নিউইয়র্ক ০৩:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রাশিয়ার তৈরি ৬ লাখ একে-২০৩ রাইফেল পাচ্ছে ভারত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১৩৫ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ভারত ও রাশিয়া। এর মধ্যে একটি হলো পাঁচ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে ছয় লাখের বেশি একে-২০৩ রাইফেল ভারতে দুই দেশ যৌথভাবে উৎপাদন করবে।

পাশাপাশি রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার মেয়াদ ২০৩১ সাল পর্যন্ত বাড়াতে আলাদা একটি চুক্তি করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল সের্গেই সোইগুর একটি বৈঠক করেন। সেখানে চুক্তিগুলোয় স্বাক্ষর করেন দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়ার তৈরি ছয় লাখের বেশি একে-২০৩ রাইফেল পাবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীগুলো। দেশটির উত্তর প্রদেশের আমেথির একটি কারখানায় রাইফেলগুলো উৎপাদন করা হবে।

অন্যান্য অ্যাসল্ট রাইফেলের চেয়ে একে-২০৩ রাইফেলে ওজনে অনেকটাই হালকা হলেও, দারুণ শক্তিশালী। এই অত্যাধুনিক রাইফেলটির পাল্লা ৩০০ মিটার, অর্থাৎ তিনটি ফুটবল মাঠেরও বেশি দূরে গিয়ে লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে এই রাইফেলের বুলেট। শুধু তাই নয়, এই রাইফেল দিয়ে ৭.৬২ মিলিমিটারের বুলেট ছোঁড়া যায়। এই বুলেট শুধু আকারে বড় নয়, এর ভেদশক্তিও অনেক বেশি। একে-২০৩ রাইফেলের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী রাইফেলগ থেকে যে বুলেট ছোঁড়া যায়, তার আকার অনেকটাই ছোট, ৫.৫৬ মিলিমিটার।

একে-২০৩ রাইফেল কোনও সামরিক বাহিনীর বিশেষ অভিযানেও দারুণ কার্যকরী। কারণ, এই রাইফেলে উচ্চপ্রযুক্তির স্পেশাল সাইট ও গ্রিপ ব্যবহার করা হয়েছে।

এদিকে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলাদা একটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অংশ নেন রাজনাথ, সোইগুর, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।

বৈঠকের পরে রাজনাথ টুইট করে বলেন, প্রতিরক্ষা-সহযোগিতার ক্ষেত্রে কার্যকরী, ফলপ্রসূ ও সর্বাত্মক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে আজ। রাশিয়ার সঙ্গে বিশেষ কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে আমাদের। যা দেশের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।

আরও একটি টুইট করে রাজনাথের বক্তব্য, ‘ভারতের প্রতি বরাবরই রাশিয়ার গভীর সমর্থনে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা আশা করছি আমাদের যৌথ সহযোগিতা গোটা অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সুস্থিতি নিয়ে আসবে।’

চীনকে কটাক্ষ করে তার বক্তব্য, মহামারি, প্রতিবেশী বলয়ে সামরিক শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২০ সালের গ্রীষ্ম থেকে উত্তর সীমান্তে বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসন চ্যালেঞ্জ বাড়িয়েছে। কিন্তু ভারত তার রাজনৈতিক দৃঢ়তা ও দেশবাসীর কর্মদক্ষতার ফলে সেই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে।

গতকালই ভারত ও রাশিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বার্ষিক বৈঠক উপলক্ষ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দিল্লি সফরে এসেছেন। পুতিন বলেছেন, ভারত একটি বড় শক্তি, দীর্ঘদিনের ও সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বন্ধু। দুই দেশ জ্বালানি, মহাকাশ, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তির মতো বৈচিত্র্যময় খাতে একসঙ্গে কাজ করছে। আগামীদিনে প্রতিরক্ষা, মাদক পাচার রোধ, সন্ত্রাসবাদ দমন, আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা ফেরানোসহ দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। -আনন্দবাজার পত্রিকা, এশিয়ান নিউজ ও দ্য ট্রিবিউন

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

রাশিয়ার তৈরি ৬ লাখ একে-২০৩ রাইফেল পাচ্ছে ভারত

প্রকাশের সময় : ০৬:১২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ভারত ও রাশিয়া। এর মধ্যে একটি হলো পাঁচ হাজার কোটি রুপি ব্যয়ে ছয় লাখের বেশি একে-২০৩ রাইফেল ভারতে দুই দেশ যৌথভাবে উৎপাদন করবে।

পাশাপাশি রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার মেয়াদ ২০৩১ সাল পর্যন্ত বাড়াতে আলাদা একটি চুক্তি করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল সের্গেই সোইগুর একটি বৈঠক করেন। সেখানে চুক্তিগুলোয় স্বাক্ষর করেন দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়ার তৈরি ছয় লাখের বেশি একে-২০৩ রাইফেল পাবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীগুলো। দেশটির উত্তর প্রদেশের আমেথির একটি কারখানায় রাইফেলগুলো উৎপাদন করা হবে।

অন্যান্য অ্যাসল্ট রাইফেলের চেয়ে একে-২০৩ রাইফেলে ওজনে অনেকটাই হালকা হলেও, দারুণ শক্তিশালী। এই অত্যাধুনিক রাইফেলটির পাল্লা ৩০০ মিটার, অর্থাৎ তিনটি ফুটবল মাঠেরও বেশি দূরে গিয়ে লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে এই রাইফেলের বুলেট। শুধু তাই নয়, এই রাইফেল দিয়ে ৭.৬২ মিলিমিটারের বুলেট ছোঁড়া যায়। এই বুলেট শুধু আকারে বড় নয়, এর ভেদশক্তিও অনেক বেশি। একে-২০৩ রাইফেলের অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী রাইফেলগ থেকে যে বুলেট ছোঁড়া যায়, তার আকার অনেকটাই ছোট, ৫.৫৬ মিলিমিটার।

একে-২০৩ রাইফেল কোনও সামরিক বাহিনীর বিশেষ অভিযানেও দারুণ কার্যকরী। কারণ, এই রাইফেলে উচ্চপ্রযুক্তির স্পেশাল সাইট ও গ্রিপ ব্যবহার করা হয়েছে।

এদিকে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলাদা একটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অংশ নেন রাজনাথ, সোইগুর, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।

বৈঠকের পরে রাজনাথ টুইট করে বলেন, প্রতিরক্ষা-সহযোগিতার ক্ষেত্রে কার্যকরী, ফলপ্রসূ ও সর্বাত্মক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে আজ। রাশিয়ার সঙ্গে বিশেষ কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে আমাদের। যা দেশের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।

আরও একটি টুইট করে রাজনাথের বক্তব্য, ‘ভারতের প্রতি বরাবরই রাশিয়ার গভীর সমর্থনে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা আশা করছি আমাদের যৌথ সহযোগিতা গোটা অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সুস্থিতি নিয়ে আসবে।’

চীনকে কটাক্ষ করে তার বক্তব্য, মহামারি, প্রতিবেশী বলয়ে সামরিক শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি ২০২০ সালের গ্রীষ্ম থেকে উত্তর সীমান্তে বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসন চ্যালেঞ্জ বাড়িয়েছে। কিন্তু ভারত তার রাজনৈতিক দৃঢ়তা ও দেশবাসীর কর্মদক্ষতার ফলে সেই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে।

গতকালই ভারত ও রাশিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বার্ষিক বৈঠক উপলক্ষ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দিল্লি সফরে এসেছেন। পুতিন বলেছেন, ভারত একটি বড় শক্তি, দীর্ঘদিনের ও সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বন্ধু। দুই দেশ জ্বালানি, মহাকাশ, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তির মতো বৈচিত্র্যময় খাতে একসঙ্গে কাজ করছে। আগামীদিনে প্রতিরক্ষা, মাদক পাচার রোধ, সন্ত্রাসবাদ দমন, আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা ফেরানোসহ দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। -আনন্দবাজার পত্রিকা, এশিয়ান নিউজ ও দ্য ট্রিবিউন