ইউক্রেনকে ইইউ-র অংশ করার প্রস্তাব

- প্রকাশের সময় : ০৯:২৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুন ২০২২
- / ৩৭ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বৃহস্পতিবার একসঙ্গে কিয়েভে পৌঁছেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি এবং রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্লাউস ইওহানিস। বৃহস্পতিবার তারা একসঙ্গে ইউক্রেনেরপ্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ করার বার্তা দেওয়া হয়।
সাংবাদিক বৈঠকে শলৎস বলেন, জার্মানি সবরকমভাবে ইউক্রেনের পাশে আছে। জার্মানি চায় ইউক্রেন দ্রুত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ হয়ে উঠুক। একই কথা বলেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ। জানিয়েছেন, ”আমরা সকলে চাই ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ হয়ে উঠুক।”
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তেলের মূল্য বেড়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল৷ কিন্তু সালমান তার সঙ্গে কথা বলতে চাননি বলে সেই সময় জানা গিয়েছিল৷ যদিও মার্কিন প্রশাসন এই খবর অস্বীকার করেছিল৷ এর কিছুদিন পরই রাশিয়া ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন সালমান৷
ইইউ-র অংশ হয়ে ওঠা আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র হওয়া এক বিষয় নয়। সদস্যপদ পাওয়ার জন্য একাধিক নিয়ম পালন করতে হয়। তার জন্য সময়ও লাগে যথেষ্ট। ইউক্রেনকে ইইউ-এর অংশ করার অর্থ সেই লম্বা প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তুতি।
জেলেনস্কির পাশে দাঁড়িয়ে ইটালির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ”ইউক্রেনের মানুষ প্রতিদিন গণতন্ত্রকে রক্ষা করে চলেছেন। গণতন্ত্রের উপর প্রতিটি আঘাত জীবন দিয়ে রুখে দিচ্ছেন। আর সময় নষ্ট করা যাবে না। ইউক্রেনকে যত দ্রুত সম্ভব ইইউ-র অংশ করে নিতে হবে। ইউক্রেনের পাশে থাকতে হবে।”
ইটালির প্রেসিডেন্টের সুর ধরেই জেলেনস্কি বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বের সহযোগিতায় ইউক্রেনের মানুষ লড়াই করছেন। লড়াইয়ের জন্য তাদের অস্ত্রের প্রয়োজন। পশ্চিম সেই অস্ত্র পাঠাতে সময় নিলে সমস্যায় পড়ছেন যোদ্ধারা। দখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারে সময় লেগে যাচ্ছে।
সাংবাদিক বৈঠকের মধ্যেই মাক্রোঁ জানিয়ে দেন, ইউক্রেনকে তারা আরো নতুন অস্ত্র সরবরাহ করবে। ছয়টি নতুন সিজার হাউইৎজার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মাক্রোঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
যুদ্ধাহত সৈনিক ইগর বলছিলেন, ‘‘আমরা নরক থেকে এখানে এসেছি৷’’ বাখমুতের এই হাসপাতালে তিনি এসেছেন বাঁচার আশায়৷ হাতে গোনা কয়েকজন ডাক্তার এবং প্যারামেডিক্স প্রাণপণ লড়ছেন তাদের বাঁচাতে৷ হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি বলতে গেলে কিছুই নেই৷ পর্যাপ্ত স্ট্রেচারও না থাকায় ওপরের ছবির মতো কাঠের দরজায় তুলে আনতে হচ্ছে আহত সৈন্যদের৷
এদিন সাংবাদিক বৈঠকের আগে কিয়েভের অদূরে ইরপিনে গেছিলেন বিশ্বনেতারা। রাশিয়া কীভাবে শহরটিকে ধ্বংস করেছে তা দেখে শলৎস বলেন, ”রাশিয়ার নিষ্ঠুরতা দেখে দম বন্ধ হয়ে আসছে। গোটা শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। বেসামরিক মানুষকে খুন করা হয়েছে। কাছেই বুচায় গণকবর উদ্ধার হয়েছে। এই নিষ্ঠুরতা কল্পনার অতীত।”
মাক্রোঁ জানিয়েছেন, রাশিয়া বর্বরের মতো আক্রমণ করেছে। যে বেসামরিক মানুষরা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তাদের সাহসিকতার প্রশংসা করে মাক্রোঁ বলেছেন, তাদের জন্যই আজ কিয়েভ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল রাশিয়া দখল করতে পারেনি।
রাশিয়ার বর্বরতার নিন্দা করেছেন ইটালির প্রধানমন্ত্রীও। তার বক্তব্য, নার্সারি, খেলার মাঠ সব ধ্বংস করে দিয়েছে রাশিয়া। সে এক ভয়াবহ দৃশ্য।
বৃহস্পতিবার ট্রেনে করে বিশ্বনেতারা একসঙ্গে ইউক্রেনে গেছিলেন। ট্রেন থেকে নেমে মাক্রোঁ বলেছিলেন, ”ইউক্রেনের পাশে আছি, এই বার্তা দেওয়ার জন্যই আমরা সকলে একসঙ্গে এখানে এসে পৌঁছেছি।”
মস্কো যেতে পারেন মাক্রোঁ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ, জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিনের সঙ্গে কথা বলতে মস্কো যেতে চান। তবে তিনি বলেছেন, ”মস্কো সফরের পূর্বশর্ত হলো, প্রেসিডেন্ট পুটিনকেও আলোচনার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। এমনি এমনি আমি মস্কো যাব না।”
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)
হককথা/এমউএ