নিউইয়র্ক ০৮:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার জন্মদিনে শুভকামনা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০
  • / ৬২ বার পঠিত

ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম: প্রাণের ও শরীরের চাহিদা ক্ষুধা, ক্ষুধার চাহিদা খাদ্য। সেই খাদ্যের জোগানের একমাত্র মাধ্যম কৃষি। কৃষিকে কেন্দ্র করে বিশ্বের মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান, দারিদ্র্য ও পুষ্টিহীনতা দূর করে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর জন্ম নেয় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা এফএও।
লাতিন ভাষায় এর ¯েøাগান ‘ফিয়াত পানিস’ অর্থাৎ- ‘সবার জন্য রুটি’। বর্তমানে ১৯৭টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে পরিচালিত এফএওর মূল সদস্য সংগঠন হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মূলত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অর্থের বিনিময়েই এফএও পরিচালিত হয়।
এ বছরের বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় Grow, Nourish, Sustain Together; অর্থাৎ ‘বৃদ্ধি, পুষ্টি, টেকসই একসঙ্গে। আমাদের কার্যক্রম, আমাদের ভবিষ্যৎ’। এফএও’র জন্ম তারিখ ১৬ অক্টোবর দিনটিকে স্মরণে রাখতে প্রতি বছর বিশ্ব খাদ্য দিবসটি একটি নতুন থিমের সঙ্গে পালন করা হয়। সারা বিশ্বের ক্ষুধার সঙ্গে স্থূলতা এবং অপুষ্টিজনিত সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যেই এ দিনটি নতুন নতুন থিম নিয়ে প্রতি বছর পালন করা হয়। এফএও-এর ৭৫তম জন্মবার্ষিকীতে বিশ্ব খাদ্য দিবস সম্পূর্ণ অন্যরকম ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, কেননা এ বছর বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারীর কারণে খাদ্যের অপ্রতুলতা বা আবশ্যকতা ভিন্নভাবে উপলব্ধি হচ্ছে; যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে ও ক্ষুধায় ভুগছে, তাদের সবার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশ্বব্যাপী এফএও সচেতনতা ও কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
মূলত: আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গঠনের ধারণাটি প্রথম আসে আমেরিকান কৃষিবিদ ডেভিড লুবিনের মাথায়। ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর কানাডার কুইবেক শহরে ‘আন্তর্জাতিক কৃষি ইন্সটিটিউট’ গঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংগঠনের ইতি ঘটে। পরে এটি খাদ্য ও কৃষি সংস্থা নামে আত্মপ্রকাশ করে। গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের শেষ সময় থেকে এফএও জাতিসংঘের কাঠামোর মধ্যে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ১৯৭১ সালে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০তম সাধারণ সভায় হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. প্যাল রোমানি এফএও-এর জন্মদিনটি বিশ্বব্যাপী বিশেষভাবে উদযাপনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮১ সাল থেকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নিবৃত্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে এ দিনটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে। আর ১৯৮১ সালেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিটি দেশের সরকার ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করার সংগ্রামে জড়িত করার প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’ উদযাপন শুরু হয়।
বিশ্ব খাদ্য দিবসের মূল উদ্দেশ্য হল- ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দান করা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান, গ্রামীণ মানুষ, মূলত নারী ও কম উন্নত মানুষদের অবদানে উৎসাহ দান ও প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া।
সা¤প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বব্যাপী কৃষিক্ষেত্র দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। যদিও চাহিদার দিক বিবেচনা করলে বিশ্বের খাদ্য উৎপাদন যথেষ্ট, তবুও সার্বিক খাদ্য ব্যবস্থায় রয়ে গেছে অসমাঞ্জস্যতা।
খাদ্য ব্যবস্থার সমস্যাগুলোর মধ্যে আছে ক্ষুধা, অস্বাভাবিক স্থূলতা, পরিবেশগত অবক্ষয়, জৈবিক বৈচিত্র্য হ্রাস, খাদ্য ও বর্জ্যরে অব্যবস্থাপনা এবং খাদ্য শৃঙ্খল কর্মীদের সুরক্ষার অভাব ইত্যাদি। এসব সমস্যার সমাধানের পদক্ষেপের সঙ্গে কোভিডের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও প্রয়োগের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এফএও বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দুই ধরনের দেশেই আধুনিক ও উন্নত কৃষি, বনায়ন ও মৎস্য চাষে সহায়তার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। তাই বিভিন্ন দেশে কৃষি ও কৃষির সঙ্গে জড়িত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এ সংস্থাটি বিশ্বের বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মিলে নানা প্রকল্প হাতে নেয় এবং কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে, যেন সবার জন্য খাদ্যের নিশ্চয়তার সুযোগ তৈরি হয়।
সংস্থাটির নিরলস প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী যে সাফল্যগুলো অর্জিত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ৩০টিরও বেশি দেশের সাংবিধানিক কাঠামোতে জনগণের জন্য খাদ্যলাভের অধিকারকে প্রধান মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি ও নিশ্চিতকরণ, সবার জন্য নিরাপদ ও ভালো খাদ্য নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানদন্ড কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস তৈরি, অবৈধ মাছ ধরার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রণয়ন, গবাদিপশুর মারাত্মক ভাইরাল রোগ রেন্ডারপেস্ট নির্মূলকরণ, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা, খাদ্য ও কৃষিতে বিশ্বের বৃহত্তম এবং সর্বাধিক বিস্তৃত পরিসংখ্যানীয় ডাটাবেজ বজায় রাখা ইত্যাদি।
এছাড়া ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রণীত ‘সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ বাস্তবায়নে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ বাস্তবায়নে ফলপ্রসূ সহযোগিতা করে যাচ্ছে সংস্থাটি।
মহামারী করোনা মারাত্মক সংকট ডেকে এনেছে কৃষকের জীবনে। কঠিন এ সময়ের কারণে শহর ও গ্রামাঞ্চলে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য সুরক্ষা ব্যাহত হয়েছে। করোনাভাইরাস সংকটের কারণে লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারানোতে খাদ্য সমস্যাটি দ্বিগুণ কঠিন হয়ে উঠছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও। কিন্তু তীব্র সংকটময় এ পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে স¤প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এফএও বাংলাদেশ কার্যালয়। ‘র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি ইন দ্য কনটেক্স অব কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে চলতি অর্থবছরে চালের চাহিদা থাকবে প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টন এবং গমের চাহিদা থাকবে ৫৫ লাখ টন। সব মিলিয়ে দানাদার খাদ্যশস্যের চাহিদা থাকবে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টন।
এ চাহিদার বিপরীতে চলতি অর্থবছরে উৎপাদন দাঁড়াবে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টন। ফলে প্রায় ২৫ লাখ টন শস্য উদ্বৃত্ত থাকবে। বিগত ৪০ বছরে কৃষিক্ষেত্রে ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আবাদযোগ্য জমি হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ বাড়ার চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে। বাংলাদেশের এ অর্জন অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর জন্য রোল মডেল ও উদাহরণ।
‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বছরের প্রাক্কালে আরেকটি বিরাট গৌরব বাংলাদেশ লাভ করেছে এফএওর পক্ষ থেকে, তা হল ২০২২ সালে এফএওর ৩৬তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন আয়োজন করবে বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থাতে যোগদানের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এ সম্মান পেয়েছে। ঢাকায় ৩৬তম অধিবেশন এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্জন, সাফল্য, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ে মতবিনিময় ও পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।
বর্তমান বিশ্বের প্রতি ৯ জনে একজন অপুষ্টির শিকার। এ হিসাবে অপুষ্টির শিকার মোট মানুষের সংখ্যা ৭৯ কোটি ৫০ লাখ। এ জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশের বসবাস এশিয়া মহাদেশে। সারাবিশ্বে প্রাথমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করে এমন ৬ কোটি ৬০ লাখ শিশু পেটে ক্ষুধা নিয়ে স্কুলে যায়। আবার বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ লোকের কর্মসংস্থান আসে কৃষি থেকে।
কৃষিকাজে নারীর গুরুত্ব তুলে ধরে কৃষিতে নারীরা যদি পুরুষের সমানভাবে অংশ নেন, তাহলে বিশ্বে ক্ষুধার্ত লোকের সংখ্যা ১৫ কোটি পর্যন্ত কমতে পারে। করোনা মহামারীর প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা দূর করে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করে কৃষিতে টেকসই উন্নয়নের জন্য এফএওর সুপারিশক্রমে প্রণীত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার’ ৮টি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশ্বের সব দেশকে একে অপরকে সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে কাজ করে যেতে হবে।
তন্মধ্যে রয়েছে- সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু থেকে শুরু করে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা সবার ক্ষুধা দূর করা, অপুষ্টির শিকার ৫ বছরের কম বয়সী শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে, গর্ভবতী ও বুকের দুধ দানকারী নারী এবং বয়স্ক ব্যক্তিসহ সব মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ, কৃষি উৎপাদন ও কৃষকের আয় দ্বিগুণ করা, টেকসই কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
কৃষি উৎপাদনে পরিবেশের ভারসাম্য নিশ্চিত করে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিকূল আবহাওয়া, বন্যা, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে ফসল টিকে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো, কৃষিভিত্তিক গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করা, বিশ্ব কৃষিবাজারে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ ও কৃষিপণ্য আমদানি-রফতানিতে অহেতুক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা এবং বিশ্ব খাদ্যপণ্যের বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে বিশ্ব খাদ্য দিবস পালন যথার্থতা লাভ করবে।
চলমান প্রতিকূলতার মাঝেও স¤প্রতি ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার লড়াইয়ে ভূমিকা রাখায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিøউএফপি)। সংঘাত ও যুদ্ধকবলিত এলাকাগুলোতে ক্ষুধা নিরসনে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সংস্থাটিকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি’ জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তাসংক্রান্ত শাখা যা এমন সব মানুষকে সাহায্য করে, যারা নিজেদের ও পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার উৎপাদন কিংবা আহরণ করতে সক্ষম নয়। সুতরাং আশা করতে পারি, ডবিøউএফপির এ সফলতা এফএও’র জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে এবং লক্ষ্য পূরণের মাধ্যমে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে অর্জিত হবে চূড়ান্ত সফলতা।
(তথ্য দিয়ে সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহকারী প্রতিনিধি ড. নুর আহম্মেদ খন্দকারকে)
লেখক: অধ্যাপক, কৃষিব্যবসা ও বিপণন বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

e-mail: mjahangir.alam@bau.edu.bd

(দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার জন্মদিনে শুভকামনা

প্রকাশের সময় : ১০:৪৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০

ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম: প্রাণের ও শরীরের চাহিদা ক্ষুধা, ক্ষুধার চাহিদা খাদ্য। সেই খাদ্যের জোগানের একমাত্র মাধ্যম কৃষি। কৃষিকে কেন্দ্র করে বিশ্বের মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান, দারিদ্র্য ও পুষ্টিহীনতা দূর করে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর জন্ম নেয় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা এফএও।
লাতিন ভাষায় এর ¯েøাগান ‘ফিয়াত পানিস’ অর্থাৎ- ‘সবার জন্য রুটি’। বর্তমানে ১৯৭টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে পরিচালিত এফএওর মূল সদস্য সংগঠন হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। মূলত সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অর্থের বিনিময়েই এফএও পরিচালিত হয়।
এ বছরের বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় Grow, Nourish, Sustain Together; অর্থাৎ ‘বৃদ্ধি, পুষ্টি, টেকসই একসঙ্গে। আমাদের কার্যক্রম, আমাদের ভবিষ্যৎ’। এফএও’র জন্ম তারিখ ১৬ অক্টোবর দিনটিকে স্মরণে রাখতে প্রতি বছর বিশ্ব খাদ্য দিবসটি একটি নতুন থিমের সঙ্গে পালন করা হয়। সারা বিশ্বের ক্ষুধার সঙ্গে স্থূলতা এবং অপুষ্টিজনিত সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যেই এ দিনটি নতুন নতুন থিম নিয়ে প্রতি বছর পালন করা হয়। এফএও-এর ৭৫তম জন্মবার্ষিকীতে বিশ্ব খাদ্য দিবস সম্পূর্ণ অন্যরকম ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, কেননা এ বছর বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারীর কারণে খাদ্যের অপ্রতুলতা বা আবশ্যকতা ভিন্নভাবে উপলব্ধি হচ্ছে; যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে আছে ও ক্ষুধায় ভুগছে, তাদের সবার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশ্বব্যাপী এফএও সচেতনতা ও কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
মূলত: আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গঠনের ধারণাটি প্রথম আসে আমেরিকান কৃষিবিদ ডেভিড লুবিনের মাথায়। ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর কানাডার কুইবেক শহরে ‘আন্তর্জাতিক কৃষি ইন্সটিটিউট’ গঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংগঠনের ইতি ঘটে। পরে এটি খাদ্য ও কৃষি সংস্থা নামে আত্মপ্রকাশ করে। গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের শেষ সময় থেকে এফএও জাতিসংঘের কাঠামোর মধ্যে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ১৯৭১ সালে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০তম সাধারণ সভায় হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. প্যাল রোমানি এফএও-এর জন্মদিনটি বিশ্বব্যাপী বিশেষভাবে উদযাপনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮১ সাল থেকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নিবৃত্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে এ দিনটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে। আর ১৯৮১ সালেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিটি দেশের সরকার ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করার সংগ্রামে জড়িত করার প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’ উদযাপন শুরু হয়।
বিশ্ব খাদ্য দিবসের মূল উদ্দেশ্য হল- ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দান করা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান, গ্রামীণ মানুষ, মূলত নারী ও কম উন্নত মানুষদের অবদানে উৎসাহ দান ও প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেয়া।
সা¤প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বব্যাপী কৃষিক্ষেত্র দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। যদিও চাহিদার দিক বিবেচনা করলে বিশ্বের খাদ্য উৎপাদন যথেষ্ট, তবুও সার্বিক খাদ্য ব্যবস্থায় রয়ে গেছে অসমাঞ্জস্যতা।
খাদ্য ব্যবস্থার সমস্যাগুলোর মধ্যে আছে ক্ষুধা, অস্বাভাবিক স্থূলতা, পরিবেশগত অবক্ষয়, জৈবিক বৈচিত্র্য হ্রাস, খাদ্য ও বর্জ্যরে অব্যবস্থাপনা এবং খাদ্য শৃঙ্খল কর্মীদের সুরক্ষার অভাব ইত্যাদি। এসব সমস্যার সমাধানের পদক্ষেপের সঙ্গে কোভিডের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও প্রয়োগের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এফএও বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দুই ধরনের দেশেই আধুনিক ও উন্নত কৃষি, বনায়ন ও মৎস্য চাষে সহায়তার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। তাই বিভিন্ন দেশে কৃষি ও কৃষির সঙ্গে জড়িত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এ সংস্থাটি বিশ্বের বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মিলে নানা প্রকল্প হাতে নেয় এবং কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে, যেন সবার জন্য খাদ্যের নিশ্চয়তার সুযোগ তৈরি হয়।
সংস্থাটির নিরলস প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী যে সাফল্যগুলো অর্জিত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ৩০টিরও বেশি দেশের সাংবিধানিক কাঠামোতে জনগণের জন্য খাদ্যলাভের অধিকারকে প্রধান মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি ও নিশ্চিতকরণ, সবার জন্য নিরাপদ ও ভালো খাদ্য নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানদন্ড কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস তৈরি, অবৈধ মাছ ধরার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রণয়ন, গবাদিপশুর মারাত্মক ভাইরাল রোগ রেন্ডারপেস্ট নির্মূলকরণ, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা, খাদ্য ও কৃষিতে বিশ্বের বৃহত্তম এবং সর্বাধিক বিস্তৃত পরিসংখ্যানীয় ডাটাবেজ বজায় রাখা ইত্যাদি।
এছাড়া ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রণীত ‘সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ বাস্তবায়নে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ বাস্তবায়নে ফলপ্রসূ সহযোগিতা করে যাচ্ছে সংস্থাটি।
মহামারী করোনা মারাত্মক সংকট ডেকে এনেছে কৃষকের জীবনে। কঠিন এ সময়ের কারণে শহর ও গ্রামাঞ্চলে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য সুরক্ষা ব্যাহত হয়েছে। করোনাভাইরাস সংকটের কারণে লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারানোতে খাদ্য সমস্যাটি দ্বিগুণ কঠিন হয়ে উঠছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও। কিন্তু তীব্র সংকটময় এ পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে স¤প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এফএও বাংলাদেশ কার্যালয়। ‘র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি ইন দ্য কনটেক্স অব কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে চলতি অর্থবছরে চালের চাহিদা থাকবে প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ টন এবং গমের চাহিদা থাকবে ৫৫ লাখ টন। সব মিলিয়ে দানাদার খাদ্যশস্যের চাহিদা থাকবে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টন।
এ চাহিদার বিপরীতে চলতি অর্থবছরে উৎপাদন দাঁড়াবে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টন। ফলে প্রায় ২৫ লাখ টন শস্য উদ্বৃত্ত থাকবে। বিগত ৪০ বছরে কৃষিক্ষেত্রে ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আবাদযোগ্য জমি হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ বাড়ার চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে। বাংলাদেশের এ অর্জন অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর জন্য রোল মডেল ও উদাহরণ।
‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বছরের প্রাক্কালে আরেকটি বিরাট গৌরব বাংলাদেশ লাভ করেছে এফএওর পক্ষ থেকে, তা হল ২০২২ সালে এফএওর ৩৬তম এশিয়া-প্যাসিফিক আঞ্চলিক সম্মেলন আয়োজন করবে বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থাতে যোগদানের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এ সম্মান পেয়েছে। ঢাকায় ৩৬তম অধিবেশন এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্জন, সাফল্য, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ে মতবিনিময় ও পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।
বর্তমান বিশ্বের প্রতি ৯ জনে একজন অপুষ্টির শিকার। এ হিসাবে অপুষ্টির শিকার মোট মানুষের সংখ্যা ৭৯ কোটি ৫০ লাখ। এ জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশের বসবাস এশিয়া মহাদেশে। সারাবিশ্বে প্রাথমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করে এমন ৬ কোটি ৬০ লাখ শিশু পেটে ক্ষুধা নিয়ে স্কুলে যায়। আবার বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ লোকের কর্মসংস্থান আসে কৃষি থেকে।
কৃষিকাজে নারীর গুরুত্ব তুলে ধরে কৃষিতে নারীরা যদি পুরুষের সমানভাবে অংশ নেন, তাহলে বিশ্বে ক্ষুধার্ত লোকের সংখ্যা ১৫ কোটি পর্যন্ত কমতে পারে। করোনা মহামারীর প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা দূর করে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করে কৃষিতে টেকসই উন্নয়নের জন্য এফএওর সুপারিশক্রমে প্রণীত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার’ ৮টি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিশ্বের সব দেশকে একে অপরকে সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে কাজ করে যেতে হবে।
তন্মধ্যে রয়েছে- সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু থেকে শুরু করে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা সবার ক্ষুধা দূর করা, অপুষ্টির শিকার ৫ বছরের কম বয়সী শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে, গর্ভবতী ও বুকের দুধ দানকারী নারী এবং বয়স্ক ব্যক্তিসহ সব মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ, কৃষি উৎপাদন ও কৃষকের আয় দ্বিগুণ করা, টেকসই কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
কৃষি উৎপাদনে পরিবেশের ভারসাম্য নিশ্চিত করে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিকূল আবহাওয়া, বন্যা, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে ফসল টিকে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো, কৃষিভিত্তিক গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করা, বিশ্ব কৃষিবাজারে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ ও কৃষিপণ্য আমদানি-রফতানিতে অহেতুক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা এবং বিশ্ব খাদ্যপণ্যের বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে বিশ্ব খাদ্য দিবস পালন যথার্থতা লাভ করবে।
চলমান প্রতিকূলতার মাঝেও স¤প্রতি ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার লড়াইয়ে ভূমিকা রাখায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিøউএফপি)। সংঘাত ও যুদ্ধকবলিত এলাকাগুলোতে ক্ষুধা নিরসনে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সংস্থাটিকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি’ জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তাসংক্রান্ত শাখা যা এমন সব মানুষকে সাহায্য করে, যারা নিজেদের ও পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার উৎপাদন কিংবা আহরণ করতে সক্ষম নয়। সুতরাং আশা করতে পারি, ডবিøউএফপির এ সফলতা এফএও’র জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে এবং লক্ষ্য পূরণের মাধ্যমে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে অর্জিত হবে চূড়ান্ত সফলতা।
(তথ্য দিয়ে সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহকারী প্রতিনিধি ড. নুর আহম্মেদ খন্দকারকে)
লেখক: অধ্যাপক, কৃষিব্যবসা ও বিপণন বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

e-mail: mjahangir.alam@bau.edu.bd

(দৈনিক যুগান্তর)