নিউইয়র্ক ০২:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইউক্রেনে কি পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটবে?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:২৪:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩
  • / ৬১ বার পঠিত

ঝাপোরঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি : রয়টার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাহলে কি আবার ফিরে আসতে চলেছে ১৯৮৬ সালের সেই দগদগে বিপর্যয়ের ছবি? ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে শুরু হয়েছে এমন আশঙ্কা। ১৪ মাস ধরে দক্ষিণ ইউক্রেনে নিপ্রো নদীর ধারে অবস্থিত ঝাপোরঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে ঝাপোরঝিয়া শহরে নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত রুশ প্রধানের একটি বিবৃতি ঘিরে তীব্র আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। আয়তনে বিশাল এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বিশ্বের দশটি বৃহত্তম পরমাণু কেন্দ্রের একটি। মোট ছয়টি প্রেশারাইজড লাইট ওয়াটার চুল্লি সর্বমোট ৫৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। খবর দ্য ওয়ালের

১৯৮৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্তমান নিয়ন্ত্রক হলো ইউক্রেন সরকারের জাতীয় পরমাণু শক্তি উৎপাদন সংস্থা। তবে গত বছর শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধে এই কেন্দ্র চলে গেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর অধীনে। গত বছরের মার্চ মাস থেকে ঝাপোরঝিয়া পরমাণুকেন্দ্র রয়েছে এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে। সমগ্র প্ল্যান্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে ভেতরে কর্মীদের সবাই ইউক্রেনীয়। দফায় দফায় গোলাবর্ষণের মাঝে ইউক্রেনের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা বিশাল এই পরমাণুকেন্দ্রকে এখনও কাজ চালানোর উপযুক্ত করে রেখেছেন।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে এটি কব্জায় রেখেছে। ছবি : এবিসি

রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, ঝাপোরঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র ও সংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অন্তত চার-পাঁচটি জনপদ সম্পূর্ণ খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম ঝাপোরঝিয়ার আশপাশের হাইওয়েতে গাড়ির লম্বা লাইনের ছবি প্রকাশ করেছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি বিভাগ জানিয়েছে, সম্ভবত ঝাপোরঝিয়া জুড়ে নতুন করে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। যাতে লড়াই আরও তীব্রতর হতে পারে। তার অভিঘাতে পরমাণু কেন্দ্রটিও পড়তে পারে চরম বিপদের মুখে। বিবিসির এক অনুষ্ঠানে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রসসি জানিয়েছেন, ‘সম্ভবত এই প্ল্যান্টের আশেপাশেই নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে।’

তবে কি আবার ঘটতে চলেছে কোনও পরমাণু বিপর্যয়? এই প্রশ্নই এখন তীব্র আলোড়ন ফেলেছে ইউরোপজুড়ে। ১৯৮৬ সালের চেরনোবিলের ক্ষত আজও রয়েছে ইউক্রেনজুড়ে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনস্ত চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের চার নম্বর বিক্রিয়কটি নানা যান্ত্রিক ত্রুটিতে তীব্র বিস্ফোরণে গলে যায়। ফলে নজিরবিহীন পরমাণু বিকিরণের মুখোমুখি হয় গোটা পূর্ব ইউরোপ। আজও সে ক্ষত শুকোয়নি। চেরনোবিল কেন্দ্রের নিকটস্থ প্রাইপিয়ত শহর কার্যত শ্মশানে পরিণত হয়। আজও ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে জঙ্গলের মাঝে জনমানবহীন হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই অভিশপ্ত শহর।

বেলী/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনে কি পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটবে?

প্রকাশের সময় : ০১:২৪:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাহলে কি আবার ফিরে আসতে চলেছে ১৯৮৬ সালের সেই দগদগে বিপর্যয়ের ছবি? ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে শুরু হয়েছে এমন আশঙ্কা। ১৪ মাস ধরে দক্ষিণ ইউক্রেনে নিপ্রো নদীর ধারে অবস্থিত ঝাপোরঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে ঝাপোরঝিয়া শহরে নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত রুশ প্রধানের একটি বিবৃতি ঘিরে তীব্র আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। আয়তনে বিশাল এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বিশ্বের দশটি বৃহত্তম পরমাণু কেন্দ্রের একটি। মোট ছয়টি প্রেশারাইজড লাইট ওয়াটার চুল্লি সর্বমোট ৫৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। খবর দ্য ওয়ালের

১৯৮৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন নির্মিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্তমান নিয়ন্ত্রক হলো ইউক্রেন সরকারের জাতীয় পরমাণু শক্তি উৎপাদন সংস্থা। তবে গত বছর শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধে এই কেন্দ্র চলে গেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর অধীনে। গত বছরের মার্চ মাস থেকে ঝাপোরঝিয়া পরমাণুকেন্দ্র রয়েছে এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে। সমগ্র প্ল্যান্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে ভেতরে কর্মীদের সবাই ইউক্রেনীয়। দফায় দফায় গোলাবর্ষণের মাঝে ইউক্রেনের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা বিশাল এই পরমাণুকেন্দ্রকে এখনও কাজ চালানোর উপযুক্ত করে রেখেছেন।

রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে এটি কব্জায় রেখেছে। ছবি : এবিসি

রাশিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, ঝাপোরঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র ও সংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অন্তত চার-পাঁচটি জনপদ সম্পূর্ণ খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম ঝাপোরঝিয়ার আশপাশের হাইওয়েতে গাড়ির লম্বা লাইনের ছবি প্রকাশ করেছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি বিভাগ জানিয়েছে, সম্ভবত ঝাপোরঝিয়া জুড়ে নতুন করে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। যাতে লড়াই আরও তীব্রতর হতে পারে। তার অভিঘাতে পরমাণু কেন্দ্রটিও পড়তে পারে চরম বিপদের মুখে। বিবিসির এক অনুষ্ঠানে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রসসি জানিয়েছেন, ‘সম্ভবত এই প্ল্যান্টের আশেপাশেই নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে।’

তবে কি আবার ঘটতে চলেছে কোনও পরমাণু বিপর্যয়? এই প্রশ্নই এখন তীব্র আলোড়ন ফেলেছে ইউরোপজুড়ে। ১৯৮৬ সালের চেরনোবিলের ক্ষত আজও রয়েছে ইউক্রেনজুড়ে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনস্ত চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের চার নম্বর বিক্রিয়কটি নানা যান্ত্রিক ত্রুটিতে তীব্র বিস্ফোরণে গলে যায়। ফলে নজিরবিহীন পরমাণু বিকিরণের মুখোমুখি হয় গোটা পূর্ব ইউরোপ। আজও সে ক্ষত শুকোয়নি। চেরনোবিল কেন্দ্রের নিকটস্থ প্রাইপিয়ত শহর কার্যত শ্মশানে পরিণত হয়। আজও ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে জঙ্গলের মাঝে জনমানবহীন হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই অভিশপ্ত শহর।

বেলী/হককথা