিষয় এই মেগা প্রকল্পটি কতটা প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়। সূত্র : একাত্তর টিভি।