নিউইয়র্ক ০২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪১ বার পঠিত

গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার বিকল্প চিন্তা ইসরায়েলের রয়েছে বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহুর সরকারের হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহু

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল পারমাণবিক বোমা ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইসরায়েলি এক মন্ত্রী। এই মন্তব্যের পর ইসরায়েলের চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ওৎজমা ইহুদি পার্টির ওই মন্ত্রীকে শনিবার মন্ত্রিসভার সব বৈঠক থেকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

স্থানীয় বেতারমাধ্যম রেডিও কোল বারামাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার বিকল্প চিন্তা ইসরায়েলের রয়েছে বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহুর সরকারের হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহু। সাক্ষাৎকারে ইলিয়াহু বলেন, তিনি গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ‘আয়ারল্যান্ড বা মরুভূমিতে’ পাঠিয়ে দিয়ে সেখানে ইসরায়েলি বসতি ফিরিয়ে আনার পক্ষে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ তার এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমিচাই ইলিয়াহুর মন্তব্য বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। ইসরায়েল ও সামরিক বাহিনী আন্তর্জাতিক আইনের সর্বোচ্চ মান অনুযায়ী কাজ করছে, যাতে নিরীহ মানুষের ক্ষতি রোধ করা যায় এবং আমরা বিজয়ের জন্য এটি চালিয়ে যাব।’

রেডিও কোল বারামাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গাজা উপত্যকায় পারমাণবিক বোমা ফেলা উচিত কি না জানতে চাইলে ইসরায়েলের হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহু বলেন, ‘‘এটির সম্ভাবনা রয়েছে।’’

ইসরায়েলের রাজনীতিক বেন গভিরের চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ওৎজমা ইহুদি পার্টির সদস্য আমিচাই ইলিয়াহু। মন্ত্রিসভার সদস্য হলেও যুদ্ধকালীন সিদ্ধান্তগ্রহণের জন্য গঠিত ইসরায়েলের জরুরি মন্ত্রিসভায় কিংবা হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় মন্ত্রিসভার নির্দেশ প্রদানের ক্ষেত্রে তার প্রত্যক্ষ কোনও ক্ষমতা নেই।

সাক্ষাৎকারে গাজায় মানবিক সাহায্যের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে নিজের আপত্তির কথা তুলে ধরেন ইলিয়াহু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নাৎসিদের মানবিক সাহায্য হস্তান্তর করব না।’’ গাজায় কোনও বেসামরিক নাগরিক নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ পুনরায় গ্রহণ এবং সেখানে ইসরায়েলি বসতি গড়ে তোলার পক্ষে তিনি বলে জানান ইলিয়াহু। তাহলে ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যে কী ঘটবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসরায়েলি এই মন্ত্রী বলেন, ‘‘তারা আয়ারল্যান্ড অথবা মরুভূমিতে যেতে পারে। গাজার দানবদের নিজের সমাধান খুঁজে বের করা উচিত।’’

তিনি বলেন, আলাদা করে উত্তর উপত্যকার অস্তিত্বের কোনও অধিকার নেই। ফিলিস্তিনি বা হামাসের পতাকা যারা উড়ায়, পৃথিবীতে তাদের বেঁচে থাকারও অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আমিচাই ইলিয়াহুর বিতর্কিত এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদসহ অন্যান্য রাজনীতিকরা। ইয়ার লাপিদ বলেছেন, সরকারে চরমপন্থীদের উপস্থিতি আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য— হামাসকে পরাজিত করা এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার সাফল্যকে বিপদাপন্ন করে তুলছে। নেতানিয়াহুকে আজ সকালেই এই মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হবে।

যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহুকে তার বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে মন্ত্রিসভার আগামীতে অনুষ্ঠেয় সব বৈঠক থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে’

প্রকাশের সময় : ০৮:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ নভেম্বর ২০২৩

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল পারমাণবিক বোমা ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইসরায়েলি এক মন্ত্রী। এই মন্তব্যের পর ইসরায়েলের চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ওৎজমা ইহুদি পার্টির ওই মন্ত্রীকে শনিবার মন্ত্রিসভার সব বৈঠক থেকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

স্থানীয় বেতারমাধ্যম রেডিও কোল বারামাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার বিকল্প চিন্তা ইসরায়েলের রয়েছে বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহুর সরকারের হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহু। সাক্ষাৎকারে ইলিয়াহু বলেন, তিনি গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ‘আয়ারল্যান্ড বা মরুভূমিতে’ পাঠিয়ে দিয়ে সেখানে ইসরায়েলি বসতি ফিরিয়ে আনার পক্ষে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ তার এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমিচাই ইলিয়াহুর মন্তব্য বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। ইসরায়েল ও সামরিক বাহিনী আন্তর্জাতিক আইনের সর্বোচ্চ মান অনুযায়ী কাজ করছে, যাতে নিরীহ মানুষের ক্ষতি রোধ করা যায় এবং আমরা বিজয়ের জন্য এটি চালিয়ে যাব।’

রেডিও কোল বারামাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গাজা উপত্যকায় পারমাণবিক বোমা ফেলা উচিত কি না জানতে চাইলে ইসরায়েলের হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহু বলেন, ‘‘এটির সম্ভাবনা রয়েছে।’’

ইসরায়েলের রাজনীতিক বেন গভিরের চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ওৎজমা ইহুদি পার্টির সদস্য আমিচাই ইলিয়াহু। মন্ত্রিসভার সদস্য হলেও যুদ্ধকালীন সিদ্ধান্তগ্রহণের জন্য গঠিত ইসরায়েলের জরুরি মন্ত্রিসভায় কিংবা হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় মন্ত্রিসভার নির্দেশ প্রদানের ক্ষেত্রে তার প্রত্যক্ষ কোনও ক্ষমতা নেই।

সাক্ষাৎকারে গাজায় মানবিক সাহায্যের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে নিজের আপত্তির কথা তুলে ধরেন ইলিয়াহু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নাৎসিদের মানবিক সাহায্য হস্তান্তর করব না।’’ গাজায় কোনও বেসামরিক নাগরিক নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ পুনরায় গ্রহণ এবং সেখানে ইসরায়েলি বসতি গড়ে তোলার পক্ষে তিনি বলে জানান ইলিয়াহু। তাহলে ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যে কী ঘটবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসরায়েলি এই মন্ত্রী বলেন, ‘‘তারা আয়ারল্যান্ড অথবা মরুভূমিতে যেতে পারে। গাজার দানবদের নিজের সমাধান খুঁজে বের করা উচিত।’’

তিনি বলেন, আলাদা করে উত্তর উপত্যকার অস্তিত্বের কোনও অধিকার নেই। ফিলিস্তিনি বা হামাসের পতাকা যারা উড়ায়, পৃথিবীতে তাদের বেঁচে থাকারও অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আমিচাই ইলিয়াহুর বিতর্কিত এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদসহ অন্যান্য রাজনীতিকরা। ইয়ার লাপিদ বলেছেন, সরকারে চরমপন্থীদের উপস্থিতি আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য— হামাসকে পরাজিত করা এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার সাফল্যকে বিপদাপন্ন করে তুলছে। নেতানিয়াহুকে আজ সকালেই এই মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে হবে।

যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহুকে তার বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে মন্ত্রিসভার আগামীতে অনুষ্ঠেয় সব বৈঠক থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আলজাজিরা।

হককথা/নাছরিন