নিউইয়র্ক ০৭:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুদ্ধবিরতির দাবি আরব নেতাদের, সাড়া নেই ব্লিনকেনের

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৯৩ বার পঠিত

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে গতকাল শনিবার জর্দানের আম্মানে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি তুলেছেন আরব নেতারা। তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ব্লিনকেন বলেছেন, এ সময় যুদ্ধবিরতি হলে হামাসই লাভবান হবে। এর আগে শুক্রবারই যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িক ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিল ইসরায়েল।

আরব নেতাদের সঙ্গে গতকালের বৈঠকে কঠিন সময় পার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

আলজাজিরার কূটনৈতিক প্রতিবেদক জেমস বে বলেছেন, আরব নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সঙ্গে একমত হননি। তাঁরা সবাই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চেয়েছেন। তবে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করাতে এবং বিদেশি নাগরিকদের অবরুদ্ধ উপত্যকাটি ত্যাগের জন্য শুধু মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে অটল ছিল যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠক শেষে জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরায়েল।

তাদের অবস্থান আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে হওয়া উচিত নয়। নিরপরাধ লোকজনকে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো কোনোভাবেই আত্মরক্ষা হতে পারে না।’ তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরিও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হামাসের হাতে বন্দি ব্যক্তিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তবে দেশটিকে অবশ্যই বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিতে হবে।

এর আগে ইসরায়েলের প্রতিবেশী লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্লিনকেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, লেবাননকে যুদ্ধে টেনে নেওয়া থেকে বিরত রাখা এবং এই অঞ্চলে টেকসই শান্তির প্রচেষ্টার জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মিকাতিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এর আগে শুক্রবার ব্লিনকেন বিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ সরবরাহের সুবিধার জন্য ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পরও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় হামাসের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি দেওয়া হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরুর পর থেকে তৃতীয়বারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে গেলেন।

লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ গাজার যুদ্ধে যোগ দিলে এ সংঘাতে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যরাও জড়িয়ে পড়তে পারে বলে ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলা চলছেই। গত শুক্রবার রাতভর দক্ষিণ গাজায় অভিযান চালিয়েছে তারা। গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় জাতিসংঘ পরিচালিত আল-ফাখোরা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ১২ জন নিহত হয়েছে।

অ্যাম্বুল্যান্সে হামলার কথা স্বীকার

ইসরায়েল শুক্রবার গাজার শিফা হাসপাতালের বাইরে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে আঘাত করার কথা স্বীকার করেছে। দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, হামাস তাদের লোকজন ও অস্ত্র পরিবহনে ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহার করছিল। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনায় কয়েকজন হামাস সদস্য নিহত হয়েছেন। এতে আরো বলা হয়, ইসরায়েল আগে থেকেই এলাকাটিকে ‘যুদ্ধ এলাকা’ ঘোষণা করে লোকজনকে দক্ষিণে চলে যেতে বলে আসছে।’

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, অ্যাম্বুল্যান্সে ওই বোমার আঘাতে ১৫ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ এ ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়েছে।

ইসরায়েলে হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় এক হাজার ৪০০ জনেরও বেশি নিহত ও ২০০ জনেরও বেশি অপহৃত হয়েছে। ইসরায়েল এর প্রতিশোধ নিতে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় যে বিধ্বংসী বোমা হামলা চালাচ্ছে তাতে গতকাল পর্যন্ত ৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের প্রায় অর্ধেক শিশু।

অনেক হামাস সদস্য হত্যার দাবি

গতকাল সকালে ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ) তাদের অভিযানের হালনাগাদ তথ্য দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তারা শুক্রবার ‘কয়েক ডজন’ হামাস সদস্যকে হত্যা এবং সংগঠনটির অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস গাজা উপত্যকার উত্তরে সুড়ঙ্গ এবং সামরিক কম্পাউন্ড আইডিএফ সেনাদের ওপর অনেক হামলার চেষ্টা চালিয়েছে।

আইডিএফ সেনারা ১৫ জন হামাস সদস্যের মুখোমুখি হয় এবং তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে। ট্যাংকের গোলায় হামাসের তিনটি পর্যবেক্ষণ পোস্ট ধ্বংস করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে আইডিএফ গাজার দক্ষিণেও একটি অভিযান চালায়। এ সময় তাদের সাঁজোয়া এবং প্রকৌশল কোরের সদস্যরা একটি সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসা ‘সন্ত্রাসী সেলের’ মুখোমুখি হয়। সেনারা হামাসের দলটির দিকে গোলা নিক্ষেপ করে তাদের হত্যা করে।

গতকাল ইসরায়েলি বাহিনী বলেছিল, তারা হামাসের শক্ত ঘাঁটি গাজা সিটিকে ঘিরে ফেলে এবং ব্যাটালিয়ন বা ব্রিগেড কমান্ডার পদের সমতুল্য ১০ জন জ্যেষ্ঠ হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তাদের ইসরায়েলে ৭ অক্টোবরের হামলার পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

আইডিএফ এই হালনাগাদ তথ্যে বিমান হামলার কথা উল্লেখ করেনি। তবে হামাসের হামলার পর থেকে গত প্রায় চার সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় তাদের বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। শুধু গাজা সিটিতেই ১০ হাজার বোমা বা গোলা ফেলা হয়েছে।

চার লাখ এখনো উত্তর গাজায়

মার্কিন বিশেষ দূত ডেভিড স্যাটারফিল্ড বলেছেন, ইসরায়েলের সরে যাওয়ার হুমকি ও টানা হামলার পরও এখনো প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় রয়ে গেছে। প্রসঙ্গত, ইসরায়েল তার কথিত হামাস দমনের অভিযানকে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির এই অংশেই কেন্দ্রীভূত করেছে। ইসরায়েলি বাহিনী অবশ্য গাজার দক্ষিণেও হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে, গাজার কোনো অংশই আর ইসরায়েলি হামলা থেকে নিরাপদ নয়।

গতকাল সকালে জর্দানের রাজধানী আম্মানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় স্যাটারফিল্ড বলেন, ৮ থেকে ১০ লাখ লোক গাজার দক্ষিণ অংশে চলে গেছে। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুদ্ধবিরতির দাবি আরব নেতাদের, সাড়া নেই ব্লিনকেনের

প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০২৩

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে গতকাল শনিবার জর্দানের আম্মানে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি তুলেছেন আরব নেতারা। তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ব্লিনকেন বলেছেন, এ সময় যুদ্ধবিরতি হলে হামাসই লাভবান হবে। এর আগে শুক্রবারই যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িক ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিল ইসরায়েল।

আরব নেতাদের সঙ্গে গতকালের বৈঠকে কঠিন সময় পার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

আলজাজিরার কূটনৈতিক প্রতিবেদক জেমস বে বলেছেন, আরব নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সঙ্গে একমত হননি। তাঁরা সবাই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চেয়েছেন। তবে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করাতে এবং বিদেশি নাগরিকদের অবরুদ্ধ উপত্যকাটি ত্যাগের জন্য শুধু মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে অটল ছিল যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠক শেষে জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরায়েল।

তাদের অবস্থান আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে হওয়া উচিত নয়। নিরপরাধ লোকজনকে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো কোনোভাবেই আত্মরক্ষা হতে পারে না।’ তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরিও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হামাসের হাতে বন্দি ব্যক্তিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তবে দেশটিকে অবশ্যই বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিতে হবে।

এর আগে ইসরায়েলের প্রতিবেশী লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্লিনকেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, লেবাননকে যুদ্ধে টেনে নেওয়া থেকে বিরত রাখা এবং এই অঞ্চলে টেকসই শান্তির প্রচেষ্টার জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মিকাতিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এর আগে শুক্রবার ব্লিনকেন বিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ সরবরাহের সুবিধার জন্য ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পরও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় হামাসের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি দেওয়া হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরুর পর থেকে তৃতীয়বারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে গেলেন।

লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ গাজার যুদ্ধে যোগ দিলে এ সংঘাতে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যরাও জড়িয়ে পড়তে পারে বলে ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা। এদিকে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলা চলছেই। গত শুক্রবার রাতভর দক্ষিণ গাজায় অভিযান চালিয়েছে তারা। গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় জাতিসংঘ পরিচালিত আল-ফাখোরা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ১২ জন নিহত হয়েছে।

অ্যাম্বুল্যান্সে হামলার কথা স্বীকার

ইসরায়েল শুক্রবার গাজার শিফা হাসপাতালের বাইরে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে আঘাত করার কথা স্বীকার করেছে। দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, হামাস তাদের লোকজন ও অস্ত্র পরিবহনে ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহার করছিল। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, ওই ঘটনায় কয়েকজন হামাস সদস্য নিহত হয়েছেন। এতে আরো বলা হয়, ইসরায়েল আগে থেকেই এলাকাটিকে ‘যুদ্ধ এলাকা’ ঘোষণা করে লোকজনকে দক্ষিণে চলে যেতে বলে আসছে।’

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, অ্যাম্বুল্যান্সে ওই বোমার আঘাতে ১৫ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ এ ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়েছে।

ইসরায়েলে হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায় এক হাজার ৪০০ জনেরও বেশি নিহত ও ২০০ জনেরও বেশি অপহৃত হয়েছে। ইসরায়েল এর প্রতিশোধ নিতে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় যে বিধ্বংসী বোমা হামলা চালাচ্ছে তাতে গতকাল পর্যন্ত ৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের প্রায় অর্ধেক শিশু।

অনেক হামাস সদস্য হত্যার দাবি

গতকাল সকালে ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ) তাদের অভিযানের হালনাগাদ তথ্য দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তারা শুক্রবার ‘কয়েক ডজন’ হামাস সদস্যকে হত্যা এবং সংগঠনটির অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস গাজা উপত্যকার উত্তরে সুড়ঙ্গ এবং সামরিক কম্পাউন্ড আইডিএফ সেনাদের ওপর অনেক হামলার চেষ্টা চালিয়েছে।

আইডিএফ সেনারা ১৫ জন হামাস সদস্যের মুখোমুখি হয় এবং তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে। ট্যাংকের গোলায় হামাসের তিনটি পর্যবেক্ষণ পোস্ট ধ্বংস করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে আইডিএফ গাজার দক্ষিণেও একটি অভিযান চালায়। এ সময় তাদের সাঁজোয়া এবং প্রকৌশল কোরের সদস্যরা একটি সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসা ‘সন্ত্রাসী সেলের’ মুখোমুখি হয়। সেনারা হামাসের দলটির দিকে গোলা নিক্ষেপ করে তাদের হত্যা করে।

গতকাল ইসরায়েলি বাহিনী বলেছিল, তারা হামাসের শক্ত ঘাঁটি গাজা সিটিকে ঘিরে ফেলে এবং ব্যাটালিয়ন বা ব্রিগেড কমান্ডার পদের সমতুল্য ১০ জন জ্যেষ্ঠ হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তাদের ইসরায়েলে ৭ অক্টোবরের হামলার পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

আইডিএফ এই হালনাগাদ তথ্যে বিমান হামলার কথা উল্লেখ করেনি। তবে হামাসের হামলার পর থেকে গত প্রায় চার সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় তাদের বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। শুধু গাজা সিটিতেই ১০ হাজার বোমা বা গোলা ফেলা হয়েছে।

চার লাখ এখনো উত্তর গাজায়

মার্কিন বিশেষ দূত ডেভিড স্যাটারফিল্ড বলেছেন, ইসরায়েলের সরে যাওয়ার হুমকি ও টানা হামলার পরও এখনো প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় রয়ে গেছে। প্রসঙ্গত, ইসরায়েল তার কথিত হামাস দমনের অভিযানকে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির এই অংশেই কেন্দ্রীভূত করেছে। ইসরায়েলি বাহিনী অবশ্য গাজার দক্ষিণেও হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে, গাজার কোনো অংশই আর ইসরায়েলি হামলা থেকে নিরাপদ নয়।

গতকাল সকালে জর্দানের রাজধানী আম্মানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় স্যাটারফিল্ড বলেন, ৮ থেকে ১০ লাখ লোক গাজার দক্ষিণ অংশে চলে গেছে। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা

হককথা/নাছরিন