অন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিস হামলার বেঁচে যাওয়া একমাত্র হামলাকারী সালাহ আবদেসালাম দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ফ্রান্সের আদালত তাঁকে ‘বিরল যাবজ্জীবন’ সাজা দিয়েছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিরল যাবজ্জীবনের অর্থ হচ্ছে, ৩০ বছর পর তাঁর প্যারোলে মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ফ্রান্সে অপরাধীদের জন্য সবচেয়ে কঠিন শাস্তি এবং আদালত এ শাস্তি খুবই কম দিয়ে থাকেন।
২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বরে একদল হামলাকারী প্যারিসে গুলি চালিয়ে ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১৩০ ব্যক্তিকে মেরে ফেলেন। এ হামলার জন্য সালাহ আবদেসালাম ছাড়াও ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ফ্রান্সের আদালত। এর মধ্যে ছয়জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া এ বিচারকে আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিচার বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ হামলায় আক্রান্ত সাংবাদিক ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ নয় মাসের বেশি সময় ধরে বিশেষভাবে নির্মিত আদালতের বাইরে অপেক্ষায় থেকেছেন। অবশেষে এ মামলার রায় হলো।
প্যারিসের ওই হামলাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা মনে করা হয়। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর হামলাকারীরা বার, রেস্তোরাঁ, ফুটবল স্টেডিয়াম ও একটি সংগীত ভেন্যুতে হামলা চালিয়েছিলেন। এতে ১৩০ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পাশাপাশি শতাধিক আহত হয়েছিলেন।
এ বিচারের শুরুর দিকে আবদেসালাম নিজেকে কথিত ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর (আইএস) একজন সৈনিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। পরে তিনি ভুক্তভোগীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। সমাপনী বক্তব্যে আদালতকে আবদেসালাম বলেন, ‘তিনি খুনি কিংবা হত্যাকারী নন। তারপরও তাকে যদি দোষী সাব্যস্ত করা হয়, সেটি হবে ‘‘অবিচার’’।’ তিনি আরও দাবি করেন, হামলার রাতে তিনি আত্মঘাতী বোমাটির বিস্ফোরণ না ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরে সেটি তিনি প্যারিসের একটি শহরতলিতে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছিলেন।
তবে আদালতে প্রমাণ হয়েছে যে তাঁর আত্মঘাতী ভেস্টটি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। ফলে তিনি বিস্ফোরণ না ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এমন বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়।
হককথা/এমউএ