জাপানের রাজনীতিতে জনপ্রিয় হচ্ছে তরুণ নেতৃত্ব
- প্রকাশের সময় : ১২:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩
- / ১১৪ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পূর্ব এশিয়ার প্রভাবশালী এবং অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের শক্তিশালী দেশ জাপান। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সামরিক শক্তির কারণে জাপান বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের যে একাধিপত্য, তাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে ইউরোপের সম্মিলিত শক্তি ও জাপান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বিশ্বের ৮টি প্রধান পরাশক্তির মধ্যে জাপান ছিল উল্লেখযোগ্য। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হলো দেশটির উপ-নির্বাচন। এতে বেশকিছু নতুন মুখ সামনে এসেছে। আর নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়েছে জাপানের মানুষ।
রোসুকে তাকাশিমা
জাপানের পাবলিক ব্রডকাস্টার এনএইচকে (NHK) বলছে, দেশটির ইতিহাসে গত রোববার সবচেয়ে কমবয়সী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন রোসুকে তাকাশিমা। তিনি ১ মে থেকে হায়োগো প্রিফেকচারের আশিয়া সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তিনি নির্বাচনে ৪৬ শতাংশ ভোট পান। ২৬ বছর ২ মাস বয়সী এ তরুণ গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ প্রকৌশল বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন।
তাকাশিমা বলেন, ‘আশা করি, জনগণ আমাকে আমার বয়স দিয়ে মূল্যায়ন করবেন না, বরং আমার কাজের অর্জনের মধ্য দিয়েই তারা আমাকে দেখবেন। আমার বয়স যেহেতু কম, তাই আমি অনেক পথ ছুটতে পারব। আশিয়াকে আমি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বসবাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
শিন
এবার জাপানে হিরাতসুকা সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে অংশ নিতে প্রচারণা চালিয়েছেন ২৬ বছর বয়সি এক ইউটিউবার। তিনি নির্বাচনে জয়ীও হয়েছেন। তার নাম ‘শিন দ্য হিরাতসুকা ইউটিউবার’। একটি পোকেমন কার্ডের দোকানের মালিক শিন। তবে নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত তিনি। সাধারণত তার স্থানীয় শহরের দোকান এবং সমসাময়িক ঘটনা নিয়েই বেশি ভিডিও তৈরি করেন। শিনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, ইউটিউব ভিডিও তৈরি করার সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয় তার। এরপর তিনি যখন সিটি কাউন্সিলের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তখন সেই অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগান। এজন্যই জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা বেশি ছিল বলে মনে করেন তিনি।
আরফিয়া ইরি
এ নির্বাচনে সফল হওয়া আরেক তরুণ নেতৃত্ব আরফিয়া ইরি। তিনি নারী অধিকার এবং লিঙ্গ সমতার পক্ষে কথা বলেছেন। উইঘুর বংশোদ্ভূত হিসেবে তিনি প্রথম কোনো সংসদের সদস্য হলেন। ইরির জন্ম জাপানে। তবে তিনি ছোটবেলায় চীনে থেকেছেন। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন এবং জাতিসংঘে কাজ করেছেন। উইঘুরদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধেও সরব তিনি। ৩৪ বছর বয়সী এ তরুণী বিভিন্ন সময়ে জাপানের পুরুষ-শাসিত রাজনীতি ও সমাজের সমালোচনা করেছেন। একই সঙ্গে লিঙ্গভিত্তিক মজুরির ব্যবধান, অসম বোঝা এবং মহিলাদের ওপর শিশুর যত্ন এবং সন্তান লালন-পালনে পুরুষদের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার মতো বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলেছেন।
আয়াকা নাসুনো
এবারের কাওয়াসাকি সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে সর্বাধিক ভোট পেয়ে জয়ী হওয়া আরেক তরুণ জনপ্রতিনিধি আয়াকা নাসুনো। মাত্র ২৫ বছরে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শৈশবে নিপীড়নের শিকার নাসুনো স্থানীয় ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। তার নিজস্ব সম্প্রদায়ের লোকজনদের নিয়েই শুরু করেন এ কাজ।
তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমাকে বর্তমান নেতৃত্ব দিতে সহায়তা করছে। হতে পারে এজন্যই জনগণের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।’নির্বাচনের পর সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘একজন কাউন্সিলর হিসাবে আমার কর্মজীবনের শুরু করেছি। আমার শহরের জনগণের সুবিধার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’ সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
সুমি/হককথা