নিউইয়র্ক ০৩:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অবিশ্বাস্য গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৪২:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৫১ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) হুঁশিয়ার করেছে, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবিশ্বাস্য হারে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বের ৭৭টি দেশে এ পর্যন্ত নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের রোগী শনাক্ত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানোম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, হয়তো আরো অনেক দেশেই ছড়িয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট যা এখনো শনাক্ত হয়নি। এই ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হচ্ছে না, যা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, আমরা এখন নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারছি যে এই ভাইরাসকে শুরুতে একেবারেই গুরুত্ব দেইনি আমরা। এখন ওমিক্রন যদি অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর রোগও হয়ে থাকে, আক্রান্তের হারে যে ঊর্ধ্বগতি তার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রস্তুত নয়। ফলে আবারও পুরো পৃথিবীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি বেকায়দায় পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে অতি সংক্রমণশীল এবং সারা বিশ্বে এই ভ্যারিয়েন্ট প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে, কিন্তু এর লক্ষণ খুবই মৃদু।

নভেম্বরে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাতে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় এবং দেশটিতে নতুন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সেরিল রামাফোসা কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন এবং তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এখন তার শরীরে করোনার মৃদু উপসর্গ রয়েছে।

ওমিক্রনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ফলে চাপে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ওমিক্রনের ছড়িয়ে পড়া আটকানো যায়নি।

মঙ্গলবারের ওই সংবাদ সম্মেলনে ড. তেদ্রোস করোনার টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশে দেশে বৈষম্যের বিষয়টি আবারও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর মারাত্মক শারীরিক জটিলতা বা মৃত্যুর কম ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার ফলে, যারা সরবরাহের ঘাটতির কারণে এখনো প্রাথমিক ডোজগুলো পাননি তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে অনেক দেশই এখন বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করছে।

ফাইজার/বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন নিয়ে করা এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মূল স্ট্রেনের তুলনায় ওমিক্রনের বিরুদ্ধে অনেক কম নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি তৈরি করে।

কিন্তু এই ঘাটতি তৃতীয় একটি ডোজ বা বুস্টার ডোজের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব। ড. তেদ্রোস বলেছেন, করোনা ঠেকাতে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, কিন্তু গুরুত্বের বিচারে কাদের দেয়া হবে তা নির্ধারণ সেটাই মূল প্রশ্ন।

তিনি বলেন, অসুখবিসুখ বা মৃত্যু ঝুঁকি কম রয়েছে এমন মানুষকে বুস্টার দেয়া হলে, যারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন কিন্তু টিকার সরবারহ পাচ্ছেন না বলে এখনও প্রথম ডোজ টিকাই দিতে পারেননি, তারা মারাত্মক বিপদে পড়বেন।

টিকা শেয়ার করার বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভ্যাকসিনের যোগান বাড়িয়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তাদের আশংকা, অচিরেই আবারো টিকার ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

চলতি বছরের মাঝামাঝি ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর দেশটি টিকা রফতানি বন্ধ করে দিলে বিশ্বে টিকার যোগানে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশে এখনও অনেক মানুষ এক ডোজ টিকাও পাননি। -বিবিসি

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

অবিশ্বাস্য গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

প্রকাশের সময় : ০৬:৪২:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) হুঁশিয়ার করেছে, করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবিশ্বাস্য হারে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বের ৭৭টি দেশে এ পর্যন্ত নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের রোগী শনাক্ত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানোম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, হয়তো আরো অনেক দেশেই ছড়িয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট যা এখনো শনাক্ত হয়নি। এই ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হচ্ছে না, যা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, আমরা এখন নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারছি যে এই ভাইরাসকে শুরুতে একেবারেই গুরুত্ব দেইনি আমরা। এখন ওমিক্রন যদি অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর রোগও হয়ে থাকে, আক্রান্তের হারে যে ঊর্ধ্বগতি তার জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রস্তুত নয়। ফলে আবারও পুরো পৃথিবীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি বেকায়দায় পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে অতি সংক্রমণশীল এবং সারা বিশ্বে এই ভ্যারিয়েন্ট প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে, কিন্তু এর লক্ষণ খুবই মৃদু।

নভেম্বরে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাতে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় এবং দেশটিতে নতুন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সেরিল রামাফোসা কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন এবং তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এখন তার শরীরে করোনার মৃদু উপসর্গ রয়েছে।

ওমিক্রনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ফলে চাপে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। কিন্তু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ওমিক্রনের ছড়িয়ে পড়া আটকানো যায়নি।

মঙ্গলবারের ওই সংবাদ সম্মেলনে ড. তেদ্রোস করোনার টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশে দেশে বৈষম্যের বিষয়টি আবারও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর মারাত্মক শারীরিক জটিলতা বা মৃত্যুর কম ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার ফলে, যারা সরবরাহের ঘাটতির কারণে এখনো প্রাথমিক ডোজগুলো পাননি তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতে অনেক দেশই এখন বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করছে।

ফাইজার/বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন নিয়ে করা এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মূল স্ট্রেনের তুলনায় ওমিক্রনের বিরুদ্ধে অনেক কম নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি তৈরি করে।

কিন্তু এই ঘাটতি তৃতীয় একটি ডোজ বা বুস্টার ডোজের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব। ড. তেদ্রোস বলেছেন, করোনা ঠেকাতে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, কিন্তু গুরুত্বের বিচারে কাদের দেয়া হবে তা নির্ধারণ সেটাই মূল প্রশ্ন।

তিনি বলেন, অসুখবিসুখ বা মৃত্যু ঝুঁকি কম রয়েছে এমন মানুষকে বুস্টার দেয়া হলে, যারা উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন কিন্তু টিকার সরবারহ পাচ্ছেন না বলে এখনও প্রথম ডোজ টিকাই দিতে পারেননি, তারা মারাত্মক বিপদে পড়বেন।

টিকা শেয়ার করার বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভ্যাকসিনের যোগান বাড়িয়েছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তাদের আশংকা, অচিরেই আবারো টিকার ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

চলতি বছরের মাঝামাঝি ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর দেশটি টিকা রফতানি বন্ধ করে দিলে বিশ্বে টিকার যোগানে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশে এখনও অনেক মানুষ এক ডোজ টিকাও পাননি। -বিবিসি