নিউইয়র্ক ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রাশিয়া ছেড়েছে পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো, হতাশায় ডুবে যাচ্ছে জনজীবন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:২৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২
  • / ১৩৬ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বদলে যাচ্ছে রুশ নাগরিকদের নিত্য দিনের জীবনযাত্রা। ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কারণে পশ্চিমা দেশগুলো যে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তার ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে রাশিয়ার সাধারণ মানুষদের জীবনে। নগর জীবনে ভর করেছে আশাহীনতা। শপিং মল থেকে শুরু করে ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট, সব জায়গাতেই দেখা গেছে চাপা উদ্বেগ। কখন কোন পণ্য শেষ হয়ে যাবে, দোকান বন্ধ হয়ে যাবে এই আতঙ্ক ভর করেছে মানুষের মনে। এরইমধ্যে শত শত বিদেশি ব্র্যান্ড রাশিয়া ছেড়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ায় রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ মানুষের জীবন।
সুপারমার্কেটগুলোতে পাস্তা ও চালের মতো প্রয়োজনীয় খাবারের শেলফ ফাকা হয়ে গেছে। শিগগিরই খাদ্যের যোগান শেষ হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন রাশিয়ানরা। দেশটির এমন চিত্র ফুটে উঠেছে বৃটিশ গণমাধ্যম মিররের এক রিপোর্টে।
এক উদ্বিগ্ন রুশ নাগরিক জানালেন, দোকানগুলোতে প্রয়োজনীয় আর কিছুই বিক্রি হচ্ছে না। যা বাকি আছে তার দামও প্রচুর। গত ১৫ দিনে অর্ধেক দাম হারিয়েছে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল। ফলে জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশচুম্বী। সাধারণ বিল মেটাতেই হিমসিম খাচ্ছে পরিবারগুলো। মস্কোর বাসিন্দা দারিনা জানান, এক রাতের মধ্যেই বিড়ালের খাবারের দাম দুইগুন হয়ে গেছে। গত রাতে অনলাইনে এই দাম ছিল ৬০০ রুবল, এখন এটি ১১০০ রুবল হয়ে গেছে। প্রতি মিনিটে মিনিটে দাম বাড়ছে। এখন আমার বিড়ালের খাবারের দাম, আমার খাবারের থেকে বেশি।
অনলাইনে প্রচারিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার কিনতে শুরু করেছে। খাদ্য সংকট আসন্ন, এমন আতঙ্ক ভর করেছে রুশদের মনে। নিঝনি নভগোরদ শহরে একজনকে দেখা গেলো ১০০ প্যাকেট চিনি কিনছেন। যদিও তা ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিনেছেন নাকি বেশি দামে বিক্রির জন্য তা স্পষ্ট নয়। মস্কোর আরেক বাসিন্দা ইলিয়া বলেন, সোভিয়েত আমলেও কোকা-কোলা পাওয়া যেত। কিন্তু এখন তাও নেই। সামনে আর কোনো পশ্চিমা ব্র্যান্ড রাশিয়ায় থাকবে না। তিনি আরও বলেন, যেদিন আপনি আর চাইলেও এগুলো কিনতে পারবেন না, সেদিন বুঝবেন এগুলো কেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
রাশিয়া থেকে সরে যাচ্ছে ম্যাকডোনাল্ডসও। যদিও এখনো তাদের রেস্টুরেন্ট খোলা আছে। শেষ দিনগুলোতে সেখানে দেখা গেছে প্রচুর মানুষের ভীর। এ সপ্তাহেই বন্ধ হয়ে যাবে রাশিয়ায় থাকা তাদের ৮৫০টি রেস্টুরেন্ট। বন্ধের আগে কর্মীদের পুরো বেতন দেয়া হবে বলেও জানালেন সেখানকার কর্মীরা। ২৪ বছর বয়স্ক এক সরকারি কর্মকর্তা নিকা বলেন, তিনি তার স্থানীয় ব্রাঞ্চে খেতে এসেছেন, কারণ তিনি শিগগিরই এখানকার বার্গার ও ফ্রাইস মিস করবেন। তাই যতক্ষন এটি পাওয়া যাচ্ছে তিনি তা উপভোগ করতে চান। তিনি পাল্টা প্রশ্ন জুড়ে দিয়ে বলেন, আমি বুঝতে পারছি না কেনো সব ব্র্যান্ডগুলো রাশিয়া ছেড়ে যাচ্ছে, আমাদের অর্থের কি কোনো দাম নেই?
মস্কোতে কেএফসির একটি শাখায় কাজ করেন ভিয়াচেস্লাভ। তিনি বলেন, মানুষ তার চাকরি হারানোর ভয় পাচ্ছে। আমাদের পরিবার আছে, আমাদের ট্যাক্স দিতে হয়। সাধারণ রাশিয়ানদের কোনো ভুল নেই, অথচ তাদেরকে এর মূল্য দিতে হচ্ছে।
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রাশিয়া ছেড়েছে পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো, হতাশায় ডুবে যাচ্ছে জনজীবন

প্রকাশের সময় : ১০:২৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বদলে যাচ্ছে রুশ নাগরিকদের নিত্য দিনের জীবনযাত্রা। ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর কারণে পশ্চিমা দেশগুলো যে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তার ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে রাশিয়ার সাধারণ মানুষদের জীবনে। নগর জীবনে ভর করেছে আশাহীনতা। শপিং মল থেকে শুরু করে ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট, সব জায়গাতেই দেখা গেছে চাপা উদ্বেগ। কখন কোন পণ্য শেষ হয়ে যাবে, দোকান বন্ধ হয়ে যাবে এই আতঙ্ক ভর করেছে মানুষের মনে। এরইমধ্যে শত শত বিদেশি ব্র্যান্ড রাশিয়া ছেড়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ায় রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে বাধাগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ মানুষের জীবন।
সুপারমার্কেটগুলোতে পাস্তা ও চালের মতো প্রয়োজনীয় খাবারের শেলফ ফাকা হয়ে গেছে। শিগগিরই খাদ্যের যোগান শেষ হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন রাশিয়ানরা। দেশটির এমন চিত্র ফুটে উঠেছে বৃটিশ গণমাধ্যম মিররের এক রিপোর্টে।
এক উদ্বিগ্ন রুশ নাগরিক জানালেন, দোকানগুলোতে প্রয়োজনীয় আর কিছুই বিক্রি হচ্ছে না। যা বাকি আছে তার দামও প্রচুর। গত ১৫ দিনে অর্ধেক দাম হারিয়েছে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল। ফলে জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশচুম্বী। সাধারণ বিল মেটাতেই হিমসিম খাচ্ছে পরিবারগুলো। মস্কোর বাসিন্দা দারিনা জানান, এক রাতের মধ্যেই বিড়ালের খাবারের দাম দুইগুন হয়ে গেছে। গত রাতে অনলাইনে এই দাম ছিল ৬০০ রুবল, এখন এটি ১১০০ রুবল হয়ে গেছে। প্রতি মিনিটে মিনিটে দাম বাড়ছে। এখন আমার বিড়ালের খাবারের দাম, আমার খাবারের থেকে বেশি।
অনলাইনে প্রচারিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার কিনতে শুরু করেছে। খাদ্য সংকট আসন্ন, এমন আতঙ্ক ভর করেছে রুশদের মনে। নিঝনি নভগোরদ শহরে একজনকে দেখা গেলো ১০০ প্যাকেট চিনি কিনছেন। যদিও তা ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিনেছেন নাকি বেশি দামে বিক্রির জন্য তা স্পষ্ট নয়। মস্কোর আরেক বাসিন্দা ইলিয়া বলেন, সোভিয়েত আমলেও কোকা-কোলা পাওয়া যেত। কিন্তু এখন তাও নেই। সামনে আর কোনো পশ্চিমা ব্র্যান্ড রাশিয়ায় থাকবে না। তিনি আরও বলেন, যেদিন আপনি আর চাইলেও এগুলো কিনতে পারবেন না, সেদিন বুঝবেন এগুলো কেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
রাশিয়া থেকে সরে যাচ্ছে ম্যাকডোনাল্ডসও। যদিও এখনো তাদের রেস্টুরেন্ট খোলা আছে। শেষ দিনগুলোতে সেখানে দেখা গেছে প্রচুর মানুষের ভীর। এ সপ্তাহেই বন্ধ হয়ে যাবে রাশিয়ায় থাকা তাদের ৮৫০টি রেস্টুরেন্ট। বন্ধের আগে কর্মীদের পুরো বেতন দেয়া হবে বলেও জানালেন সেখানকার কর্মীরা। ২৪ বছর বয়স্ক এক সরকারি কর্মকর্তা নিকা বলেন, তিনি তার স্থানীয় ব্রাঞ্চে খেতে এসেছেন, কারণ তিনি শিগগিরই এখানকার বার্গার ও ফ্রাইস মিস করবেন। তাই যতক্ষন এটি পাওয়া যাচ্ছে তিনি তা উপভোগ করতে চান। তিনি পাল্টা প্রশ্ন জুড়ে দিয়ে বলেন, আমি বুঝতে পারছি না কেনো সব ব্র্যান্ডগুলো রাশিয়া ছেড়ে যাচ্ছে, আমাদের অর্থের কি কোনো দাম নেই?
মস্কোতে কেএফসির একটি শাখায় কাজ করেন ভিয়াচেস্লাভ। তিনি বলেন, মানুষ তার চাকরি হারানোর ভয় পাচ্ছে। আমাদের পরিবার আছে, আমাদের ট্যাক্স দিতে হয়। সাধারণ রাশিয়ানদের কোনো ভুল নেই, অথচ তাদেরকে এর মূল্য দিতে হচ্ছে।
হককথা/এমউএ