নিউইয়র্ক ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

এরদোয়ানের ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই ইমামোগলু?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৫১ বার পঠিত

ইস্তাম্বুলের পুনর্নির্বাচিত মেয়র একরেম ইমামোগলু তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের শাসনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনিও তুর্কি প্রেসিডেন্টের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৯০ এর দশকে শহরটির মেয়র ছিলেন এরদোয়ানও।

দেশের বৃহত্তম শহরকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি দুই নেতার পরিবারের শেকড় রয়েছে কৃষ্ণ সাগরের পূর্বাঞ্চলে। দুজনের রাজনৈতিক জীবন তুরস্কের আদালত দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তরুণ বয়সে উভয়ে তুখোড় ফুটবলার ছিলেন। রবিবারের মেয়র নির্বাচনে জয় পেয়ে নিজের পদ ধরে রাখার পর অনেক বিশ্লেষকের কাছে ৫৩ বছর বয়সী ইমামোগলু তুরস্কের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট।

নির্বাচনের পর ইমামোগলু বলেছেন, ভোটাররা এরদোয়ানকে সরাসরি একটি বার্তা দিয়েছে। যারা দেশের বার্তা বুঝতে পারবেন না তারা শেষ পর্যন্ত হারবেন। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে দুজনের অসাধারণ সক্ষমতা থাকলেও রাজনীতির ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সাবেক ব্যবসায়ী ইমামোগলু নিজেই বলেছেন, আমাদের চিন্তাগুলো মোটামুটি বিপরীত।

একটি ইসলামিক দলের হয়ে রাজনীতিতে পদার্পণ করেছিলেন এরদোয়ান। ২০০২ সাল থেকে ক্ষমতায় থেকে তিনি সেক্যুলার রাষ্ট্রটিকে নতুন চরিত্র দিয়েছেন। আর ২০০৮ সালে সেক্যুলারপন্থি রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি (সিএইচপি) দিয়ে ইমামোগলুর রাজনীতি শুরু। দশ বছর আগে ইস্তাম্বুলের বেইলিকদুজু জেলার মেয়র হয়েছিলেন। ইমামোগলুর সাফল্যের পেছনে রয়েছে তুরস্কে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক সিএইচপির ২৫ শতাংশ সমর্থনের সীমা ভেঙে আরও রক্ষণশীল ভোটারদের সমর্থন পাওয়া।

২০১৯ সালে তিনি প্রমাণ করেছেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে দুই দশকের মধ্যে বৃহত্তম পরাজয় দেখেছে এরদোয়ানের একে পার্টি। শুধু একবার নয়, দুই বার। ওই বছর মার্চে আদালত তার জয়কে বাতিল করেছিল। কিন্তু জুনে পুনর্নির্বাচনে আরও ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি। গত বছর অর্থনৈতিক দুর্ভোগ ও অনেক জনমত জরিপে পিছিয়ে থাকলেও পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন এরদোয়ান। কিন্তু এখন নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সামনে আসছেন ইমামোগলু।

নির্বাচনি প্রচারের সময় ইমামোগলু বলেছেন, এটি মেয়র নির্বাচনের চেয়ে বড় কিছু। এই নির্বাচন একটি মানসিকতাকে ইতিহাসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যদি তা ইতিহাসের সঙ্গে মিলিত হয় তাহলে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত হবে, আইন ও ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার হবে।

এরদোয়ানের সমালোচকরা বলছেন, তুরস্কের বিচার বিভাগ, নাগরিক অধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা তার শাসনামলে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তুর্কি সরকার এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ১৯৭০ সালে কৃষ্ণসাগরীয় প্রদেশ ত্রাবজনে জন্ম ইমামোগলুর। সেখানেই তার শৈশব কেটেছে। ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৯৪ সালে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক অর্জন করেন তিনি। ওই সময় ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন এরদোয়ান। তিনি বিবাহিত এবং তিন সন্তান রয়েছে। পড়াশোনা শেষে তিনি পরিবারের নির্মাণ ব্যবসায় যোগ দেন।

অনেক বিশ্লেষক এখন ইমামোগলুর ভবিষ্যৎ সাফল্যের পূর্বাভাস দিচ্ছেন। মেট্রোপোল জরিপ সংস্থার প্রধান ওজার সেনচার বলেছেন, যদি কোনোভাবে এই নির্বাচন বাতিল করা না হয় তাহলে ২০২৮ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হবে।

আগামী দিনগুলোতে জাতীয় পর্যায়ে এরদোয়ান ও ইমামোগলুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্রতা পাবে। তবে সম্প্রতি ইমামোগলু স্মৃতিচারণ করে জানিয়েছেন প্রথমবার এরদোয়ানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার কথা। ১৯৯০ এর দশকে এরদোয়ান মেয়র হওয়ার পর ইমামোগলুর রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন।

ইমামোগলু বলেছেন, মেয়র হিসেবে তার প্রথম মাসে তিনি আমার অতিথি হয়েছিলেন। তিনি আমার রেস্তোরাঁয় খেয়েছিলেন। আমি তার কাছ থেকে বিল নেইনি। তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন এই বিল দেবেন না। সূত্র: রয়টার্স

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এরদোয়ানের ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই ইমামোগলু?

প্রকাশের সময় : ১০:৩৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

ইস্তাম্বুলের পুনর্নির্বাচিত মেয়র একরেম ইমামোগলু তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের শাসনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনিও তুর্কি প্রেসিডেন্টের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৯০ এর দশকে শহরটির মেয়র ছিলেন এরদোয়ানও।

দেশের বৃহত্তম শহরকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি দুই নেতার পরিবারের শেকড় রয়েছে কৃষ্ণ সাগরের পূর্বাঞ্চলে। দুজনের রাজনৈতিক জীবন তুরস্কের আদালত দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তরুণ বয়সে উভয়ে তুখোড় ফুটবলার ছিলেন। রবিবারের মেয়র নির্বাচনে জয় পেয়ে নিজের পদ ধরে রাখার পর অনেক বিশ্লেষকের কাছে ৫৩ বছর বয়সী ইমামোগলু তুরস্কের সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট।

নির্বাচনের পর ইমামোগলু বলেছেন, ভোটাররা এরদোয়ানকে সরাসরি একটি বার্তা দিয়েছে। যারা দেশের বার্তা বুঝতে পারবেন না তারা শেষ পর্যন্ত হারবেন। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে দুজনের অসাধারণ সক্ষমতা থাকলেও রাজনীতির ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সাবেক ব্যবসায়ী ইমামোগলু নিজেই বলেছেন, আমাদের চিন্তাগুলো মোটামুটি বিপরীত।

একটি ইসলামিক দলের হয়ে রাজনীতিতে পদার্পণ করেছিলেন এরদোয়ান। ২০০২ সাল থেকে ক্ষমতায় থেকে তিনি সেক্যুলার রাষ্ট্রটিকে নতুন চরিত্র দিয়েছেন। আর ২০০৮ সালে সেক্যুলারপন্থি রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি (সিএইচপি) দিয়ে ইমামোগলুর রাজনীতি শুরু। দশ বছর আগে ইস্তাম্বুলের বেইলিকদুজু জেলার মেয়র হয়েছিলেন। ইমামোগলুর সাফল্যের পেছনে রয়েছে তুরস্কে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক সিএইচপির ২৫ শতাংশ সমর্থনের সীমা ভেঙে আরও রক্ষণশীল ভোটারদের সমর্থন পাওয়া।

২০১৯ সালে তিনি প্রমাণ করেছেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে দুই দশকের মধ্যে বৃহত্তম পরাজয় দেখেছে এরদোয়ানের একে পার্টি। শুধু একবার নয়, দুই বার। ওই বছর মার্চে আদালত তার জয়কে বাতিল করেছিল। কিন্তু জুনে পুনর্নির্বাচনে আরও ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি। গত বছর অর্থনৈতিক দুর্ভোগ ও অনেক জনমত জরিপে পিছিয়ে থাকলেও পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন এরদোয়ান। কিন্তু এখন নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সামনে আসছেন ইমামোগলু।

নির্বাচনি প্রচারের সময় ইমামোগলু বলেছেন, এটি মেয়র নির্বাচনের চেয়ে বড় কিছু। এই নির্বাচন একটি মানসিকতাকে ইতিহাসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যদি তা ইতিহাসের সঙ্গে মিলিত হয় তাহলে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত হবে, আইন ও ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার হবে।

এরদোয়ানের সমালোচকরা বলছেন, তুরস্কের বিচার বিভাগ, নাগরিক অধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা তার শাসনামলে ক্ষুণ্ন হয়েছে। তুর্কি সরকার এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ১৯৭০ সালে কৃষ্ণসাগরীয় প্রদেশ ত্রাবজনে জন্ম ইমামোগলুর। সেখানেই তার শৈশব কেটেছে। ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৯৪ সালে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক অর্জন করেন তিনি। ওই সময় ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন এরদোয়ান। তিনি বিবাহিত এবং তিন সন্তান রয়েছে। পড়াশোনা শেষে তিনি পরিবারের নির্মাণ ব্যবসায় যোগ দেন।

অনেক বিশ্লেষক এখন ইমামোগলুর ভবিষ্যৎ সাফল্যের পূর্বাভাস দিচ্ছেন। মেট্রোপোল জরিপ সংস্থার প্রধান ওজার সেনচার বলেছেন, যদি কোনোভাবে এই নির্বাচন বাতিল করা না হয় তাহলে ২০২৮ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হবে।

আগামী দিনগুলোতে জাতীয় পর্যায়ে এরদোয়ান ও ইমামোগলুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্রতা পাবে। তবে সম্প্রতি ইমামোগলু স্মৃতিচারণ করে জানিয়েছেন প্রথমবার এরদোয়ানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার কথা। ১৯৯০ এর দশকে এরদোয়ান মেয়র হওয়ার পর ইমামোগলুর রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন।

ইমামোগলু বলেছেন, মেয়র হিসেবে তার প্রথম মাসে তিনি আমার অতিথি হয়েছিলেন। তিনি আমার রেস্তোরাঁয় খেয়েছিলেন। আমি তার কাছ থেকে বিল নেইনি। তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন এই বিল দেবেন না। সূত্র: রয়টার্স