নিউইয়র্ক ০৭:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘গাজার গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ জড়িত’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৫৯ বার পঠিত

ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। ছবি: সংগৃহীত

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর)  যুক্তরাষ্ট্র কার্যালয়ের পরিচালক ক্রেইগ মোখিবার। ক্রেইগ মোখিবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের বেশিরভাগ অংশকে ‘ভয়াবহ হামলার সাথে পুরোপুরি জড়িত’ বলে অভিযোগ করেছেন।

গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।


এক বিবৃতিতে ক্রেইগ বলেন, চোখের সামনে গণহত্যা হতে দেখলেও তা থামাতে পারেনি জাতিসংঘ। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য মানবাধিকারভিত্তিক একক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।

পদত্যাগপত্রে মোখিবার লিখেছেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এখন যা চলছে তা পরিষ্কারভাবে গণহত্যা, যাকে আমরা বলতে পারি ‘টেক্সটবুক কেস অব জেনোসাইড’। এ ব্যাপারে সংশয়ে ভোগার কোনো কারণ বা সুযোগ আর কারও নেই। আমাদের চোখের সামনে প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র তার অপ্রতিরোধ্য শক্তি দিয়ে জাতিসংঘকে ঘিরে ধরেছে এবং তার প্রভাবে ইসরায়েলি লবি ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহতদের প্রায় অর্ধেকই শিশু। ছবি: সংগৃহীত

পদত্যাগপত্রে মোখিবার আরও লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের অধিকাংশ দেশ এই ভয়ঙ্কর গণহত্যাকে অকুণ্ঠভাবে সমর্থন করছে। তারা ইসরায়েলকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক, কূটনৈতিক, গোয়েন্দা তথ্য এক কথায় সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। পশ্চিমা কর্পোরেট সংবাদমাধ্যমগুলো এমনভাবে সংবাদ প্রকাশ করছে, যাতে এ পুরো প্রক্রিয়া কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়।

তিনি আরও লেখেন, এই গণহত্যার পর কী হবে, তা আমরা অনুমান করতে পারছি। সেখানে জাতিগত ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে উগ্র জাতীয়তাবাদী বসতি স্থাপনকারীরা পুনর্বাসন করার যে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসরায়েল, তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে।

এর আগে সোমবার এক্স-এ করা পোস্টে তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা সরকার যেভাবে ইসরায়েলকে ছাড় দিয়ে যাচ্ছে, তারই ফলাফল এই গণহত্যা।

ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির। প্রাণ গেছে বহু নিরীহ মানুষের। খান ইউনিস, জেনিন ক্যাম্প ও পশ্চিমতীরেও হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় আবারও বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ। অল্প সংখ্যক আহত ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসার জন্য মিশরে পাঠাতে প্রথমবারের মতো খোলা হয়েছে গাজার রাফাহ ক্রসিং।

গাজায় ৩ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। বিমান হামলার পাশাপাশি এখন চলছে স্থল অভিযান। এ সময়ে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর সারা বিশ্বে সংঘাতের কারণে যত শিশু নিহত হয়েছে, তার চেয়েও বেশি গাজায় নিহত শিশুর এই সংখ্যা।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘গাজার গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ জড়িত’

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর)  যুক্তরাষ্ট্র কার্যালয়ের পরিচালক ক্রেইগ মোখিবার। ক্রেইগ মোখিবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের বেশিরভাগ অংশকে ‘ভয়াবহ হামলার সাথে পুরোপুরি জড়িত’ বলে অভিযোগ করেছেন।

গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।


এক বিবৃতিতে ক্রেইগ বলেন, চোখের সামনে গণহত্যা হতে দেখলেও তা থামাতে পারেনি জাতিসংঘ। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য মানবাধিকারভিত্তিক একক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।

পদত্যাগপত্রে মোখিবার লিখেছেন, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় এখন যা চলছে তা পরিষ্কারভাবে গণহত্যা, যাকে আমরা বলতে পারি ‘টেক্সটবুক কেস অব জেনোসাইড’। এ ব্যাপারে সংশয়ে ভোগার কোনো কারণ বা সুযোগ আর কারও নেই। আমাদের চোখের সামনে প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র তার অপ্রতিরোধ্য শক্তি দিয়ে জাতিসংঘকে ঘিরে ধরেছে এবং তার প্রভাবে ইসরায়েলি লবি ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহতদের প্রায় অর্ধেকই শিশু। ছবি: সংগৃহীত

পদত্যাগপত্রে মোখিবার আরও লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের অধিকাংশ দেশ এই ভয়ঙ্কর গণহত্যাকে অকুণ্ঠভাবে সমর্থন করছে। তারা ইসরায়েলকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক, কূটনৈতিক, গোয়েন্দা তথ্য এক কথায় সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। পশ্চিমা কর্পোরেট সংবাদমাধ্যমগুলো এমনভাবে সংবাদ প্রকাশ করছে, যাতে এ পুরো প্রক্রিয়া কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়।

তিনি আরও লেখেন, এই গণহত্যার পর কী হবে, তা আমরা অনুমান করতে পারছি। সেখানে জাতিগত ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে উগ্র জাতীয়তাবাদী বসতি স্থাপনকারীরা পুনর্বাসন করার যে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসরায়েল, তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে।

এর আগে সোমবার এক্স-এ করা পোস্টে তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা সরকার যেভাবে ইসরায়েলকে ছাড় দিয়ে যাচ্ছে, তারই ফলাফল এই গণহত্যা।

ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির। প্রাণ গেছে বহু নিরীহ মানুষের। খান ইউনিস, জেনিন ক্যাম্প ও পশ্চিমতীরেও হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় আবারও বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ। অল্প সংখ্যক আহত ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসার জন্য মিশরে পাঠাতে প্রথমবারের মতো খোলা হয়েছে গাজার রাফাহ ক্রসিং।

গাজায় ৩ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। বিমান হামলার পাশাপাশি এখন চলছে স্থল অভিযান। এ সময়ে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর সারা বিশ্বে সংঘাতের কারণে যত শিশু নিহত হয়েছে, তার চেয়েও বেশি গাজায় নিহত শিশুর এই সংখ্যা।

হককথা/নাছরিন