ম্যাক্রোঁকে বন্ধু ঘোষণা ট্রাসের, একসঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা
- প্রকাশের সময় : ০৮:৫১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২
- / ৫৩ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে ‘বন্ধু’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। একইসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন উভয় নেতা। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) নতুন একটি রাজনৈতিক ক্লাবের প্রথম বৈঠকে তারা এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে ‘বন্ধু’ হিসেবে ঘোষণা করলেও টোরি দলের নেতৃত্বের প্রচারণার সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট তার ‘বন্ধু না শত্রু’ তা বলতে অস্বীকার করেছিলেন লিজ ট্রাস। অবশ্য ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ব্রিটেনের সঙ্গে তিনি ব্রেক্সিট-পরবর্তী সম্পর্কের ‘নতুন পর্ব’ আশা করছেন।
২০২৩ সালে উভয় দেশের মধ্যে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এবং বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উভয় নেতার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ইংলিশ চ্যানেলে ছোট নৌকায় অভিবাসী পারাপার ‘শেষ’ করার বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছেন উভয় নেতা।
বিবিসি বলছে, বৃহস্পতিবার প্রাগে ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের প্রথম বৈঠকে মিলিত হন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, নরওয়ে এবং বলকান অঞ্চলের দেশগুলোর নেতারা। তারা ইউক্রেনের যুদ্ধের ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি, অভিবাসন এবং নিরাপত্তা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে এই নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে ইউরোপিয়ান পলিটিক্যাল কমিউনিটি (ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায়) ব্যানারে এই শীর্ষ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, এই প্লাটফর্ম থেকে ‘ঐক্যের বার্তা’ পাঠানো হয়েছে।
বিবিসি বলছে, ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ট্রাসের জন্য সেটি ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বৈঠকের পর লিজ ট্রাস এবং ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। সেখানে উভয় নেতা ইংলিশ চ্যানেলে ছোট নৌকা পারাপার ‘শেষ’ করার লক্ষ্যে ‘উচ্চাভিলাষী’ প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এতে বোঝা যাচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘নির্দিষ্ট সময়ে’ আরও বিশদ বিবরণ দেবেন। এছাড়া এই দুই নেতা ‘পুনর্নবীকরণ দ্বিপাক্ষিক এজেন্ডা এগিয়ে নিতে’ ফ্রান্সে ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স শীর্ষ সম্মেলন করার পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছেন। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন: ‘আমাদের মূল্যবোধ এবং ইতিহাস রয়েছে তাই আমি খুশি যে আমরা আবার দেখা করেছি। এটি একটি দ্বীপ, তবে এই দ্বীপটি বাকি মহাদেশ থেকে আলাদা নয় তাই আমাদের মধ্যে অনেক কিছু মিল রয়েছে।’
বিবিসি বলছে, ইংলিশ চ্যানেলে অভিবাসীবাহী ছোট নৌকা পারাপার, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সামরিক চুক্তি এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের সাথে ব্রেক্সিট ব্যবস্থাসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এবং টোরি দলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রচারণার সময় লিজ ট্রাস বলেছিলেন, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিষয়ে ‘বিচার-বিবেচনা এখনও বাকি আছে’। ট্রাস আরও বলেছিলেন, তাকে (ম্যাক্রোঁ) ‘কথা নয় কাজের’ ভিত্তিতে বিচার করবেন তিনি।
অবশ্য ইউরেরাপের নতুন এই ফোরাম নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেও সংশয় ছিল যে, নতুন ফোরাম হয়তো একটি কথা বলার দোকানে পরিণত হতে পারে। তবে সম্মেলনের আগে লিজ ট্রাস স্পষ্ট করে দেন যে, নতুন এই ফোরামটি ‘(নতুন) ইইউ গঠন বা ইইউয়ের কোনো বিকল্প (সংগঠন) নয়’। তিনি পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউরোপের কাছাকাছি যাওয়ার বিষয়ে নয়’ বরং ‘আমাদের সবার মুখোমুখি হওয়া সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ইউরোপকে সাথে নিয়ে কাজ করার বিষয়ে’ এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন: ‘আপনি এবং আমি এখন একটি শক্তিশালী অবস্থানে আছি। এতে করে চলমান এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং ইউক্রেনের জন্য, ইউরোপের জন্য, বিশ্বের জন্য দীর্ঘমেয়াদী শান্তির নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ইউরোপের সম্ভাব্য সকল শক্তিকে নির্দেশ দিতে পারি।’ সম্মেলনের পর লিজ ট্রাস বলেছেন: ‘নেতারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য বৃহত্তর সম্মিলিত সংকল্প নিয়ে এই শীর্ষ সম্মেলন ত্যাগ করেন।’
হককথা/এমউএ