ফের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেহবাজ?
- প্রকাশের সময় : ০৪:৫৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৪৯ বার পঠিত
আরও একবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন শেহবাজ শরিফ। মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) নেত্রী এবং সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব।
তিনি জানান, দলীয়ভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য শেহবাজ শরিফ এবং পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পিএমএলএনের নেত্রী মরিয়ম নওয়াজকে মনোনীত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, শেহবাজ শরিফ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পিএমএলএন চেয়ারম্যান নওয়াজ শরিফের ছোটভাই; আর মরিয়ম হলেন নওয়াজ শরিফের মেয়ে।
এক্সপোস্টে মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, ‘পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন)’র নেতা জনাব মুহম্মদ নওয়াজ শরিফ জনাব মুহম্মদ শেহবাজ শরিফকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করেছেন, সেই সঙ্গে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য তিনি মিস মরিয়ম নওয়াজ শরীফকে মনোনীত করেছেন।’
এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জিতে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করে পিটিআই, দলটির চেয়ারম্যান ইমরান খান হন দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং পিএমএলএনের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেহবাজ শরিফ হন বিরোধী দলীয় নেতা।
২০২২ সালের ১০ এপ্রিল বিরোধী এমপিদের ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান। তারপর পিএমএলএন- পিপিপির সমন্বয়ে গঠিত হয় নতুন জোট সরকার এবং সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন শেহবাজ শরিফ। ওই মেয়াদে ১৬ মাস দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মোট আসনসংখ্যা ২৬৬টি। এসব আসনের মধ্যে ২৬৫টি আসনে নির্বাচন হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি। কোনো দল বা জোট যদি সরকার গঠন করতে চায়, তাহলে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অন্তত ১৩৩টি আসনে সেই দল বা জোটকে জয়ী হতে হবে। কিন্তু ৮ তারিখের ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমানে কারাবন্দি নেতা ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)— ৯২টি আসন। পিটিআইয়ের পর এই তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন)— ৭৫টি আসন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)— ৫৪টি আসন, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম)— ১৭টি আসন, জামায়াতে উলামায়ে ইসলাম- ফজলুর (জেইউআইএফ)—৪টি আসন এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থীরা পেয়েছেন ৯টি আসন।
ফলে এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থায় ছিল না কোনো রাজনৈতিক দলই। এই পরিস্থিতিতে কোন দল সরকার গঠন করতে যাচ্ছে এবং সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন কে— দুই প্রশ্নকে ঘিরে টানা কয়েক দিন ধরে অনিশ্চয়তা চলছিল এবং এ বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনা শুরু হয়েছিল দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে।
এর মধ্যে এমন আলোচনাও চলছিল যে পিএমএলএন এবং পিপিপির মধ্যে সমঝোতা হয়েছে যে এই দুই দল জোট সরকার গঠন করবে এবং দুই দল থেকে আড়াই বছর মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা হবে। এসব আলোচনার মধ্যে মঙ্গলবার এক্সে এই পোস্ট করেন পিএমএলএনের কেন্দ্রীয় নেত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব।
অবশ্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যে পিএমএলএন থেকে মনোনীত হতে যাচ্ছে— এমন ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন পিপিপির চেয়ারম্যান এবং দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়ালি ভুট্টো জারদারি। মঙ্গলবার লাহোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিলাওয়াল বলেন,
এটা সত্য যে, পিপিপির কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের ম্যান্ডেট নেই। আর এই কারণে আমি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থিতায় থাকছি না; আর পিপিপি কেন্দ্রে সরকার গঠনের অবস্থানে না থাকায় কোনও মন্ত্রণালয়েও যোগ দেবে না। আমরা দেশে বিশৃঙ্খলা বা দেশে চিরস্থায়ী সংকট দেখতে চাই না। সূত্র : ঢাকা পোষ্ট।