নিউইয়র্ক ১০:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ কতটা এগোল?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৪৭ বার পঠিত

ইউক্রেনের জেনারেলরা বলেছেন, তাদের সেনারা দক্ষিণে রাশিয়ার প্রথম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘ভেঙে দিয়েছে’। বিবিসি জানার চেষ্টা করেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী এ ক্ষেত্রে সত্যিই কতটা অগ্রসর হয়েছে এবং ফ্রন্টলাইনে বা সম্মুখসারিতে তাদের এগিয়ে থাকার কী ধরনের প্রমাণ রয়েছে।

রুশ বাহিনীকে তাদের দখলকৃত ভূমি থেকে সরিয়ে দিতে জুনের শুরুতে ইউক্রেন বড় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। প্রায় ৬০০ মাইল বা ৯৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্টলাইন বরাবর তিনটি পয়েন্টে তারা আক্রমণ চালিয়েছে।

জাপোরিঝিয়া শহরের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকাটি কৌশলগতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আজভ সাগরের এই দিকটায় সফলভাবে হামলা চালানো হলে, রাশিয়ার সরবরাহ রুট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কেননা এই অংশটি রুশ শহর রোস্তভ-অন-ডনকে ক্রিমিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের রোবোটাইন ও ভারবোভ গ্রামের আশপাশের এলাকা ছাড়া এই ফ্রন্টে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি।

ইউক্রেন যদি এই প্রধান সরবরাহ রুটটি বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে তবে ক্রিমিয়াতে রাশিয়ার বিশাল সেনাবাহিনীকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হবে। ক্রিমিয়া ২০১৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।
তবে উল্লেখযোগ্য বাধা সত্ত্বেও, ইউক্রেনীয় সেনাদের দক্ষিণ ফ্রন্ট বরাবর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার নিশ্চিত কিছু প্রমাণ রয়েছে। বিবিসি ভারবোভের কাছাকাছি ফ্রন্টলাইন বরাবর ধারণ করা ৯টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিও যাচাই করেছে।

ভিডিওগুলোতে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ভারবোভের উত্তরে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করতে দেখা গেছে।
তবে ভিডিওতে ধারণ করা এসব দৃশ্য দেখেই বলা যাবে না যে ইউক্রেন এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের শুধু পদাতিক বাহিনী রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে পেরেছে। ইউক্রেনীয় সাঁজোয়া যানের বহরকে এই ফাঁক গলে দখলকৃত ভূমি পুনরুদ্ধার করতে দেখা যায়নি।

ইউক্রেনের দ্রুত অগ্রসর হতে বাধা কোথায়?
মস্কো এই পাল্টা আক্রমণের বিষয়টি অনেক আগেই অনুমান করতে পেরেছিল।

এ জন্য দেশটি কয়েক মাস ধরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কয়েক স্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।
স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিতে দেখা গেছে, ইন্টার-লকিং বাধার সারি, পরিখা, বাংকার ও স্থল মাইন পোঁতা এলাকাসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় যুদ্ধাস্ত্র, সঙ্গে পদাতিক বাহিনী মোতায়েন করে প্রস্তুত রাশিয়া।

স্থল মাইন পোঁতা বিশাল এলাকা প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনের অগ্রযাত্রার গতি কমিয়ে দিয়েছে। এই মাইনফিল্ডগুলো গোলাবারুদে পরিপূর্ণ, কিছু কিছু জায়গায় এক বর্গমিটার এলাকায় পাঁচটি পর্যন্ত মাইন পোঁতা হয়েছে।

জুন মাসে ইউক্রেনের প্রথম প্রচেষ্টা দ্রুত ব্যর্থতার মুখে পড়েছিল। তখন তাদের কাছে থাকা আধুনিক, পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর সরবরাহ করা যুদ্ধাস্ত্র বিকল হয়ে যায় এবং পুড়ে যায়। ইউক্রেনের পদাতিক বাহিনী একইভাবে অচল হয়ে পড়ে। সে সময় ভয়ংকর হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিয়েভকে তখন থেকে প্রায়ই রাতে হেঁটে না হলে গোলাগুলি চলা অবস্থায় এই মাইনগুলো পরিষ্কার করতে হয়েছে। তাই এখন পর্যন্ত ইউক্রেন খুব ধীরগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

রাশিয়ার মাইন, ড্রোন ও ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের সামনে ইউক্রেনের সাঁজোয়া যান এখনো ঝুঁকিপূর্ণ। বিবিসি ভেরিফাইয়ের বিশ্লেষণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্রিটেনের দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জার-টু সাজোঁয়া যান রোবটাইনের হামলা মুখে পড়েছে।

তবে স্থল মাইন পোঁতা বিশাল এলাকার উল্লেখযোগ্য অংশ পরিষ্কার হয়ে গেলে এবং সেখানে রুশ বাহিনীকে দমন করা গেলে ইউক্রেনের পক্ষে সংখ্যায় এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের পরবর্তী টার্গেট কী?
কিংস কলেজ লন্ডন ওয়ার স্টাডিজ বিভাগের ড. মেরিনা মিরন বলেন, ‘ইউক্রেনীয়দের এখন যে সমস্যাটি আছে, তা হলো তাদের সেনা সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে।’

ইতিমধ্যে রাশিয়া নিজেদের শক্তি অনেকটাই পুনরুদ্ধার করেছে। তাদের অবস্থান এখন এতটাই দৃঢ় ও শক্তিশালী যে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দখল করা এলাকা পুনর্দখল নিতে পারে।

বিবিসি ড্রোন দিয়ে করা একটি রুশ ভিডিওর ভৌগোলিক অবস্থান চিহ্নিত করেছে, যা দেখে অনুমান করা যায়, ভিডিভি নামে রাশিয়ার এলিট বিমানবহর এখন ভারবোভ শহরের কাছাকাছি মোতায়েন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ইউক্রেনের যেকোনো পাল্টা আক্রমণের ঝুঁকি সঙ্গে সঙ্গে মোকাবেলা করা যায়।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরইউএসআইয়ের রাশিয়া বিশ্লেষক কাতেরিনা স্টেপানেঙ্কো বলেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীর প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে। গোলাগুলির পাশাপাশি, ড্রোন হামলা ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক কাঠামোর পাশাপাশি রুশ বাহিনী ব্যাপকভাবে ইলেকট্রনিক যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করছে বলে জানা যায়। যার লক্ষ্য ইউক্রেনের সংকেত পাঠানো ব্যবস্থা ও ড্রোন ব্যবহারে বাধা দেওয়া।’

ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী তারা হয়তো উপকূলের ১০ শতাংশের কিছু বেশি এলাকায় এগিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে সফলতার হার আরো কম।

এদিকে টানা তিন মাস কঠিন আক্রমণের মুখে এখন ক্লান্ত এবং সম্ভবত কিছুটা নিরাশ হয়ে পড়েছে রুশ বাহিনী। সেই সঙ্গে রাশিয়ার সরবরাহ পথ লক্ষ্য করেও অধিকাংশ দূরপাল্লার হামলা চালানো হয়েছে।

এখন ইউক্রেন যদি রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে টোকমাক শহর পর্যন্ত পৌঁছতে পারে, তাহলে তারা ক্রিমিয়া সঙ্গে রাশিয়ার রেল ও সড়ক সরবরাহ রুটগুলোকে তাদের সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে পারবে।

যদি তারা তা করতে পারে, তাহলে এই পাল্টা আক্রমণ একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের দিকে যেতে পারে। এর মাধ্যমে, এই যুদ্ধ হয়তো শেষ হবে না, কিন্তু তার ফলে হয়তো ২০২৪ সালটা কিছুটা ভালো অবস্থানে শুরু করতে পারবে ইউক্রেন।

আর এ যুদ্ধ হয়তো দীর্ঘতর হতে পারে, কিন্তু এই মুহূর্তে ইউক্রেনের এই অগ্রগতি হয়তো মস্কোর যুদ্ধপ্রচেষ্টাকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে। যখন শান্তি আলোচনা শুরু হবে তখন ইউক্রেনকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে রাখবে।

কিন্তু কিয়েভের হাতে সময় খুব কম। কেননা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বর্ষাকাল চলে আসবে। রাস্তাঘাট কাদায় মাখামাখি হয়ে যাবে, সেনাদের অগ্রগতিকে যা বাধাগ্রস্ত করবে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গেও ইউক্রেনের অগ্রগতির ঘনিষ্ট যোগ আছে। দেশটিতে যদি রিপাবলিকানরা জিতে যায়, তাহলে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সামরিক সহায়তা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেতে পারে। প্রেসিডেন্ট পুতিন জানেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। আর ইউক্রেনীয়রা জানে, তাদের এই পাল্টা আক্রমণ সফল করতে হবে।সূত্র,কালের কন্ঠ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ কতটা এগোল?

প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ইউক্রেনের জেনারেলরা বলেছেন, তাদের সেনারা দক্ষিণে রাশিয়ার প্রথম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘ভেঙে দিয়েছে’। বিবিসি জানার চেষ্টা করেছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী এ ক্ষেত্রে সত্যিই কতটা অগ্রসর হয়েছে এবং ফ্রন্টলাইনে বা সম্মুখসারিতে তাদের এগিয়ে থাকার কী ধরনের প্রমাণ রয়েছে।

রুশ বাহিনীকে তাদের দখলকৃত ভূমি থেকে সরিয়ে দিতে জুনের শুরুতে ইউক্রেন বড় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। প্রায় ৬০০ মাইল বা ৯৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্টলাইন বরাবর তিনটি পয়েন্টে তারা আক্রমণ চালিয়েছে।

জাপোরিঝিয়া শহরের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকাটি কৌশলগতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আজভ সাগরের এই দিকটায় সফলভাবে হামলা চালানো হলে, রাশিয়ার সরবরাহ রুট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কেননা এই অংশটি রুশ শহর রোস্তভ-অন-ডনকে ক্রিমিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের রোবোটাইন ও ভারবোভ গ্রামের আশপাশের এলাকা ছাড়া এই ফ্রন্টে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি।

ইউক্রেন যদি এই প্রধান সরবরাহ রুটটি বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে তবে ক্রিমিয়াতে রাশিয়ার বিশাল সেনাবাহিনীকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হবে। ক্রিমিয়া ২০১৪ সালে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।
তবে উল্লেখযোগ্য বাধা সত্ত্বেও, ইউক্রেনীয় সেনাদের দক্ষিণ ফ্রন্ট বরাবর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার নিশ্চিত কিছু প্রমাণ রয়েছে। বিবিসি ভারবোভের কাছাকাছি ফ্রন্টলাইন বরাবর ধারণ করা ৯টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিও যাচাই করেছে।

ভিডিওগুলোতে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ভারবোভের উত্তরে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করতে দেখা গেছে।
তবে ভিডিওতে ধারণ করা এসব দৃশ্য দেখেই বলা যাবে না যে ইউক্রেন এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের শুধু পদাতিক বাহিনী রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে পেরেছে। ইউক্রেনীয় সাঁজোয়া যানের বহরকে এই ফাঁক গলে দখলকৃত ভূমি পুনরুদ্ধার করতে দেখা যায়নি।

ইউক্রেনের দ্রুত অগ্রসর হতে বাধা কোথায়?
মস্কো এই পাল্টা আক্রমণের বিষয়টি অনেক আগেই অনুমান করতে পেরেছিল।

এ জন্য দেশটি কয়েক মাস ধরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কয়েক স্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।
স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিতে দেখা গেছে, ইন্টার-লকিং বাধার সারি, পরিখা, বাংকার ও স্থল মাইন পোঁতা এলাকাসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় যুদ্ধাস্ত্র, সঙ্গে পদাতিক বাহিনী মোতায়েন করে প্রস্তুত রাশিয়া।

স্থল মাইন পোঁতা বিশাল এলাকা প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনের অগ্রযাত্রার গতি কমিয়ে দিয়েছে। এই মাইনফিল্ডগুলো গোলাবারুদে পরিপূর্ণ, কিছু কিছু জায়গায় এক বর্গমিটার এলাকায় পাঁচটি পর্যন্ত মাইন পোঁতা হয়েছে।

জুন মাসে ইউক্রেনের প্রথম প্রচেষ্টা দ্রুত ব্যর্থতার মুখে পড়েছিল। তখন তাদের কাছে থাকা আধুনিক, পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর সরবরাহ করা যুদ্ধাস্ত্র বিকল হয়ে যায় এবং পুড়ে যায়। ইউক্রেনের পদাতিক বাহিনী একইভাবে অচল হয়ে পড়ে। সে সময় ভয়ংকর হতাহতের ঘটনা ঘটে। কিয়েভকে তখন থেকে প্রায়ই রাতে হেঁটে না হলে গোলাগুলি চলা অবস্থায় এই মাইনগুলো পরিষ্কার করতে হয়েছে। তাই এখন পর্যন্ত ইউক্রেন খুব ধীরগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

রাশিয়ার মাইন, ড্রোন ও ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের সামনে ইউক্রেনের সাঁজোয়া যান এখনো ঝুঁকিপূর্ণ। বিবিসি ভেরিফাইয়ের বিশ্লেষণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্রিটেনের দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জার-টু সাজোঁয়া যান রোবটাইনের হামলা মুখে পড়েছে।

তবে স্থল মাইন পোঁতা বিশাল এলাকার উল্লেখযোগ্য অংশ পরিষ্কার হয়ে গেলে এবং সেখানে রুশ বাহিনীকে দমন করা গেলে ইউক্রেনের পক্ষে সংখ্যায় এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের পরবর্তী টার্গেট কী?
কিংস কলেজ লন্ডন ওয়ার স্টাডিজ বিভাগের ড. মেরিনা মিরন বলেন, ‘ইউক্রেনীয়দের এখন যে সমস্যাটি আছে, তা হলো তাদের সেনা সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে।’

ইতিমধ্যে রাশিয়া নিজেদের শক্তি অনেকটাই পুনরুদ্ধার করেছে। তাদের অবস্থান এখন এতটাই দৃঢ় ও শক্তিশালী যে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের দখল করা এলাকা পুনর্দখল নিতে পারে।

বিবিসি ড্রোন দিয়ে করা একটি রুশ ভিডিওর ভৌগোলিক অবস্থান চিহ্নিত করেছে, যা দেখে অনুমান করা যায়, ভিডিভি নামে রাশিয়ার এলিট বিমানবহর এখন ভারবোভ শহরের কাছাকাছি মোতায়েন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ইউক্রেনের যেকোনো পাল্টা আক্রমণের ঝুঁকি সঙ্গে সঙ্গে মোকাবেলা করা যায়।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরইউএসআইয়ের রাশিয়া বিশ্লেষক কাতেরিনা স্টেপানেঙ্কো বলেছেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীর প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে। গোলাগুলির পাশাপাশি, ড্রোন হামলা ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক কাঠামোর পাশাপাশি রুশ বাহিনী ব্যাপকভাবে ইলেকট্রনিক যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করছে বলে জানা যায়। যার লক্ষ্য ইউক্রেনের সংকেত পাঠানো ব্যবস্থা ও ড্রোন ব্যবহারে বাধা দেওয়া।’

ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী তারা হয়তো উপকূলের ১০ শতাংশের কিছু বেশি এলাকায় এগিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে সফলতার হার আরো কম।

এদিকে টানা তিন মাস কঠিন আক্রমণের মুখে এখন ক্লান্ত এবং সম্ভবত কিছুটা নিরাশ হয়ে পড়েছে রুশ বাহিনী। সেই সঙ্গে রাশিয়ার সরবরাহ পথ লক্ষ্য করেও অধিকাংশ দূরপাল্লার হামলা চালানো হয়েছে।

এখন ইউক্রেন যদি রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে টোকমাক শহর পর্যন্ত পৌঁছতে পারে, তাহলে তারা ক্রিমিয়া সঙ্গে রাশিয়ার রেল ও সড়ক সরবরাহ রুটগুলোকে তাদের সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে পারবে।

যদি তারা তা করতে পারে, তাহলে এই পাল্টা আক্রমণ একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের দিকে যেতে পারে। এর মাধ্যমে, এই যুদ্ধ হয়তো শেষ হবে না, কিন্তু তার ফলে হয়তো ২০২৪ সালটা কিছুটা ভালো অবস্থানে শুরু করতে পারবে ইউক্রেন।

আর এ যুদ্ধ হয়তো দীর্ঘতর হতে পারে, কিন্তু এই মুহূর্তে ইউক্রেনের এই অগ্রগতি হয়তো মস্কোর যুদ্ধপ্রচেষ্টাকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে। যখন শান্তি আলোচনা শুরু হবে তখন ইউক্রেনকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে রাখবে।

কিন্তু কিয়েভের হাতে সময় খুব কম। কেননা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বর্ষাকাল চলে আসবে। রাস্তাঘাট কাদায় মাখামাখি হয়ে যাবে, সেনাদের অগ্রগতিকে যা বাধাগ্রস্ত করবে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গেও ইউক্রেনের অগ্রগতির ঘনিষ্ট যোগ আছে। দেশটিতে যদি রিপাবলিকানরা জিতে যায়, তাহলে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সামরিক সহায়তা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেতে পারে। প্রেসিডেন্ট পুতিন জানেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। আর ইউক্রেনীয়রা জানে, তাদের এই পাল্টা আক্রমণ সফল করতে হবে।সূত্র,কালের কন্ঠ।