টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডে ১০০ দিন পাড়ি

- প্রকাশের সময় : ১১:৪৬:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
- / ১০৪ বার পঠিত
টাইটানিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড নিয়ে দিব্যি ১০০ দিন কাটিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি। এই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে দীর্ঘ সময়। অস্ট্রেলিয়ান ওই ব্যক্তি হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষমাণ রোগী ছিলেন। তবে প্রতিস্থাপনের আগে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডটি শরীরে স্থাপন করা হয়েছিল।
বুধবার সিএনএন জানিয়েছে, ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। গত নভেম্বরে তিনি সিডনিতে অবস্থিত সেন্ট ভিনসেন্টস হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করেছিলেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি এই যন্ত্র শরীরে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং বাড়িতে বসে একজন হৃদ্যন্ত্র দাতার অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে চলতি মাসেই একজন হৃদ্যন্ত্র দাতা পাওয়া যায়। তখন পর্যন্ত কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল।
মোনাশ ইউনিভার্সিটি, সেন্ট ভিনসেন্টস হাসপাতাল এবং ডিভাইস নির্মাতা যুক্তরাষ্ট্রের-অস্ট্রেলীয় কোম্পানি ‘বাইভেকর’ একটি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতায় ভোগা ওই ব্যক্তি বর্তমানে ভালোভাবে সুস্থ হয়ে উঠছেন। কৃত্রিম এই হৃৎপিণ্ড দীর্ঘ সময় ধরে কার্যকর থাকার বিষয়টি চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন সম্ভাবনার সূচনা করেছে। এখনো পরীক্ষাধীন থাকা এই ডিভাইস তাই ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা হিসেবে অনুমোদন পেতে পারে।
বাইভেকর-এর প্রতিষ্ঠাতা অস্ট্রেলীয় বায়োইঞ্জিনিয়ার ডেনিয়েল টিমস। তিনি তাঁর বাবার হৃদ্রোগজনিত মৃত্যু থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই যন্ত্র উদ্ভাবন করেছিলেন। টিমস বলেন, ‘দীর্ঘদিনের গবেষণার ফল বাস্তবে রূপ নিতে দেখে অভিভূত লাগছে। রোগী এবং তাঁর পরিবারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, যারা আমাদের কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডের ওপর আস্থা রেখেছেন। তাদের সাহসিকতা ভবিষ্যতে আরও অনেকের জন্য জীবন রক্ষার পথ উন্মুক্ত করবে।’ কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডটি একটি চুম্বকের সাহায্যে স্থিতিশীল রাখা রোটর নিয়ে গঠিত। এটি সম্পূর্ণ টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি। এর মধ্যে কোনো ভাল্ভ বা যান্ত্রিক ভারবহন নেই। এই ডিভাইস দেহ এবং ফুসফুসে রক্ত পাম্প করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর প্রধান কারণ হৃদ্রোগ। প্রতি বছর হৃদ্রোগে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এই ডিভাইসের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো, হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষমাণ রোগীদের জন্য একটি কার্যকর বিকল্প প্রদান করা। কারণ অনেক সময় উপযুক্ত হৃদ্যন্ত্র দাতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সূত্র : আজকের পত্রিকা।