নিউইয়র্ক ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিজেকে ‘ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান’ দাবি করলেন নুসরাত জাহান

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৯
  • / ৩২৪ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: ধর্মে মুসলিম হয়েও দুর্গাপূজা উৎসবে অংশ নেয়ার পর ভারতের উত্তরপ্রদেশের একজন ইসলাম ধর্মীয় নেতার সমালোচনার মুখে পড়েন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। সমালোচনার জবাবে নুসরাত জাহান নিজেকে ‘ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের বিতর্কে তার কিছু আসে যায় না এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়ানোর জন্য সৃষ্টিকর্তা তাকে বার্তাবাহক হিসেবে পাঠিয়েছেন।
তৃণমূলের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান। আমি সব উৎসব পালন করি। আমি সবার ঊর্ধ্বে মানবতা ও ভালোবাসাকে শ্রদ্ধা করি।’ কলকাতার চালতাবাগান দুর্গাপূজার মন্ডপে তার স্বামী ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে দশমীর ঐতিহ্য সিন্দুর খেলায় অংশ নিয়ে নুসরাত বলেন, বিতর্ক আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর সোমবার ইত্তেহাস ওলামা-ই-হিন্দের সহ-সভাপতি মুফতি আসাদ কাসমি এই অভিনেত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, নুসরাত তার কাজ দ্বারা ‘ইসলাম ও মুসলমানদের অপমান’ করছেন। তার নাম এবং ধর্ম পরিবর্তন করা উচিত।
মুফতি আসাদ বলেন, এটি কোনো নতুন বিষয় নয়। যদিও ইসলাম তার অনুসারীদের কেবল আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার আদেশ দেয়, তা সত্ত্বেও তিনি হিন্দু দেবদেবীদের কাছে পূজা দিচ্ছেন। তিনি যা করেছেন তা ‘হারাম’ পাপ।
ইত্তেহাস ওলামা-ই-হিন্দের এই নেতা বলেন, ‘তিনি (নুসরাত) ধর্মের বাইরে বিয়ে করেছেন। তার নাম ও ধর্ম পরিবর্তন করা উচিত। ইসলামে এমন লোকের দরকার নেই; যারা মুসলিম নাম ধরে রাখেন এবং ইসলাম ও মুসলমানদের কলুষিত করেন।’
দুর্গাপূজা চলাকালীন লাল শাড়ি পরে নুসরাত জাহানকে তার স্বামীর সঙ্গে সুরুচি সংঘের মন্ডপে ঢাক বাজিয়ে নাচতে দেখা যায়। নিখিল জৈনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এই দম্পতির একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়; যেখানে ক্যাপশনে নিখিল লেখেন, ‘এবারই প্রথম আমার অপরূপা স্ত্রীর সঙ্গে পূজায় ঢাক বাজাচ্ছি।’
পূজার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নুসরাত জাহান বলেন, তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি বাড়াতে চেয়েছিলেন।
‘আমি মনে করি সব ধর্মের প্রতি আমার সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। বাংলায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা, আমি মনে করি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে অনুসরণ করেই আমি সঠিকভাবে কাজ করছি। এখানে আমরা সব ধর্মীয় উৎসবই উদযাপন করি।’
একই সুর নুসরাতের স্বামীর কথায়ও, ‘আমি মনে করি ভারতের প্রতিটি নাগরিকের, তাদের ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে সব ধর্মকেই গ্রহণ করা উচিত।’ ধর্মনিরপেক্ষতার সমর্থনে এভাবে কাজ করার জন্য অনেকেই এই রাজনীতিবিদের প্রশংসা করেছেন, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ নুসরাতের এই অংশগ্রহণের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন।
বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীও এই তৃণমূল সাংসদকে সমর্থন করেছেন এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ বিষয়ে নীরবতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। ২৯ বছর বয়সে বসিরহাটের সংসদ সদস্য নুসরাত জাহানকে এর আগে হিন্দু বিয়ের প্রতীক পরা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। সূত্র: এনডিটিভি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

নিজেকে ‘ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান’ দাবি করলেন নুসরাত জাহান

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৯

হককথা ডেস্ক: ধর্মে মুসলিম হয়েও দুর্গাপূজা উৎসবে অংশ নেয়ার পর ভারতের উত্তরপ্রদেশের একজন ইসলাম ধর্মীয় নেতার সমালোচনার মুখে পড়েন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। সমালোচনার জবাবে নুসরাত জাহান নিজেকে ‘ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের বিতর্কে তার কিছু আসে যায় না এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়ানোর জন্য সৃষ্টিকর্তা তাকে বার্তাবাহক হিসেবে পাঠিয়েছেন।
তৃণমূলের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি ঈশ্বরের বিশেষ সন্তান। আমি সব উৎসব পালন করি। আমি সবার ঊর্ধ্বে মানবতা ও ভালোবাসাকে শ্রদ্ধা করি।’ কলকাতার চালতাবাগান দুর্গাপূজার মন্ডপে তার স্বামী ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে দশমীর ঐতিহ্য সিন্দুর খেলায় অংশ নিয়ে নুসরাত বলেন, বিতর্ক আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর সোমবার ইত্তেহাস ওলামা-ই-হিন্দের সহ-সভাপতি মুফতি আসাদ কাসমি এই অভিনেত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, নুসরাত তার কাজ দ্বারা ‘ইসলাম ও মুসলমানদের অপমান’ করছেন। তার নাম এবং ধর্ম পরিবর্তন করা উচিত।
মুফতি আসাদ বলেন, এটি কোনো নতুন বিষয় নয়। যদিও ইসলাম তার অনুসারীদের কেবল আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার আদেশ দেয়, তা সত্ত্বেও তিনি হিন্দু দেবদেবীদের কাছে পূজা দিচ্ছেন। তিনি যা করেছেন তা ‘হারাম’ পাপ।
ইত্তেহাস ওলামা-ই-হিন্দের এই নেতা বলেন, ‘তিনি (নুসরাত) ধর্মের বাইরে বিয়ে করেছেন। তার নাম ও ধর্ম পরিবর্তন করা উচিত। ইসলামে এমন লোকের দরকার নেই; যারা মুসলিম নাম ধরে রাখেন এবং ইসলাম ও মুসলমানদের কলুষিত করেন।’
দুর্গাপূজা চলাকালীন লাল শাড়ি পরে নুসরাত জাহানকে তার স্বামীর সঙ্গে সুরুচি সংঘের মন্ডপে ঢাক বাজিয়ে নাচতে দেখা যায়। নিখিল জৈনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এই দম্পতির একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়; যেখানে ক্যাপশনে নিখিল লেখেন, ‘এবারই প্রথম আমার অপরূপা স্ত্রীর সঙ্গে পূজায় ঢাক বাজাচ্ছি।’
পূজার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নুসরাত জাহান বলেন, তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি বাড়াতে চেয়েছিলেন।
‘আমি মনে করি সব ধর্মের প্রতি আমার সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। বাংলায় আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা, আমি মনে করি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে অনুসরণ করেই আমি সঠিকভাবে কাজ করছি। এখানে আমরা সব ধর্মীয় উৎসবই উদযাপন করি।’
একই সুর নুসরাতের স্বামীর কথায়ও, ‘আমি মনে করি ভারতের প্রতিটি নাগরিকের, তাদের ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে সব ধর্মকেই গ্রহণ করা উচিত।’ ধর্মনিরপেক্ষতার সমর্থনে এভাবে কাজ করার জন্য অনেকেই এই রাজনীতিবিদের প্রশংসা করেছেন, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ নুসরাতের এই অংশগ্রহণের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন।
বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীও এই তৃণমূল সাংসদকে সমর্থন করেছেন এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ বিষয়ে নীরবতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। ২৯ বছর বয়সে বসিরহাটের সংসদ সদস্য নুসরাত জাহানকে এর আগে হিন্দু বিয়ের প্রতীক পরা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। সূত্র: এনডিটিভি।