নিউইয়র্ক ০৯:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

গুজরাট হাইকোর্টে ছাড় পেলেন না রাহুল গান্ধী, জুনে চূড়ান্ত রায়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৫১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
  • / ১৪ বার পঠিত

ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ফাইল ছবি : পিটিআই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের গুজরাট হাইকোর্টের রায়ে লোকসভার সংসদ সদস্য পদ ফিরে পাওয়ার আশা আপাতত ইতি হলো কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর। সেই সঙ্গে রয়ে গেল জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও। গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং সুরাট দায়রা আদালত রাহুলকে ‘অপরাধমূলক মানহানি’র মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের জেলের যে রায় দিয়েছিলেন, তার ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের আরজি মঙ্গলবার খারিজ করেছেন গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছক। বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী গরমের ছুটি শেষ হলে এই মামলার চূড়ান্ত রায় প্রদান করবেন তিনি। ৮ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত চলবে এই ছুটি। গুজরাটে হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে আপাতত কেরালার ওয়েনাড়ের সংসদ সদস্য পদ ফিরে পাচ্ছেন না রাহুল। সংশয় তৈরি হয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েও। তবে চূড়ান্ত রায় দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রইল সাবেক কংগ্রেস সভাপতির জেলযাত্রার সম্ভাবনা।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় কর্ণাটকের কোলারে ‘মোদি’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচ এইচ বর্মা দুই বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদির দায়ের করা মামলার ভিত্তিতেই ছিল ওই রায়। ওই রায়ের পরই ২৪ মার্চ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সংসদ সদস্য পদ খারিজ করেছিলেন।

রাহুল তকে দোষী ঘোষণা এবং সাজার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে গত ৩ এপ্রিল সুরাটেরই দায়রা আদালতে (সেশনস কোর্ট) আবেদন করেছিলেন। কিন্তু গত ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা খারিজ করেন সাবেক কংগ্রেস সভাপতির সেই আবেদন। এরপর পদবি মন্তব্যে দোষী ঘোষণা এবং সাজা কার্যকরের জন্য সুরাট দায়রা আদালতের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে মঙ্গলবার গুজরাট হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন রাহুল। আবেদনটি শুনানির জন্য বিচারপতি গীতা গোপীর এজলাসে নথিভুক্ত হয়েছিল।

কিন্তু বুধবার রাহুলের আইনজীবী পি এস চম্পানেরী সুরাট দায়রা আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাহুলের দায়ের করা আবেদনের দ্রুত শুনানির আরজি জানাতেই বিচারপতি গোপী আবেদনের শুনানি করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে নয়।’ মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে ফেরত পাঠানোর জন্য হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন তিনি। এরপর মামলাটি গেছে বিচারপতি প্রচ্ছকের বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি প্রচ্ছকের এজলাসে শুনানির জন্য রাহুলের আবেদন নথিভুক্ত হয়। শনিবার শুনানির পর বিচারপতি আবার মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। রাহুলের সেই আরজি খারিজ করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং দায়রা আদালতের রায় আপাতত বহাল রাখলেন তিনি। চূড়ান্ত রায়েও তা বহাল থাকলে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ ছাড়া ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব হবে না।

পদ হারিয়েছেন আরো এক বিরোধী নেতা

এদিকে গ্যাংস্টার আইনে চার বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত উত্তর প্রদেশের বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সংসদ সদস্য আফজাল আনসারির পদ খারিজ হয়েছে। সোমবার লোকসভা সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে গাজীপুর থেকে নির্বাচিত আফজালকে বরখাস্ত করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা। ২০০৫ সালে গাজীপুরের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণানন্দ রাই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত একটি অপহরণের ষড়যন্ত্রের মামলায় দোষী সাব্যস্ত আফজালকে শনিবার চার বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের এমপি-এমএলএ আদালত। এই রায়ের ফলে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮(৩) নম্বর ধারা অনুযায়ী আফজালের সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়েছে। কারণ ৮(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি সাজা ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকার হারাবেন।

আফজালের পাশাপাশি তার ভাই, সাবেক বিধায়ক মুখতার আনসারিকে ওই অপহরণ ও খুনের মামলায় ১০ বছরের জেলের সাজা দিয়েছেন গাজীপুরের আদালত। ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর মোহাম্মদাবাদের কোতোয়ালি থানায় আনসারি ভাইদের বিরুদ্ধে ‘গ্যাংস্টার আইনে’ ওই মামলা রুজু করা হয়েছিল। একাধিক অপরাধমূলক মামলায় অভিযুক্ত মুখতারের পাঁচ লাখ এবং আফজালের এক লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে। ২০০৭ সালের ‘গ্যাংস্টার আইন’ অনুযায়ী তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন গাজীপুরের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক দুর্গেশ। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

বেলী / হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

গুজরাট হাইকোর্টে ছাড় পেলেন না রাহুল গান্ধী, জুনে চূড়ান্ত রায়

প্রকাশের সময় : ০১:৫১:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের গুজরাট হাইকোর্টের রায়ে লোকসভার সংসদ সদস্য পদ ফিরে পাওয়ার আশা আপাতত ইতি হলো কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর। সেই সঙ্গে রয়ে গেল জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও। গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং সুরাট দায়রা আদালত রাহুলকে ‘অপরাধমূলক মানহানি’র মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের জেলের যে রায় দিয়েছিলেন, তার ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের আরজি মঙ্গলবার খারিজ করেছেন গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছক। বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী গরমের ছুটি শেষ হলে এই মামলার চূড়ান্ত রায় প্রদান করবেন তিনি। ৮ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত চলবে এই ছুটি। গুজরাটে হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে আপাতত কেরালার ওয়েনাড়ের সংসদ সদস্য পদ ফিরে পাচ্ছেন না রাহুল। সংশয় তৈরি হয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েও। তবে চূড়ান্ত রায় দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রইল সাবেক কংগ্রেস সভাপতির জেলযাত্রার সম্ভাবনা।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় কর্ণাটকের কোলারে ‘মোদি’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাটের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচ এইচ বর্মা দুই বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদির দায়ের করা মামলার ভিত্তিতেই ছিল ওই রায়। ওই রায়ের পরই ২৪ মার্চ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সংসদ সদস্য পদ খারিজ করেছিলেন।

রাহুল তকে দোষী ঘোষণা এবং সাজার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে গত ৩ এপ্রিল সুরাটেরই দায়রা আদালতে (সেশনস কোর্ট) আবেদন করেছিলেন। কিন্তু গত ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা খারিজ করেন সাবেক কংগ্রেস সভাপতির সেই আবেদন। এরপর পদবি মন্তব্যে দোষী ঘোষণা এবং সাজা কার্যকরের জন্য সুরাট দায়রা আদালতের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে মঙ্গলবার গুজরাট হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন রাহুল। আবেদনটি শুনানির জন্য বিচারপতি গীতা গোপীর এজলাসে নথিভুক্ত হয়েছিল।

কিন্তু বুধবার রাহুলের আইনজীবী পি এস চম্পানেরী সুরাট দায়রা আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাহুলের দায়ের করা আবেদনের দ্রুত শুনানির আরজি জানাতেই বিচারপতি গোপী আবেদনের শুনানি করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে নয়।’ মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে ফেরত পাঠানোর জন্য হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন তিনি। এরপর মামলাটি গেছে বিচারপতি প্রচ্ছকের বেঞ্চে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি প্রচ্ছকের এজলাসে শুনানির জন্য রাহুলের আবেদন নথিভুক্ত হয়। শনিবার শুনানির পর বিচারপতি আবার মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। রাহুলের সেই আরজি খারিজ করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং দায়রা আদালতের রায় আপাতত বহাল রাখলেন তিনি। চূড়ান্ত রায়েও তা বহাল থাকলে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ ছাড়া ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব হবে না।

পদ হারিয়েছেন আরো এক বিরোধী নেতা

এদিকে গ্যাংস্টার আইনে চার বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত উত্তর প্রদেশের বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সংসদ সদস্য আফজাল আনসারির পদ খারিজ হয়েছে। সোমবার লোকসভা সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালে গাজীপুর থেকে নির্বাচিত আফজালকে বরখাস্ত করেছেন স্পিকার ওম বিড়লা। ২০০৫ সালে গাজীপুরের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণানন্দ রাই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত একটি অপহরণের ষড়যন্ত্রের মামলায় দোষী সাব্যস্ত আফজালকে শনিবার চার বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের এমপি-এমএলএ আদালত। এই রায়ের ফলে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮(৩) নম্বর ধারা অনুযায়ী আফজালের সংসদ সদস্য পদ খারিজ হয়েছে। কারণ ৮(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি সাজা ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকার হারাবেন।

আফজালের পাশাপাশি তার ভাই, সাবেক বিধায়ক মুখতার আনসারিকে ওই অপহরণ ও খুনের মামলায় ১০ বছরের জেলের সাজা দিয়েছেন গাজীপুরের আদালত। ২০০৭ সালের ২২ নভেম্বর মোহাম্মদাবাদের কোতোয়ালি থানায় আনসারি ভাইদের বিরুদ্ধে ‘গ্যাংস্টার আইনে’ ওই মামলা রুজু করা হয়েছিল। একাধিক অপরাধমূলক মামলায় অভিযুক্ত মুখতারের পাঁচ লাখ এবং আফজালের এক লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে। ২০০৭ সালের ‘গ্যাংস্টার আইন’ অনুযায়ী তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন গাজীপুরের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক দুর্গেশ। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

বেলী / হককথা