নিউইয়র্ক ০৪:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

লিজ ট্রাস, ঋষি সুনাক- দৃষ্টি যখন ডাউনিং স্ট্রিটে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ জুলাই ২০২২
  • / ২৮ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পঞ্চম রাউন্ডের ভোট শেষে বৃটেনে ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের এমপিদের ভোটে চূড়ান্ত দফায় টিকে আছেন দুই প্রার্থী। তারা হলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক। সেপ্টেম্বরে দলীয় সদস্যদের ভোটে এ দু’জনের একজন হবেন দলটির প্রধান ও দেশের প্রধানমন্ত্রী। দু’জনেরই চোখ এখন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে। সেপ্টেম্বরে দলীয় নির্বাচনের আগে দলীয় সদস্যদের মন আন্দোলিত করে নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে চেষ্টা করবেন তারা। এর মধ্যে সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাকের (৪২) পদত্যাগের ফলে বরিস জনসনের পতনকে ত্বরান্বিত করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস তাকে ছেড়ে দেয়ার পাত্রী নন। বৃটেনের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কৌশলী প্রচারণা তিনি অনেক বছর ধরে নয়, মাত্র কয়েক মাস প্রচারণা চালিয়েছেন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যক্তিগত ব্যাকগ্রাউন্ডের মধ্যে আছে ব্যাপক পার্থক্য। মাত্র কয়েকদিন আগেও ঋষি সুনাক ছিলেন বৃটেনের চ্যান্সেলর।
তিনি ৪২ বছর বয়সী। বিবাহিত। আছে দুটি সন্তান। তিনি দীর্ঘ প্রলম্বিত ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার সমর্থক। করোনা মহামারিকালে তিনি বৃটেনের অর্থনীতিকে দৃঢ় রেখেছেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ নিয়ে তিনি প্রশ্নের মুখে রয়েছেন। অন্যদিকে লিজ ট্রাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। ৪৬ বছর বয়সী লিজ ট্রাস দু’সন্তানের মা। কনজার্ভেটিভ দলের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তার কম ট্যাক্স এবং মুক্ত বাণিজ্যের ব্যাপক সমর্থন আছে । তিনি ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার সময় রিমেইন গ্রুপে বা ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে এখন তিনি বলছেন, ওই ঘটনার জন্য অনুশোচনা করেন।
ঋষি সুনাক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি বিয়ে করেছেন ভারতের একজন প্রযুক্তি বিষয়ক বিলিয়নিয়ারের কন্যাকে। ওই বিলিয়নিয়ার বহু কোটি পাউন্ড সম্পদের মালিক। এর ফলে ঋষি সুনাককে বলা হয় ‘মহারাজা অব দ্য ডালি’। তিনি মাত্র ৩৯ বছর বয়সে হয়েছেন চ্যান্সেলর। পিতামাতা তাকে পড়িয়েছেন উইনচেস্টার কলেজে। তিনি পিপিই পড়তে যোগ দেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। অক্সফোর্ডে পড়ার পর তিনি যোগ দেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। সেখানেই পরিচয়, সাক্ষাৎ হয় তার ভবিষ্যত স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে। সেই যে জানাশোনা তা একসময় পূর্ণতায় রূপ নেয়। এই যুগল ২০০৯ সালে কনের ব্যাঙ্গালোরের বাড়িতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ওই বিয়ের অনুষ্ঠান হয় দু’দিন। তাতে যোগ দেন এক হাজার অতিথি।
বৃটেনে ফিরে যান এই দম্পতি। সেখানে পৌঁছার পর ঋষি সুনাক ফান্ড গঠনের কাজ করেন নিজের একটি ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য। থেলেমি পার্টানার্স নামে ২০১০ সালে ৭০ কোটি ডলার মুলধন নিয়ে এর যাত্রা শুরু করেন। রাজনীতিতে প্রবেশ করার আগে তিনি অবস্থান করতেন বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর রাজনীতিতে প্রবেশ। ২০১৫ সালে ইয়র্কশায়ারে রিচমন্ড থেকে এমপি নির্বাচিত হন। নিজের ব্যবসায়িক সম্পদ এবং তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সম্পদের কারণে তাকে মনে করা হয় বৃটিশ পার্লামেন্টে সবচেয়ে ধনী এমপিদের অন্যতম। তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন জর্জিয়ান স্টাইলের নজরকাড়া বাড়িতে। এখানে উল্লেখ্য, অক্ষতা মূর্তির পিতা এনআর নারায়ণ মূর্তি হলেন ভারতের ষষ্ঠ ধনী। তার আছে প্রযুুক্তি বিষয়ক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান ইনফোসিস।
পক্ষান্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাসের জন্ম অক্সফোর্ডে। সেখানেই তিনি পড়াশোনা করেন পিপিই’তে। তার পিতা ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। নাম জন ট্রাস। মা নার্স প্রিসিলা। তারা দু’জনেই ছিলেন বাম ঘরানার। পিতার চাকরিস্থল পরিবর্তন হওয়ার কারণে লিজ ট্রাস বড় হয়েছেন পেসলি, লিডস এবং কানাডায়। লিবারেল ডেমোক্রেটদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত একবিরোধে তিনি ডানপন্থি হয়ে ওঠেন। ২০১০ সালে সাউথ ওয়েস্ট নরফোকে এমপি নির্বাচিত হন। নেতৃত্বের লড়াইয়ে তিনি তার বিস্তৃত শিক্ষাকে ব্যবহার করেন।
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

লিজ ট্রাস, ঋষি সুনাক- দৃষ্টি যখন ডাউনিং স্ট্রিটে

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ জুলাই ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পঞ্চম রাউন্ডের ভোট শেষে বৃটেনে ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের এমপিদের ভোটে চূড়ান্ত দফায় টিকে আছেন দুই প্রার্থী। তারা হলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক। সেপ্টেম্বরে দলীয় সদস্যদের ভোটে এ দু’জনের একজন হবেন দলটির প্রধান ও দেশের প্রধানমন্ত্রী। দু’জনেরই চোখ এখন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে। সেপ্টেম্বরে দলীয় নির্বাচনের আগে দলীয় সদস্যদের মন আন্দোলিত করে নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে চেষ্টা করবেন তারা। এর মধ্যে সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাকের (৪২) পদত্যাগের ফলে বরিস জনসনের পতনকে ত্বরান্বিত করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস তাকে ছেড়ে দেয়ার পাত্রী নন। বৃটেনের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কৌশলী প্রচারণা তিনি অনেক বছর ধরে নয়, মাত্র কয়েক মাস প্রচারণা চালিয়েছেন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যক্তিগত ব্যাকগ্রাউন্ডের মধ্যে আছে ব্যাপক পার্থক্য। মাত্র কয়েকদিন আগেও ঋষি সুনাক ছিলেন বৃটেনের চ্যান্সেলর।
তিনি ৪২ বছর বয়সী। বিবাহিত। আছে দুটি সন্তান। তিনি দীর্ঘ প্রলম্বিত ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার সমর্থক। করোনা মহামারিকালে তিনি বৃটেনের অর্থনীতিকে দৃঢ় রেখেছেন। তবে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ নিয়ে তিনি প্রশ্নের মুখে রয়েছেন। অন্যদিকে লিজ ট্রাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। ৪৬ বছর বয়সী লিজ ট্রাস দু’সন্তানের মা। কনজার্ভেটিভ দলের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তার কম ট্যাক্স এবং মুক্ত বাণিজ্যের ব্যাপক সমর্থন আছে । তিনি ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার সময় রিমেইন গ্রুপে বা ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে এখন তিনি বলছেন, ওই ঘটনার জন্য অনুশোচনা করেন।
ঋষি সুনাক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি বিয়ে করেছেন ভারতের একজন প্রযুক্তি বিষয়ক বিলিয়নিয়ারের কন্যাকে। ওই বিলিয়নিয়ার বহু কোটি পাউন্ড সম্পদের মালিক। এর ফলে ঋষি সুনাককে বলা হয় ‘মহারাজা অব দ্য ডালি’। তিনি মাত্র ৩৯ বছর বয়সে হয়েছেন চ্যান্সেলর। পিতামাতা তাকে পড়িয়েছেন উইনচেস্টার কলেজে। তিনি পিপিই পড়তে যোগ দেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। অক্সফোর্ডে পড়ার পর তিনি যোগ দেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। সেখানেই পরিচয়, সাক্ষাৎ হয় তার ভবিষ্যত স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে। সেই যে জানাশোনা তা একসময় পূর্ণতায় রূপ নেয়। এই যুগল ২০০৯ সালে কনের ব্যাঙ্গালোরের বাড়িতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ওই বিয়ের অনুষ্ঠান হয় দু’দিন। তাতে যোগ দেন এক হাজার অতিথি।
বৃটেনে ফিরে যান এই দম্পতি। সেখানে পৌঁছার পর ঋষি সুনাক ফান্ড গঠনের কাজ করেন নিজের একটি ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য। থেলেমি পার্টানার্স নামে ২০১০ সালে ৭০ কোটি ডলার মুলধন নিয়ে এর যাত্রা শুরু করেন। রাজনীতিতে প্রবেশ করার আগে তিনি অবস্থান করতেন বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর রাজনীতিতে প্রবেশ। ২০১৫ সালে ইয়র্কশায়ারে রিচমন্ড থেকে এমপি নির্বাচিত হন। নিজের ব্যবসায়িক সম্পদ এবং তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সম্পদের কারণে তাকে মনে করা হয় বৃটিশ পার্লামেন্টে সবচেয়ে ধনী এমপিদের অন্যতম। তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন জর্জিয়ান স্টাইলের নজরকাড়া বাড়িতে। এখানে উল্লেখ্য, অক্ষতা মূর্তির পিতা এনআর নারায়ণ মূর্তি হলেন ভারতের ষষ্ঠ ধনী। তার আছে প্রযুুক্তি বিষয়ক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান ইনফোসিস।
পক্ষান্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাসের জন্ম অক্সফোর্ডে। সেখানেই তিনি পড়াশোনা করেন পিপিই’তে। তার পিতা ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। নাম জন ট্রাস। মা নার্স প্রিসিলা। তারা দু’জনেই ছিলেন বাম ঘরানার। পিতার চাকরিস্থল পরিবর্তন হওয়ার কারণে লিজ ট্রাস বড় হয়েছেন পেসলি, লিডস এবং কানাডায়। লিবারেল ডেমোক্রেটদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত একবিরোধে তিনি ডানপন্থি হয়ে ওঠেন। ২০১০ সালে সাউথ ওয়েস্ট নরফোকে এমপি নির্বাচিত হন। নেতৃত্বের লড়াইয়ে তিনি তার বিস্তৃত শিক্ষাকে ব্যবহার করেন।
হককথা/এমউএ