ইউক্রেনে সরকার উচ্ছেদ রাশিয়ার লক্ষ্য নয়: মস্কো

- প্রকাশের সময় : ০৯:১০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ মার্চ ২০২২
- / ৬২ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে ক্ষমতাসীন সরকারের পতনের লক্ষ্য নিয়ে রুশ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। ইউক্রেন দখলের কোনো ইচ্ছা রাশিয়ার নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার (৯ মার্চ) মস্কোতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাখারোভা বলেন, ‘রুশ সেনাদের লক্ষ্য ইউক্রেনের সরকারকে উচ্ছেদ করা নয়। ইউক্রেন দখল করা বা দেশটির বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতির কোনো উদ্দেশ্য নিয়েও সেনারা এগোচ্ছে না।’
মারিয়া জাখারোভার এই অবস্থান অবশ্য মস্কোর এতদিনের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ এতদিন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুসহ রুশ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা এতদিন বলে আসছিলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য দেশটিকে ‘নাৎসীমুক্ত’ করা।
তবে যে বিষয়টিকে ঘিরে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল, সেটি হলো পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক যোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের আবেদন। ২০০৮ সালে কিয়েভ এই আবেদন করার পর থেকেই সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।
এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার চতুর্দশতম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় প্রায় ২০ লাখ ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত দু’সপ্তাহের দিনের সামরিক অভিযানে ইউক্রেনে সাড়ে সাড়ে ৪ শ’র বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুও।
এর মধ্যে ৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে আর ইচ্ছুক নয় তার দেশ।
সংবাদ সম্মেলনে মারিয়া জাখারোভা অভিযোগ করেন, ইউক্রেনে এমন রাশিয়ায় আসতে চান, কিন্তু তাদেরকে যেতে বাধা দিচ্ছে ইউক্রেনের সরকার। তিনি বলেন, ‘অন্তত ২০ লাখ মানুষ ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় ফিরতে চায়; কিন্তু এ ব্যাপারে কিয়েভ আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না।’
এছাড়া ইউক্রেন সরকারের সদিচ্ছার অভাবে মানবিক করিডরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন জারাখোভা।
হককথা/এমইএ