ওবামার সফরের আগে মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ বাড়ছে জাপানে
- প্রকাশের সময় : ১১:০১:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০১৬
- / ৮৭৫ বার পঠিত
ঢাকা: জাপানের সরকার গভীর আগ্রহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার হিরোশিমা সফরের অপেক্ষায় থাকার মুখে ওকিনাওয়ায় সাবেক এক মার্কিন মেরিন সেনার হাতে জাপানি তরুণীর ধর্ষণ ও খুন হওয়ার ঘটনা ঐতিহাসিক এই সফরের গুরুত্বকে আংশিকভাবে হলেও হালকা করে দিচ্ছে। সাবেক সেই মার্কিন মেরিন সেনা ওকিনাওয়ার একটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে কর্মরত থাকায় ওকিনাওয়া জেলাজুড়ে এখন আবারও নতুন করে শুরু হয়েছে মার্কিন ঘাঁটিবিরোধী বিক্ষোভ।
আর এসব নিয়েই বিড়ম্বনায় পড়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। গণ-অসন্তোষ বৃদ্ধি পেতে থাকায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী এখন অবশ্য বলছেন, ওবামার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি তিনি তুলবেন। তবে আলোচনায় ওকিনাওয়া থেকে সামরিক ঘাঁটি আংশিকভাবে হলেও সরিয়ে নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে অবশ্য তিনি কিছুই বলেননি। ধারণা করা যায়, হত্যা ও ধর্ষণ প্রসঙ্গের উত্থাপন সেখানে হবে অনেকটাই আনুষ্ঠানিকতা, ওকিনাওয়ার গণ-অসন্তোষ প্রশমিত করাই হবে যার মূল উদ্দেশ্য।
অভিযোগ উঠেছে যে সেই মার্কিন মেরিন সেনা ২০ বছর বয়সী জাপানি তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন এবং তাঁর মৃতদেহ গাছপালায় ঘেরা জনবসতিহীন একটি জায়গায় মাটিচাপা দেন। ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা গত ২৮ এপ্রিল ঘটলেও গত বৃহস্পতিবার মৃতদেহটির সন্ধান পাওয়ার পরই কেবল পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন আলামতের সূত্র ধরে সাবেক সেই মেরিন সেনাকে গ্রেপ্তার করে। ধর্ষণ ও খুনের এই ঘটনা ইতিমধ্যে অবশ্য জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের পূর্বে আভাস দেওয়া কিছু পরিকল্পনায় রদবদল এনে দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে হিরোশিমায় নিয়ে যাওয়াকে নিজের উল্লেখযোগ্য একটি সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে আগাম নির্বাচন ঘোষণার যে ছক প্রধানমন্ত্রী আবে কষছিলেন, এখন বলা যায় তার অনেকটাই ভেস্তে গেছে। ওকিনাওয়ার ধর্ষণের ঘটনার পর নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের কোনো কথা এখন আর তিনি বলছেন না।
এদিকে জাপানের নাগরিক সম্প্রচার কেন্দ্র এনএইচকের কাছে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বারাক ওবামা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, হিরোশিমায় গিয়ে অতীতের জন্য তিনি ক্ষমা চাইবেন না। বরং ভবিষ্যতের পরমাণুমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য বলিষ্ঠ আহ্বান জানাবেন। অন্যদিকে হিরোশিমায় ওবামার সফরের ডামাডোলে বিশ্বের অগ্রসর সাতটি দেশের জোট জি-৭-এর শীর্ষ সম্মেলনের সংবাদও জাপানে এখন অনেকটা চাপা পড়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে সম্মেলনের সময় সংক্ষিপ্ত হয়ে আসায় আলোচনা কতটা বিস্তারিত ও ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিতে শুরু করেছে। ২৬ মে শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনে সাতটি দেশের নেতারা নিজেদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনায় মিলিত হবেন। দ্বিতীয় দিনের বিকেলে বারাক ওবামাকে সঙ্গে নিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের স্থান অবকাশকেন্দ্র থেকে হেলিকপ্টারে করে সরাসরি উড়ে যাবেন হিরোশিমা শহরে। এর আগে আমন্ত্রিত সাতটি উন্নয়নশীল দেশের নেতাদের সঙ্গে আউটরিচ সম্মেলনে মিলিত হবেন জি-৭ নেতারা এবং পরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বক্তব্য দেবেন।
বিশ্ব নেতাদের আগমন উপলক্ষে জাপানের রাজধানীসহ অন্যান্য এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সচরাচর দেখা না যাওয়া পুলিশ সদস্যরা এখন রাজধানীর প্রায় সর্বত্রই দৃশ্যমান। কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে শীর্ষ সম্মেলনের নির্ধারিত স্থান মধ্য জাপানের ইসে-শিমা অঞ্চলের আশপাশে।