চীন-ভারত সম্পর্কের অবনতির সময়ে জি২০ সম্মেলনে আসছেন না শি জিনপিং

- প্রকাশের সময় : ০৩:০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ১২৩ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নয়া দিল্লিতে বসতে যাচ্ছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। কিন্তু তাতে থাকছেন না চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এ জন্য হতাশা ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শি জিনপিংয়ের পরিবর্তে সম্মেলনে বেইজিংয়ের প্রতিনিধিত্ব করবেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। এমন খবরও দিয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। এর জবাবে রোববার জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি হতাশ। তবে আমি তার (শি জিনপিং) সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই। সেই মিটিং কবে হবে তা তিনি বলেননি। এর আগে বিশ্বের দুই পরাশক্তির এই দুই প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ সাক্ষাৎ হয়েছে গত বছর ইন্দোনেশিয়ায়র সম্মেলনে। প্রথমদিকে শি জিনপিং বলেছিলেন, তিনি ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। কিন্তু তার উপস্থিতির বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেনি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওদিকে পূর্ণ গতিতে সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।
তাদেরই সূত্রগুলো বলেছে, এ বছর সামিটে যোগ দেয়ার পরিকল্পনা নেই শি জিনপিংয়ের। এ খবর এলো এমন এক সময়ে যখন চীন এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্কের গুরুতর অবনতি হয়েছে। শুধু তা-ই নয়। এই দুই দেশ হিমালয় অঞ্চলে তাদের বিরোধপূর্ণ সীমান্ত নিয়ে একে অন্যের মুখোমুখি অবস্থানে আছে। ঘটনা এখানেও থেমে থাকেনি। গত সপ্তাহে বেইজিং একটি মানচিত্র প্রকাশ করে। তাতে অরুণাচল প্রদেশ এবং আকসাই চীন মালভূমিকে চীনের ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত।
আরোও পড়ুন । ফ্রান্সে স্কুলে নিষিদ্ধ হচ্ছে আবায়া
জি২০’তে বাইডেন ও শি জিনপিংয়ের সাক্ষাৎ না হলেও নভেম্বরে তাদের সাক্ষাতের সুযোগ আছে। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের মিটিং আছে। সেখানে যোগ দিতে পারেন এই দুই নেতা। এমনিতেই গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সম্পর্কের অব্যাহত অবনতি হতে থাকে। তারপরই জি২০’তে শি জিনপিংয়ের যোগ না দেয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে সাক্ষাৎ হয় বাইডেন-জিনপিংয়ের মধ্যে।
এর প্রায় দুই মাস পরে চীনের একটি গোয়েন্দা বেলুন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র তাকে গুলি করে ভূপাতিত করে। এতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দুটি দেশ বিভিন্ন ইস্যুতে ভিন্নমত পোষণ করে। এর মধ্যে আছে শিনজিয়াং ও হংকংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরের ভূখন্ড নিজেদের বলে দাবি করা এবং বেইজিংয়ের আধিপত্য বিস্তার।
সম্পর্কের এই বরফ গলানোর উদ্দেশে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা চীন সফর করেছেন। এর মধ্যে আছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন, জলবায়ু বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কেরি। ওদিকে বেইজিংকে বিশ্বের উন্নয়নের একজন নেতা হিসেবে জাহির করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বেইজিং। পাশাপাশি তারা ওয়াশিংটনের নেতৃত্ব দেয়া বিশ্ব ব্যবস্থার একটি বিকল্প বের করার চেষ্টা করছে।
গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে মিলিত হন ব্রিকস নেতারা। সেখানে পশ্চিমা আধিপত্যের সমালোচনা করেন শি জিনপিং। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঔপনিবেশিকতা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান। ব্রিকস হলো ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চায়না ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উন্নত ৫টি দেশের সংগঠন জোহানেসবার্গ সম্মেলনে এতে যুক্ত হয়েছে আরও ৬টি দেশ। তারা হলো আর্জেন্টিনা, মিশর, ইরান, ইথিওপিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। আগামী ১লা জানুয়ারি থেকে তাদের সংযুক্তি কার্যকর হবে। একে দেখা হচ্ছে বেইজিংয়ের বড় রকম কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে।
বেলী/হককথা