লাঠি ও পাথরে কাটাতার পেচিয়ে আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিল চীন

- প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০
- / ৭৬ বার পঠিত
স্যাটেলাইটে গালওয়ান উপত্যাকা। ছবি: সংগৃহীত
হককথা ডেস্ক: চীন হিমালয় বেষ্টিত সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের ওপর আক্রমণের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত। দেশটি দাবি করছে, তারা সীমান্তে ভারতের পাশে একটি তাঁবু বানিয়েছে, একটি নদী বাঁধ দিয়েছে, যন্ত্রপাতি এনেছে এবং লাঠি ও পাথরে কাটাতার জড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। এর আগে ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোহার রডের সঙ্গে তারকাটা লাগানো ছবি ভাইরাল হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির সামরিক সূত্রের দাবি অনুয়ায়ী এমন তৈরি অস্ত্র দিয়েই ভারতীয় সেনাদের ওপর হামলা করা হয়েছিল।
গত ১৫ জুন সোমবার রাতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত ও অন্তত ৭৬ জন গুরুতর আহত হন। শুক্রবার (১৯ জুন) গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ৪৫ বছরের মধ্যে এমন সংঘাত আর হয়নি। তবে চীনের পক্ষ থেকে হতাহতের কোনো খবর প্রকাশ করা হয়নি। সংঘর্ষের দিন চীনের হাতে আটক হওয়া ১০ ভারতীয় সেনা সদস্যকে মুক্তি দিয়েছে চীন। তবে চীন দাবি করেছে তারা কোনো ভারতীয় সেনাকে আটক করেনি।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় দেশের কূটনৈতিকরা একে অপরকে দোষারোপ করে আসছেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেছেন, লাদাখের গালওয়ান উপত্যাকা বেইজিংয়ের ভূখন্ড। সংঘর্ষের স্থানে ভারত একে একে তিন বার সীমান্ত অতিক্রম করেছে। অপরদিকে ভারতের দাবি, পূর্বপরিকল্পিতভাবে চীন সীমান্তে আক্রমণ চালিয়েছে। প্ল্যানেট ল্যাবের স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, সংঘর্ষের কয়েকদিন আগে অতিরিক্ত সেনা জড়ো করেছে চীন। এ ছাড়া একটি নদী বাঁধ দিয়েছে। পাশাপাশি বিরোধীয় এলাকার কাছে যন্ত্রপাতি জড়ো করতে দেখা গেছে।
অপরদিকে সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনায় সর্বদলীয় বৈঠক ঠেকেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী মোদিকে আক্রমণ করে কথা বললেও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে একমত পোষণ করেন। এতে নরেন্দ্র মোদি দাবি করেন, কেউ ভারতের ভূখন্ডে প্রবেশ করতে পারেনি।
সীমান্ত নিয়ে ১৯৬২ সালে চীন ও ভারতের মধ্যে সংর্ঘের পরে ১৯৬৭ এবং ১৯৭৫ সালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ৭৫ সালে চীনের হাতে অরুনাচলের গিরিপথে ৪ ভারতীয় সেনা গুলিতে নিহত হন। এরপরে সীমান্তে গুলিতে কেউ মারা যায়নি। চীনের সঙ্গে ৩ হাজার ৪৪০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে ভারতের।
১৯৯৬ সালে ভারত ও চীনের মধ্যে চুক্তি হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনো পক্ষই গোলাগুলি চালাবে না। অথবা কোনো কারণে কোনো রকম বিস্ফোরক ব্যবহার করবে না।
সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। মে মাসে লাদাখ সীমান্তবর্তী প্যাংগং লেকে ও সিকিম ভারত সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি না হলেও দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সবশেষ গত ১৫ জুন সোমবার প্রতিবেশি দেশ দুটির মধ্যে কোনো রকম গোলাগুলি ছাড়াই শারিরীক লড়াইয়ে ২০ ভারতীয় সেনা নিহতের ঘটনা ঘটে। অপরদিকে চীনের পক্ষ থেকে কোনো হতাহতের কোনো প্রকার বিস্তারিত জানানো হয়নি। (সূত্র: দৈনিক যুগান্তর)