অ্যামেচিও ওর্তেগা
জন্ম ১৯৩৬ সালে, নর্থ স্পেনে। বাবা রেলওয়ে বিভাগে শ্রমিক ছিলেন। মা বিভিন্ন বাসায় কাজ করে অর্থ উপার্জন করতেন। এমনই দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠেছেন ওর্তেগা। ১৩ বছর বয়সেই লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে শার্টের দোকানের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ নেন তিনি। খুব দ্রুত ব্যবসার খুঁটিনাটি নানা দিক নিজের দখলে চলে আসে তার। সেই কাজে থাকার সময়েই নিজের একটা দোকানের কথা ভাবতেন মনে মনে। খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হলো না। নিজের অসাধারণ মেধা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে মাত্র চার বছরের মধ্যেই তিনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথম দিকে তার কাজ ছিল কেবল পাইকারি অর্ডার নেওয়া। ১৯৭৫ সালে লা চরুনা শহরে সর্বপ্রথম ‘জারা’ নামে একটি শোরুম খোলেন ওর্তেগা। ধীরে ধীরে আরও বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা সম্প্রসারিত করেন। ১৯৮৮ সালে পর্তুগালে আরেকটি শাখা খোলেন। পরের বছর শোরুম খোলেন আমেরিকায়। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বিশ্বসেরা ধনীদের তালিকায় তৃতীয় স্থানটি এখন তার দখলে। নিজের ব্যবসাকে ছড়িয়েছেন ৮০টিরও বেশি দেশে। ৪০ বছর ধরে ফ্যাশন ব্যবসাকে জনপ্রিয় করেছেন বিশ্বব্যাপী। ৮৬ বছরের উদ্যমী-উদ্যোগী এ মানুষটি ইন্ডিটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। তাকে আধুনিক ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির ‘কিং’ বলা হয়।
বিনোদ চৌধুরী
বলছি নেপালের প্রথম বিলিয়নিয়ার বিনোদ চৌধুরীর কথা। সব বাধা উপেক্ষা করে নিজ গুণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি নুডলস বিক্রেতা থেকে হয়েছেন কোটিপতি। পারিবারিক আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা দেখাশোনা করার দায়িত্ব পালনকারী বিনোদ চৌধুরী বলেছেন, অল্প সময়ের মধ্যে নেপালে বড় ধরনের সাফল্যের সুযোগ রয়েছে। তিনি এখন তার পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চৌধুরী গ্রুপের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের হসপিটালিটি, রিয়েল এস্টেট, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সিমেন্টের ব্যবসা সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত রয়েছে। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত ওয়াই ওয়াই নুডলসের কারণে। ১৯৮০-এর দশকে নেপালে এই নুডলসের যাত্রা শুরু হয়। ২০০৫ সালে এটি ভারতে রপ্তানি শুরুর পর এখন তা এশিয়ার ৩০টি দেশে বিক্রি হচ্ছে।বিনোদ চৌধুরীকে ফোর্বস প্রথম নেপালি বিলিয়নিয়ার হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফোর্বসের এ স্বীকৃতি তার কাছে অনেকটা নোবেল বিজয়ের মতোই আনন্দ ও গৌরবের। ভারতের আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবি শংকরকে রোল মডেল হিসেবে অনুসরণ করেন তিনি।
স্যাম ওয়ালটন
যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের স্যাম ওয়ালটনের গল্পটা বেশ অনুপ্রেরণার। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সুপারস্টোর ওয়ালমার্ট এই প্রতিষ্ঠাতা সদিচ্ছাকে পুঁজি করে এগিয়েছিলেন। ওয়ালটন যখন ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন কিন্তু পুঁজি বলতে তেমন কিছুই ছিল না। স্যাম ওয়ালটন তার শ্বশুরের কাছ থেকে ২৫ হাজার ডলার ঋণ নেন। তারপর নানা ধাপ পেরিয়ে ৪২ বছর বয়সে আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে ওয়ালমার্ট প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৬২ সালে চালু হওয়ার পর ১৯৭৬ সালের মধ্যেই এই প্রতিষ্ঠানের মূল্য দাঁড়ায় ১৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারেরও বেশি। তাঁর সাফল্যের মূলমন্ত্র ছিল অল্প দাম, বেশি বিক্রি।
মজার বিষয় হচ্ছে আরকানসাসে ওয়ালটনের সেই প্রথম স্টোরই ভেঙে যায়। তবে এতে পিছিয়ে আসেননি হার না মানা ওয়ালটন। আর এখন তো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য সবাই চেনে ওয়ালমার্ট। ওয়ালমার্ট বিশ্বের সর্ববৃহৎ খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া আয়ের দিক থেকেও এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড়।
অক্ষয় রুপারেলিয়া
ব্রিটেনের কনিষ্ঠতম কোটিপতি হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ১৯ বছর বয়সী তরুণ অক্ষয় রুপারেলিয়া। তিনি কুইন এলিজাবেথ হাইস্কুলের ছাত্র। তবে এসব ছাপিয়ে নতুন এক পরিচয়ে বর্তমানে পরিচিত তিনি। তা হলো ব্রিটেনের কনিষ্ঠতম কোটিপতির তকমা। বন্ধুরা যখন লাঞ্চ ব্রেকে ফুটবল কিংবা বাস্কেট বল খেলায় ব্যস্ত থাকে তখন তিনি নিজের মোবাইল ফোনে ব্যবসা চালান। খেলার মাঠ নয়, সময় কাটান গ্রাহকদের সঙ্গে দরকষাকষি করে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য মিররে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, খুব কম বয়স থেকে নিজের অনলাইন এস্টেট এজেন্সির ব্যবসা পরিচালনা করছেন অক্ষয়। কাছের মানুষদের থেকে সাত হাজার পাউন্ড ধার করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। স্কুলের ক্লাস শেষ করে নির্দিষ্ট গ্রাহকদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেন তিনি। অন্য এজেন্টরা যে কাজের জন্য হাজার পাউন্ড নিয়ে থাকেন, সেই কাজে তিনি নেন মাত্র ৯৯ পাউন্ড। ব্যবসা শুরুর মাত্র ১৬ মাসের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠান ডোরস্টেপস ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় অ্যাসেট এজেন্সিগুলোর মধ্যে মাত্র ১৮ নম্বরে চলে এসেছে। ব্যবসা শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই বিনিয়োগকারীরা ডোরস্টেপসের শেয়ার কিনতে শুরু করেন। ফলে মাত্র এক বছরে অক্ষয়ের এই অনলাইন প্রতিষ্ঠানের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ মিলিয়ন পাউন্ড বা ১০৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা।