ইসরায়েল-ইসলামিক জিহাদের যুদ্ধবিরতিতে মিসরের সফলতা
- প্রকাশের সময় : ০৩:৩১:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ মে ২০২৩
- / ১০৬ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি শনিবার (১৩ মে) রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে। মিসরের মধ্যস্থতায় ২০২১ সালের ১০ দিনের যুদ্ধের পর গাজা সীমান্তের দুই পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সংঘাতের অবসান ঘটানোই এই চুক্তির লক্ষ্য। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির পর কয়েক দিন ধরে গাজার রাস্তাগুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছে, সেখানে ফিলিস্তিনিদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অনেক ফিলিস্তিনি রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস ও গাড়ির হর্ন বাজিয়ে যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানায়, অনেকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সংঘর্ষে নিহতদের বাড়িতে ছুটে যায়। চুক্তিতে লেখা আছে, ‘ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলি পক্ষের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতার আলোকে মিশর দুই পক্ষের মধ্যে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে, উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে, যার মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলা, বাড়িঘর ধ্বংস ও নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের উপর আক্রমণ বন্ধ করা অন্তর্ভুক্ত।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এক পাশ ঠাণ্ডা থাকলে অন্য পক্ষও ঠাণ্ডা থাকবে। কিন্তু ইসরায়েল যদি আক্রমণ বা হুমকির সম্মুখীন হয়, তেল আবিব নিজেদের রক্ষার জন্য যা যা করা দরকার তা অব্যাহত রাখবে। এদিকে, ইসলামিক জিহাদও এই চুক্তির খবর নিশ্চিত করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মুখপাত্র দাউদ শিহাব বলেছেন, ‘আমরা মিসরের ঘোষণা মেনে নিচ্ছি। দখলদাররা (ইসরায়েল) যতদিন এটি মেনে চলবে ততক্ষণ আমরা এই যুদ্ধবিরতি মেনে চলব।’এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পরেও উভয় পক্ষের মধ্যে লড়াই অব্যাহত ছিল। তেল আবিবের উপকণ্ঠ পর্যন্ত রকেট হামলার সতর্কতা সংকেত শোনা গেছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা রকেটের বিনিময়ে ইসলামিক জিহাদের সঙ্গে জড়িত একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির খবরে সন্তোষ প্রকাশ করলেও কয়েকদিনের মধ্যে আবারও সংঘাত শুরু হবে কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন গাজার বাসিন্দারা। গাজার বাসিন্দা ৪৩ বছর বয়সী মুনির মারুফ বলেন, ‘আমরা নীতির ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি চাই। অতীতের মতো নয়, যখন কিছু শান্ত সময়ের পর মানুষজন মারা পড়তে থাকে। ইসরায়েল জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৯ মে) ভোরে সর্বশেষ বিমান হামলায় তারা ইসলামিক জিহাদের কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে ইরান সংশ্লিষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের দিকে এক হাজারেরও বেশি রকেট নিক্ষেপ করে, যার ফলে আতঙ্কিত ইসরায়েলিরা আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছোটতে বাধ্য হয়। সর্বশেষ পাঁচ দিনের সংঘর্ষে ইসরাইল ইসলামিক জিহাদের ছয় জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে হত্যা এবং বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনা ধ্বংসের দাবি করেছে। এই সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ গাজার অন্তত ১০ জন বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছেন।
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ছোড়া ফিলিস্তিনি রকেট হামলায় এক ইসরায়েলি নারী ও এক ফিলিস্তিনি শ্রমিক নিহত হয়েছেন। ইরান ভিত্তিক ইসলামিক জিহাদ ইসরায়েলের সঙ্গে সহাবস্থানের তীব্র বিরোধিতা করে এবং ইসরায়েলের ধ্বংস চায়। এদিকে, ইসরায়েলের বর্তমান ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী সরকারও ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে তেল আবিব কর্তৃক দখলকৃত ভূখণ্ডের কিছু অংশ নিয়ে একটি রাষ্ট্র গঠনের ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাখ্যান করেছে। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
সুমি/হককথা