আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথে হাঁটতে চাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে তারা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে। কিন্তু এ পদক্ষেপ সম্পর্কে দ্বিধাবিভক্ত খোদ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোই। সবগুলো দেশ রাশিয়ার তেল আমদানি নিষিদ্ধের পক্ষে মত দেয়নি। কোনো কোনো দেশ দৃঢ়ভাবে এ সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এ প্রেক্ষাপটে এক সাক্ষাৎকারে জার্মানির ফেডারেল অর্থমন্ত্রী রবার্ট হেবেক বলেন, যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে জার্মানির পূর্বাংশে সংকট দেখা দিতে পারে।
শুক্রবার রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির খবরে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এমন একটি প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির পরিকল্পনা করছে, যাতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বাতিলের কথা উল্লেখ রয়েছে।
জার্মান মন্ত্রী হেবেক বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, এ আশঙ্কাটিতে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না যে, আসলেই একটা ঘাটতি দেখা দিতে পারে।’ তিনি জানান, কিছুদিনের জন্য জ্বালানি তেলের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। পূর্ব জার্মানিতে যে রিফাইনারি (তেল শোধনাগার) থেকে তেল সরবরাহ করা হয়, সেটির পুরো অপরিশোধিত তেল আসে রাশিয়া থেকে। এটা জার্মানির সর্ববৃহৎ তেল শোধনাগারগুলোর একটি।
এ নিয়ে জোর প্রতিবাদ এসেছে হাঙ্গেরি সরকারের পক্ষ থেকে। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে তা হবে তার দেশের অর্থনীতির ওপর ‘পারমাণবিক বোমা ফেলার’ শামিল। এটা ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন বলেন, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে রাশিয়ার অপরিশোধিত ও পরিশোধিত তেল। এ প্রস্তাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশের মধ্যে কয়েকটি দেশ বিরোধিতা করেছে।
প্রস্তাবে অন্য দেশগুলোকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ছয় মাস সময় দেয়া হলেও হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়াকে দীর্ঘ সময় (২০২৩ সাল পর্যন্ত) দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এর আগে ইউরোপের ‘অবন্ধু’ দেশগুলোকে ডলারের পরিবর্তে রুশ মুদ্রা রুবলে জ্বালানির মূল্য পরিশোধের বিধি আরোপ করে রাশিয়া। এতোদিন জার্মানিসহ ইউরোপের দেশগুলো এ পদ্ধতিতেই গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করে আসছিল।
হককথা/এমউএ