রাশিয়াও জানে পরাজয় আসন্ন: জেলেনস্কি

- প্রকাশের সময় : ০২:৪৬:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
- / ৮৪ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভিডিওবার্তায় এই দাবি করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। অন্যদিকে ইউক্রেনের ওডেসায় রাশিয়ার মিসাইল হামলা।
রাশিয়ার যে সেনারা ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে, তাদের কথা ইউক্রেন প্রশাসন শুনতে পাচ্ছে বলে দাবি করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার দৈনিক ভিডিওবার্তায তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সেনারা ফোনে যখন বাড়ির সঙ্গে কথা বলছেন, ইউক্রেনের প্রশাসন তখন তা জানতে পারে। ওই কল শুনে ইউক্রেন জেনেছে, রাশিয়ার সেনাও বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, এই যুদ্ধে ইউক্রেন জযলাভ করবে। বস্তুত, রোববার যুদ্ধ ষষ্ঠ মাসে পড়ল। পূর্ব ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল রাশিয়া দখল করলেও লড়াই এখনো শেষ হয়নি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, বন্ধু দেশগুলির সহয়োগিতায় ইউক্রেন এই যুদ্ধে জয়লাভ করবে। শত্রুকে তারা উচিত শিক্ষা দেবে। এর জন্য তাদের আরো অস্ত্রের প্রয়োজন। তারা জানে, পশ্চিমা দেশগুলি তাদের সাহায্য করবে।
রাশিয়ার আক্রমণের পর প্রায় ৬৮ লাখ ইউক্রেনিয়ান দেশ ছেড়েছেন৷ জাতিসংঘের হিসেবে, এদের প্রায় ৩০ লাখ প্রতিবেশী দেশগুলো ছাড়িয়ে অন্যান্য দেশেও আশ্রয় নিয়েছেন৷ জার্মানিতে সাত লাখেরও বেশি ইউক্রেনিয়ান আশ্রয় নিয়েছেন৷ আরো ৭৭ লাখ দেশের ভেতরেই ঘরছাড়া হয়েছেন ৷
এদিকে ইউক্রেনের বন্দর শহর ওডেসায় মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার গণমাধ্যমকে প্রশাসন জানিয়েছে, ওডেসায় ইউক্রেনের সেনার একটি অস্ত্রাগার ছিল। অ্যামেরিকার দেওয়া জাহাজ বিধ্বংসীকারী মিসাইল হারপুন রাখা ছিল সেখানে। অস্ত্রাগারটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি জাহাজ নির্মাণ কারখানাও ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বন্দরের কাছে ইউক্রেনের একটি সেনা নৌকোও ধ্বংস বলে রাশিয়ার দাবি। ইউক্রেন অবশ্য এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। ঘটনায় বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর কোনো খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এদিকে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে খাদ্যশস্য সংক্রান্ত চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে। জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি হয়েছে। জাতিসংঘের উপস্থিতিতে ইউক্রেন থেকে খাদ্য়শস্য এবার আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়া হবে বলে রাশিয়া জানিয়েছে। বস্তুত ওডেসা বন্দর থেকেও খাদ্যশস্য যাওযার কথা। তার আগে রাশিয়ার এই আক্মরণ ফের বিতর্ক তৈরি করেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশটির রাজধানী কিয়েভে হামলার ঘটনা ঘটলেও বর্তমানে সেখানে আর নতুন হামলার কথা শোনা যাচ্ছে না৷ বরং রাজধানীর কেন্দ্রে এক প্রদর্শনী চলছে, যেখানে রাশিয়ার বিধ্বস্ত বিভিন্ন ট্যাংকসহ সামরিক যান জনসাধারণের দেখার জন্য রাখা হয়েছে৷ ছবিতে এক শিশু একটি ট্যাংক দেখছে ৷
জার্মান প্রেসিডেন্ট রোববার বলেছেন, রাশিয়া কেবল ইউক্রেন নয়, গোটা ইউরোপীয় সংহতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তার বক্তব্য, ”আমরা যেন কোনোভাবেই বিভক্ত না হয়ে পড়ি। বরং আমাদের একত্রে এই আক্রমণ প্রতিহত করতে হবে।ইউরোপ বিভক্ত হলে পুরো ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়বে।’
রোববার ক্যানাডা সরকারিভাবে জানিয়েছে, তাদের এক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে ইউক্রেনে। ওই নাগরিক ইউক্রেনের পক্ষে লড়াইয়ে নেমেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারিভাবে রাশিয়া অবশ্য সে কথা জানায়নি। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে। তার পরিবারের সঙ্গে দূতাবাস যোগাযোগ করছে।
এর আগে ক্যানাডার একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, দুই মার্কিন এবং একজন করে ক্যানাডা এবং সুইডেনের যোদ্ধা ইউক্রেনে নিহত হয়েছেন। অ্যামেরিকা এবং সুইডেন এখনো সরকারিভাবে কিছু জানায়নি। এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)
হককথা/এমউএ