ইউক্রেনে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠালে প্রশ্নবিদ্ধ হবে ন্যাটো : রাশিয়া
- প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩
- / ৬১ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনীয় সেনাদের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণার পর ফের সতর্কবার্তা উচ্চারণ করল রাশিয়া। ইউক্রেনকে এই যুদ্ধবিমান দিলে যুদ্ধে ন্যাটোর জড়িত থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভ। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে ইউক্রনকে দীর্ঘমেয়াদে সমর্থন এবং সহযোগিতা বাড়াতে জি-৭ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
সোমবার আন্তোনোভ বলেন, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চালনার মতো যথেষ্ট পাইলট নেই ইউক্রেনের। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীও নেই। তিনি আরো বলেন, এই যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে ন্যাটোর বিমানঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনারা ‘স্বেচ্ছাসেবক’ হিসেবে যুদ্ধে নামলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে। বেশ কয়েক মাস ধরেই পশ্চিমা মিত্রদের কাছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান চেয়ে আসছিলেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সর্বশেষ জি-৭ সম্মেলনে শুক্রবার জো বাইডেন ইঙ্গিত দিয়েছেন পশ্চিমা মিত্ররা ইউক্রেনকে এই এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিতে চাইলে আপত্তি জানাবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ পরিপ্রেক্ষিতে রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সান্ডার গ্রুশকো সতর্কবার্তা জানিয়ে বলেছিলেন, যদি ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়া হয়, তাহলে পশ্চিমা দেশগুলো ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়বে। তবে বিষয়টি নিয়ে বাইডেন জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিমান শুধু ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডেই ব্যবহার করার আশ্বাস পেয়েছেন জেলেনস্কির কাছ থেকে। এগুলো দিয়ে অন্য কোনো দেশের স্বীকৃত ভূখণ্ডে কোনো ধরনের হামলা চালানো হবে না। বাইডেনের এমন বক্তব্যের জবাবে আন্তোনোভ বলেন, ২০১৪ সালে রুশ দখলকৃত ক্রিমিয়াতে যে কোনো ধরনের হামলা হলে তা রাশিয়ার ওপর হামলা বলেই বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পুরোপুরি সচেতন থাকা প্রয়োজন। তবে আন্তর্জাতিকভাবে এখনো রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি ক্রিমিয়া।
আরোও পড়ুন । নিউইয়র্কে নিখোঁজ দুই কিশোরের মরদেহ মিললো হারলেম ও হাডসনে
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির সাত দেশের সংগঠন জি-৭ এর নেতারা শনিবার ইউক্রেনকে দীর্ঘ এবং টেকসই সমর্থন জানানোর দৃঢ় বার্তা দেন। নিজ দেশের প্রতি সমর্থন এবং সহযোগিতা বাড়াতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবারঅতিথি হিসেবে ঐ সম্মেলনে যোগ দেন। জাপানের ঐতিহাসিক নগরী হিরোশিমায় এ বছর জি৭ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে জেলেনস্কি বৈঠকও করেন। বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের আগে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের পূর্বের নগরী বাখমুত পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। গত কয়েকমাস ধরে রুশ বাহিনী ও তাদের ভাড়াটে সেনারা বাখমুতের দখল নিতে মরিয়া হয়ে যুদ্ধ করছে। ইউক্রেনের মূল যুদ্ধক্ষেত্রে এখন বাখমুত।
রাশিয়ার ভাড়েটে সেনাদের দল ওয়াগনার শনিবার একটি ভিডিও প্রকাশ করে। যেখানে তারা বাখমুতের পূর্ণ দখল পাওয়ার দাবি করেছে। তবে বাখমুত আসলেই রাশিয়ার দখলে চলে গেছে, না নাকি এখনো কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সে বিষয়ে জেলেনস্কির বক্তব্যে কিছু স্পষ্ট হয়নি। জানা যায়, তিন দিনের জি৭ সম্মেলনের শেষ দিন রোববার বাইডেন ইউক্রেনের জন্য সাড়ে ৩৭ কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। যার মধ্যে কামান এবং সাঁজোয়া যানও রয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুড প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ইউক্রেনের যতদিন প্রয়োজন কানাডা ততদিন দেশটিকে সমর্থন দিয়ে যাবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, এই গ্রীষ্মেই ইউক্রেনের পাইলটদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। এবং যদি ভবিষ্যতে প্রয়োজন পড়ে তবে ইউক্রেন বিমান বাহিনীর সহায়তা পাবে। জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলত্স এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ উভয়ই এদিন কোনো ধরনের ‘শান্তি আলোচনা ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা’ (ফ্রোজেন কনফ্লিক্ট) বা রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার না করা ছাড়া কোনো ধরনের শান্তি আলোচনার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক
বেলী/হককথা