চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক চালুর ঘোষণা হন্ডুরাসের
- প্রকাশের সময় : ০১:২৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩
- / ৪৪ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক চালুর ঘোষণা দিয়েছেন হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট জিওমারা ক্যাস্ত্রো। এর ফলে তাইওয়ানের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক ছিন্ন হতে চলেছে। ২০২১ সালে তার নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই বিষয়টির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ক্যাস্ত্রো। তিনি বলেন, হন্ডুরাসের উচিৎ বেইজিং-এর সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপ হওয়ার আগেই পুনরুদ্ধার করা। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
খবরে জানানো হয়, এবার সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টি ঘোষণা করলেন জিওমারা ক্যাস্ত্রো। মঙ্গলবার টুইটারে তিনি এক বার্তায় বিষয়টি জানিয়েছেন। এতে তিনি বলেন, এরইমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন গণচীনকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। আমাদের সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং সীমান্ত উন্মুক্ত করার অংশ হিসেবে চীনের বিষয়ে এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। হন্ডুরাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এডুয়ার্ডো রেইনা পরে স্থানীয় টেলিভিশনকে বলেন, আমাদের জিনিসগুলিকে খুব বাস্তবসম্মতভাবে দেখতে হবে এবং হন্ডুরাসের জনগণের জন্য সর্বোত্তম সুবিধা খুঁজতে হবে। তবে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা হন্ডুরাসকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে এবং চীনের ফাঁদে পড়া থেকে সাবধান থাকতে বলেছে। প্রেসিডেন্ট জিওমারা ক্যাস্ত্রো যদিও তার টুইটে তাইওয়ানের কথা উল্লেখ করেননি। কিন্তু চীনকে স্বীকৃতি দেয়ার অর্থই হচ্ছে তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রাখার আর কোনো সুযোগ নেই।
আরোও পড়ুন । ৯ বছর ধরে গর্ভে ভ্রূণ
বিশ্লেষকরা বলেছেন যে, হন্ডুরাসের এমন পদক্ষেপ অপ্রত্যাশিত ছিল না। আগেই প্রেসিডেন্ট জিওমারা ক্যাস্ত্রো তার প্রচারাভিযানে এ বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য চীন থেকে অর্থনৈতিক সহায়তার বিষয়েও আলোচনা করেছেন। টেক্সাসের সেন্ট থমাস বিশ্ববিদ্যালয়ের তাইওয়ান এবং পূর্ব এশিয়া স্টাডিজ প্রোগ্রামের পরিচালক ইয়াও-ইয়ুয়ান ইয়েহ আল জাজিরাকে বলেছেন, আমি মনে করি তাইওয়ান আগে থেকেই কিছুটা প্রস্তুত। তাই আমি মনে করি না এটি একটি বড় সমস্যা হতে চলেছে। তবে তাইওয়ানের জনসাধারণ কিছুটা আতঙ্কিত হতে পারে। কারণ তারা দেখবেন যে নতুন নতুন দেশ তাদেরকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেছে।
আরোও পড়ুন । ছয় মাস লুকিয়ে থাকা রাশিয়ান সৈন্যকে আটক করল ইউক্রেন
২০১৬ সালে তাইওয়ানের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হন সাই ইং-ওয়েন। এরপর থেকেই চীন তাইওয়ানের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার চেষ্টা জোরদার করেছে। এই চেষ্টার ফলে একাধিক দেশ তাইওয়ানের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সলোমন দ্বীপপুঞ্জ সবার আগে তাইওয়ানের স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে। ২০২১ সালে নিকারাগুয়া তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। সাই ইং-ওয়েন ২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার সময় ২২ দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল তাইওয়ানের। এখন তা কমে ১৩তে দাঁড়িয়েছে। বেলিজ ও গুয়াতেমালা ছাড়া আর কোনো দেশ তাইওয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় না এখন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দুই দশকে চীনের বিস্ময়কর উন্নতি সব হিসেব বদলে দিয়েছে। একসময় তাইওয়ানকে চীনের থেকেও বেশি সম্ভাবনাময় দেশ মনে হতো। ফলে অনেক দেশই তখন তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী হয়েছিল। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। তাইওয়ানের পক্ষে চীনের বিশাল অর্থনীতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা সম্ভব নয়।
সাথী / হককথা