সৌদি-চীন নৈকট্য নিয়ে বিচলিত ইরানি প্রেসিডেন্ট বেইজিংয়ে
- প্রকাশের সময় : ০১:১৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- / ৪২ বার পঠিত
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি প্রেসিডেন্ট শি-র আমন্ত্রণে তিন দিনের এক রাষ্ট্রীয় সফরে মঙ্গলবার বেইজিং পৌঁছেছেন। গত ২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনও ইরানি প্রেসিডেন্ট চীন সফর করছেন। ইরানি নেতার চীন সফর নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কারণ, আমেরিকার তীব্র চাপের মধ্যে পড়া এই দুই দেশ গত বছরগুলোতে ক্রমাগত ঘনিষ্ঠ হয়েছে। দুই দেশ ২০২১ সালের মার্চ মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫ বছরের কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি সই করেছে। আগামী ২৫ বছরে ইরানে ৪০ হাজার কোটি ডলার চীনা বিনিয়োগ হবে বলে লক্ষ্য ধার্য হয়েছে। ইরানের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ অবকাঠামোর সর্বক্ষেত্রে চীনা বিনিয়োগ হচ্ছে। চীনা প্রকৌশলীরা সেখানে রাস্তা, সেতু, রেল লাইন নির্মাণ করছে।
ফলে, দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর চলবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ডিসেম্বরে চীনা প্রেসিডেন্টের সৌদি আরব সফরের সময় উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট জিসিসির নেতাদের নিয়ে তার এক শীর্ষ বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ ঘোষণা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় ইরানে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরপরই এক বিবৃতিতে বলেন, ইসলামিক রিপাবলিক কোনও দেশকে ইরানের ভৌগলিক সার্বভৌমত্বের অমর্যাদা করতে দেবে না। স্পষ্টতই তিনি অঙ্গুলি নির্দেশ করেন চীনের দিকে। তেহরানে চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এনে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
পরিস্থিতি এতটাই ঘোলাটে হয়ে পড়ে যে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং তার রিয়াদ সফর শেষে দেশে ফেরার এক সপ্তাহের মধ্যে চীনা ভাইস প্রিমিয়ার বা উপ-প্রধানমন্ত্রী হু চুনহুয়াকে তেহরান পাঠান। তেহরানে গিয়েই ক্ষুব্ধ ইরানি নেতাদের আশ্বস্ত করতে মি. হু বিবৃতি দিয়ে বলেন, “ইরানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চীন সবসময় পাশে থাকবে।” অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এবারে একেবারে শীর্ষ পর্যায়ে ইরানকে আশ্বস্ত করতেই মি. রাইসিকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গেছেন শি জিন পিং। বেইজিংয়ের মধ্যপ্রাচ্য নীতিও হয়তো খোলাসা করে ব্যাখ্যা করা হবে তার কাছে।
লন্ডনে রাজনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কিত গবেষণা সাময়িকী ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারেস্টের সম্পাদক এবং মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতির বিশ্লেষক সামি হামদি বলেন, শি জিনপিংয়ের রিয়াদ সফরের সময় জিসিসি জোটের সাথে শীর্ষ বৈঠক নিয়ে তেহরান-বেইজিং সম্পর্কে যে “কালো ছায়া” পড়েছিল সেটি সরানোর চেষ্টা হচ্ছে।“রাইসির এই সফর তিন দিনের। এত লম্বা এক সফরে তাকে আমন্ত্রণ করে মি. শি স্পষ্টতই ইরানকে বোঝাতে চেয়েছেন আমরা কখনই তোমাদের সাথে সম্পর্ককে খাটো করে দেখছি না,” বলছেন হামদি। সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক