আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধকে বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি রাশিয়ার এ যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের লড়াইয়ের সমতুল্য বলে উল্লেখ করেছেন। মস্কোর রেড স্কোয়ারে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজের সময় পশ্চিমাবিরোধী এক ভাষণে পুতিন রাশিয়াকে এমন এক যুদ্ধের শিকার হিসাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধকে রাশিয়ার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ বিজয় দিবসের ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, বিশ্ব ইতিহাসের মোড় ঘোরানোর এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে “প্রকৃত যুদ্ধ” ঘোষণা করেছে পশ্চিমারা।

তিনি দাবি করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল, এখন সেভাবেই রাশিয়া তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় লড়াই চালাচ্ছে। পুতিন তার ভাষণে বলেন, রাশিয়া একটা “শান্তিপূর্ণ” ভবিষ্যত চায়। এ সময় তিনি “ঘৃণা ও রাশিয়াভীতি”র বীজ বপনের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমারা বিশ্বের (বিভিন্ন দেশের) পারিবারিক মূল্যবোধও ধ্বংস করে দিচ্ছে। এবার মস্কোয় বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে বেলারুশ এবং মধ্য এশিয়ার কিছু দেশসহ সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর অনেক নেতা যোগ দেন।

রাশিয়া ৯ মে বিজয় দিবস পালন করে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের স্মরণে।
পুতিন ইউক্রেনের বর্তমান সরকারকে নাৎসীদের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “পশ্চিমারা ভুলে গেছে যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসীদের কারা পরাজিত করেছিল।” রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, পূর্ব ইউক্রেনের জনগণকে রক্ষা করা এবং ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাশিয়া নিয়েছে।

তিনি বলেন, “রাশিয়ার প্রত্যেকটি মানুষ ইউক্রেনে চলমান ‘বিশেষ রুশ সামরিক অভিযানে’ অংশ নেওয়া সৈন্যদের সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ।” রুশ জনগণের উদ্দেশ্যে পুতিন বলেন, “আমাদের মাতুভূমির ভাগ্য নির্ধারণ করে যে যুদ্ধ তা সব সময়েই একটা জাতীয় লড়াই এবং সব সময়েই তা পবিত্র।” সেই লড়াইয়ের চেয়ে “বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু হতে পারে না” – সম্মুখ রণাঙ্গনে যারা লড়ছে তাদের ওপরই নির্ভর করছে রাশিয়ার ভবিষ্যত নিরাপত্তা।

রেড স্কোয়ারে কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া সৈন্যদের উদ্দেশ্যে তিনি মন্তব্য করেন, “সবাই আপনাদের জন্য প্রার্থনা করছেন।’ রুশ প্রেসিডেন্ট তার ভাষণ শেষ করেন এই বলে যে “মাতৃভূমির প্রতি আমাদের ভালবাসার চেয়ে শক্তিশালী বিশ্বে আর কিছু নেই।” ভাষণ শেষে তিনি বলেন, “জয় আমাদেরই হবে, হুরা!” সূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা

বেলী/হককথা