ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল মাঠে গড়াতে এখন দিন গণনার পালা। আর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে কাতারের দোহা হয়ে উঠবে বিশ্বফুটবলের প্রাণকেন্দ্র। সারাবিশ্ব থেকে ফুটবলপ্রেমীরা এরই মধ্যে ছুটে যাওয়া শুরু করেছেন সেখানে। তাদেরকে সেবা দিতে বাংলাদেশী বেশ কিছু গাড়িচালককে প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা যাতে পর্যটকদের সেবা দিতে পারেন এ জন্য ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
এ খবর দিয়ে অনলাইন আরব নিউজ বলছে, এবার বিশ্বকাপে সারাবিশ্বের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ জমায়েত হবেন কাতারে। এর ফলে সেখানে এখন যে পরিমাণ মানুষ আছেন, তাদের মোট সংখ্যা তখন শতকরা ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে। ২০ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর সময়কালে কাতারের দোহা হয়ে উঠবে আলো ঝলমলে এক নগরী। বিশ্বকাপ উপলক্ষে আগে থেকে যেসব ফুটবলভক্ত কাতারে যাচ্ছেন বা যাবেন, তাদেরকে সেবা দিয়ে বিভিন্ন ট্যাক্সি কোম্পানি এবং রাইড শেয়ারিং সার্ভিস ড্রাইভার নিয়োগ করেছে। এসব চালকের বেশির ভাগই বাংলাদেশি। এ কারণে দোহা’য় অবস্থিত বাংলাদেশ র্দূতাবাস বাংলাদেশি চালকদের দক্ষতা এবং ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে।
দূতাবাসের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান আরব নিউজকে বলেছেন, যদি পর্যটকদেরকে ভাল সেবা দিতে পারেন আমাদের চালকরা, তাহলে বাংলাদেশের জন্য তা হবে একটি ইতিবাচক ব্রান্ডিং। ১৫টি পরিবহন বিষয়ক কোম্পানির ৪২০ জন চালককে এই প্রশিক্ষণ দিয়েছেন কাতারের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশি শিক্ষকরা। যারা এই প্রশিক্ষণে যোগ দিতে পারেননি, তাদের জন্য অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
প্রশিক্ষণ নিয়েছেন চালক আবদুল মোতালেব। কাতারে প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছেন তিনি। বলেন, যাত্রীদের সঙ্গে কমিউনিকেট বা যোগাযোগের বিষয়ে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যাত্রীদের কিভাবে অভিনন্দন জানাতে হবে সে বিষয়ে ভাষাগত কিছু টিপস পেয়েছি আমরা। দেশটি সম্পর্কে কিছু মৌলিক তথ্য জানতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য কতটা উপকারী, তা প্রকাশ করতে পারবো না। আরেক বাংলাদেশি গাড়িচালক সাইদুল ইসলামকেও এই প্রশিক্ষণ সাহায্য করেছে জানিয়ে বলেছেন, বিশ্বকাপ ফুটবল দেখতে যেসব যাত্রী আসবেন কাতারে, তাদের বেশির ভাগই ব্যবহার করবেন ইংরেজি ভাষা। তাদের সঙ্গে কিভাবে কথা বলবো তা নিয়ে ভীত ছিলাম। কিন্তু প্রশিক্ষণ নেয়ার পর বিষয়টি সহজ হয়ে গেছে।
কিভাবে উপসাগরীয় এই দেশটিতে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেয়া যায় এই প্রোগ্রামটি তার একটি পাইলট প্রজেক্ট হয়ে থাকবে। উপসাগরীয় এই দেশে প্রায় ৪ লাখ বাংলাদেশি আছেন। তারা নির্মাণখাত, স্বাস্থ্যসেবা এবং সেবাখাতে নিযুক্ত। ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে আমরা উচ্চ মানের সাড়া পেয়েছি। দূতাবাস অন্য খাতগুলোতে অভিবাসী শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এমন কর্মসূচি হাতে নিতে পারে।