নিউইয়র্ক ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আত্মসমর্পণের প্রশ্নই উঠে না : ইউক্রেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২
  • / ৫১ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের মারিওপোলের প্রশাসনকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী তা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনের মানুষ লড়াই চালিয়ে যাবেন।
শহরটিতে থাকা ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ বাহিনী অস্ত্র ত্যাগ করলে আজ সোমবার (২১ মার্চ) বেসামরিকদের শহরটি থেকে চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে প্রস্তাবে বলেছে রাশিয়া।
কিন্তু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরনগরী নিয়ে আত্মসমর্পণের কোনো প্রশ্নই ওঠে না বলে ইউক্রেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মারিওপোলে প্রায় তিন লাখ মানুষ আটকা পড়ে আছে। তাদের সরবরাহ ফুরিয়ে আসছে আর শহরটিতে ত্রাণের প্রবেশও আটকে দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক ধরে রুশ বোমাবর্ষণের মধ্যে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ছাড়াই শহরটির বাসিন্দারা টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
গতকাল রবিবার রুশ জেনারেল মিখাইল মিজিএনসেভ আত্মসমর্পণ প্রস্তাবের বিস্তারিত জানিয়ে মস্কোর স্থানীয় সময় আজ ভোর ৫টার মধ্যে শর্ত মেনে নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে রাশিয়ার সেনারা নিরাপদ করিডোর খুলে দেবে, প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনীয় সেনাদের ও ‘বিদেশি ভাড়াটে সেনাদের’ অস্ত্র সমর্পণ করার জন্য ও শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য।
রুশ বাহিনী জানিয়েছে, এর দুই ঘণ্টা পর সড়কগুলো থেকে মাইন অপসারণ শুরু করবে তারা এবং তা শেষ হলে খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য মানবিক ত্রাণবাহী বহরকে নিরাপদে শহরটিতে প্রবেশ করতে দেবে।
মারিওপোলে ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় নেমে আসছে, তা স্বীকার করেছেন জেনারেল মিজিএনসেভ। তিনি জানিয়েছেন, মারিওপোলে এবার সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। শহরের যা পরিস্থিতি, তাতে সেখানে আর এক মুহূর্তও কারও পক্ষে বাস করা সম্ভব নয়। ইউক্রেন রাজি হলে রাশিয়া কূটনৈতিক করিডোর খুলে দেবে। শহরটির বেসামরিক বাসিন্দাদের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিক দিয়ে শহর ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার হবে, প্রস্তাবে এমনটি বলা হয়েছে।
লড়াইয়ের মধ্যেই তিন হাজার ৯৮৫ জনকে মারিউপল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেনারেল মিজিএনসেভ।
কিন্তু ইউক্রেন তা মানতে রাজি হয়নি। তারা জানিয়েছে, কোনোভাবেই রাশিয়ার এই আহ্বানে তারা সায় দেবে না। লড়াই জারি থাকবে।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেছেন, ইউক্রেন মারিওপোলের পতন রোধ করার চেষ্টা বন্ধ করবে না। আত্মসমর্পণের, অস্ত্র নামিয়ে রাখার প্রশ্নই উঠতে পারে না।
এদিকে, এরই মধ্যে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার মারিওপোলের একটি আর্ট স্কুলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনা। স্কুলটিতে বোমা মারা হয়েছে। প্রায় ৪০০ মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে স্থানীয় প্রশাসন দাবি করেছে। স্কুলটিতে আদৌ কেউ বেঁচে আছেন কি না, এখনো পর্যন্ত তা জানা যায়নি। ঘটনাস্থলের কাছে রাশিয়া লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
রাশিয়ার সেনারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরটি ঘিরে রেখেছে। শহরটির বাসিন্দারা বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সরবরাহ ছাড়াই সেখানে আটকা পড়ে আছে। রুশ বাহিনীর হামলায় শহরটির ৯০ শতাংশ ভবন হয় ধ্বংস নয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে লড়াইয়ে এ পর্যন্ত অন্তত আড়াই হাজার লোক নিহত হয়েছে। -ডয়চে ভেলে ও রয়টার্স
হককথা/এমউএ

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আত্মসমর্পণের প্রশ্নই উঠে না : ইউক্রেন

প্রকাশের সময় : ০২:০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের মারিওপোলের প্রশাসনকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী তা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনের মানুষ লড়াই চালিয়ে যাবেন।
শহরটিতে থাকা ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ বাহিনী অস্ত্র ত্যাগ করলে আজ সোমবার (২১ মার্চ) বেসামরিকদের শহরটি থেকে চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে প্রস্তাবে বলেছে রাশিয়া।
কিন্তু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরনগরী নিয়ে আত্মসমর্পণের কোনো প্রশ্নই ওঠে না বলে ইউক্রেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মারিওপোলে প্রায় তিন লাখ মানুষ আটকা পড়ে আছে। তাদের সরবরাহ ফুরিয়ে আসছে আর শহরটিতে ত্রাণের প্রবেশও আটকে দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক ধরে রুশ বোমাবর্ষণের মধ্যে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ছাড়াই শহরটির বাসিন্দারা টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
গতকাল রবিবার রুশ জেনারেল মিখাইল মিজিএনসেভ আত্মসমর্পণ প্রস্তাবের বিস্তারিত জানিয়ে মস্কোর স্থানীয় সময় আজ ভোর ৫টার মধ্যে শর্ত মেনে নেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে রাশিয়ার সেনারা নিরাপদ করিডোর খুলে দেবে, প্রাথমিকভাবে ইউক্রেনীয় সেনাদের ও ‘বিদেশি ভাড়াটে সেনাদের’ অস্ত্র সমর্পণ করার জন্য ও শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য।
রুশ বাহিনী জানিয়েছে, এর দুই ঘণ্টা পর সড়কগুলো থেকে মাইন অপসারণ শুরু করবে তারা এবং তা শেষ হলে খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য মানবিক ত্রাণবাহী বহরকে নিরাপদে শহরটিতে প্রবেশ করতে দেবে।
মারিওপোলে ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় নেমে আসছে, তা স্বীকার করেছেন জেনারেল মিজিএনসেভ। তিনি জানিয়েছেন, মারিওপোলে এবার সাধারণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। শহরের যা পরিস্থিতি, তাতে সেখানে আর এক মুহূর্তও কারও পক্ষে বাস করা সম্ভব নয়। ইউক্রেন রাজি হলে রাশিয়া কূটনৈতিক করিডোর খুলে দেবে। শহরটির বেসামরিক বাসিন্দাদের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিক দিয়ে শহর ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার হবে, প্রস্তাবে এমনটি বলা হয়েছে।
লড়াইয়ের মধ্যেই তিন হাজার ৯৮৫ জনকে মারিউপল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেনারেল মিজিএনসেভ।
কিন্তু ইউক্রেন তা মানতে রাজি হয়নি। তারা জানিয়েছে, কোনোভাবেই রাশিয়ার এই আহ্বানে তারা সায় দেবে না। লড়াই জারি থাকবে।
ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেছেন, ইউক্রেন মারিওপোলের পতন রোধ করার চেষ্টা বন্ধ করবে না। আত্মসমর্পণের, অস্ত্র নামিয়ে রাখার প্রশ্নই উঠতে পারে না।
এদিকে, এরই মধ্যে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার মারিওপোলের একটি আর্ট স্কুলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনা। স্কুলটিতে বোমা মারা হয়েছে। প্রায় ৪০০ মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে স্থানীয় প্রশাসন দাবি করেছে। স্কুলটিতে আদৌ কেউ বেঁচে আছেন কি না, এখনো পর্যন্ত তা জানা যায়নি। ঘটনাস্থলের কাছে রাশিয়া লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
রাশিয়ার সেনারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরটি ঘিরে রেখেছে। শহরটির বাসিন্দারা বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সরবরাহ ছাড়াই সেখানে আটকা পড়ে আছে। রুশ বাহিনীর হামলায় শহরটির ৯০ শতাংশ ভবন হয় ধ্বংস নয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে লড়াইয়ে এ পর্যন্ত অন্তত আড়াই হাজার লোক নিহত হয়েছে। -ডয়চে ভেলে ও রয়টার্স
হককথা/এমউএ