টিকাবিরোধী বিক্ষোভ : কানাডার রাজধানীতে জরুরি অবস্থা জারি

- প্রকাশের সময় : ০৬:১৮:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২
- / ৩১ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডার রাজধানী অটোয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন শহরটির মেয়র জিম ওয়াটসন। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভের মুখে গতকাল রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
মেয়র বলেছেন, দিনকে দিন পুলিশের চেয়ে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ায় শহরটি ‘পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ চলে গেছে। চলমান বিক্ষোভ শহরের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্রাক চালকেরা অটোয়ার রাস্তাঘাট অচল করে দিয়েছে, ট্রাক দিয়ে ও তাঁবু খাটিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে তারা।
‘ফ্রিডম কনভয়’ নামে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল ট্রাকচালকদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা বাধ্যতামূলক করা ও দেশটির সরকারের নেওয়া বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে।
কানাডার রেডিও স্টেশন সিএফআরএ’তে মেয়র ওয়াটসন বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা শহরের মধ্যে হর্ন ও সাইরেন বাজিয়ে, বিভিন্ন জায়গায় আতশবাজি পুড়িয়ে রীতিমত উৎসবে পরিণত করে ক্রমাগত অসহিষ্ণু আচরণ করছেন। এটা পরিষ্কার যে আমরা সংখ্যায় কমে গেছি এবং আমরা হেরে যাচ্ছি। কিন্তু এ অবস্থা বদলাতে হবে এবং আমাদের শহর ফিরে পেতে হবে আমাদের।
যদিও সেজন্য পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি মেয়র। কিন্তু গতকাল পুলিশ বলেছে, তারা কঠোর হবে, এর মধ্যে বিক্ষোভকারীদের যারা সাহায্য করতে আসবে তাদের গ্রেপ্তার করার মতো পদক্ষেপও নিতে পারে পুলিশ।
জরুরি অবস্থার ফলে শহরের কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, ফ্রন্টলাইন কর্মী ও জরুরি সেবার জন্য ব্যবহার হওয়া যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারবে তারা এখন।
শহর কর্তৃপক্ষের দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান বিক্ষোভের কারণে শহরবাসীর নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার ওপর ঝুঁকি ও বিপদের আশংকা থাকার প্রেক্ষাপটেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
অটোয়ার বাসিন্দাদের অনেকেই ট্রাকচালকদের এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছেন।
করোনার টিকা না নেওয়া ট্রাক চালকরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় ফেরার পর তাদের কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে ৩০ জানুয়ারি এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। পরে টিকা ও লকডাউনবিরোধী আরও হাজার হাজার মানুষও এই বিক্ষোভে যোগ দেয়। বিক্ষোভকারীরা কানাডার পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশের রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। ফলে অটোয়ার কেন্দ্রস্থল অচল হয়ে যায়।
বিক্ষোভের মুখে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার পরিবার রাজধানী ছেড়ে অজানা স্থানে চলে যান।
এদিকে পুলিশ বলছে, এই বিক্ষোভে কিভাবে চরমপন্থি বক্তৃতা দেয়া হয়েছে সেটি নিয়ে তারা চিন্তিত।
কিম্বারলি বল নামে একজন বিক্ষোভকারী কয়েক ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে এসে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, এই আন্দোলনটা আমাদের স্বাধীনতার। এই আন্দোলনের কারণে আমাদের পরিচিত কিছু মানুষ, বন্ধু চাকরি হারিয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, কোভিডের টিকা কতটা নিরাপদ ও এর কার্যকারিতা নিয়ে তিনি সন্দিহান ছিলেন।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি কমায় কোভিড-১৯ টিকা এবং টিকার কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা বিরল।
অধিকাংশ কানাডিয়ান টিকার পক্ষে এবং দেশটিতে এ পর্যন্ত টিকা পাওয়ার যোগ্য ৮৩ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। -বিবিসি
হককথা/এমউএ