নিউইয়র্ক ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘১০ বছরের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে চাই’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৩৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১১৫ বার পঠিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ে নানা সুযোগ সুবিধা ও ছাড় দেওয়া সত্ত্বেও খেলাপি ঋণ কমাতে পারেনি অনেক ব্যাংক। ঋণখেলাপির তালিকায় যেসব ব্যাংকের নাম শীর্ষে আছে তাদের অন্যতম পদ্মা ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রায় ৬২ শতাংশই খেলাপি ঋণ। ঋণের এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তারেক রিয়াজ খান। ১০ বছরের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।

ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা ও পরিকল্পনা নিয়ে সাক্ষাৎকারে তারেক রিয়াজ খান জানান, ২০৩৩ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এছাড়াও প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছে ব্যাংকটি। চালু করেছে ইসলামী উইন্ডো।

২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়া ব্যাংকের একটি ছিল ফারমার্স ব্যাংক। চার বছর না পেরোতেই সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি ফারমার্স ব্যাংকের নাম বদলে রাখা হয় পদ্মা ব্যাংক। ওই বছর থেকেই নতুন ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে ব্যাংকটি।

২০২২ সালের মার্চ মাসে ব্যাংকটির এমডি ও সিইও হিসেবে যোগ দেন তারেক রিয়াজ খান। ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারেক রিয়াজ বলেন, ‘বর্তমানে পদ্মা ব্যাংকে ১ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে দুই বছরেই গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজারের মত। এছাড়া অনেক সংকটের মধ্যে গত তিন বছরে সাড়ে ৩’শ কোটি টাকা আমানত পেয়েছি। তাতে বর্তমানে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৫ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। খেলাপির ঋণ ৬৭ শতাংশ থেকে ৬১ দশমিক ৮৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছি। এছাড়া পাঁচটি ইসলামী উইন্ডো চালু করেছি। দুই বছরে দুটি পূর্ণাঙ্গ শাখা এবং ১৪টি উপশাখা বেড়েছে পদ্মা ব্যাংকের। গত পাঁচ বছরে পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদের সহযোগিতা ও কর্মীদের দক্ষতার কারণে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ৮৭৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। একই সময়ে সাধারণ আমানতকারীদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এগুলো কিন্তু বড় অর্জন।’

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও জানান, ‘বর্তমানে ব্যাংকের ভালো ও নির্ভরযোগ্য বোর্ড অফ ডিরেক্টরস রয়েছেন। বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের মধ্যে স্বচ্ছতা আছে। তাই অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমত একটি ভালো ব্যাংক তৈরি করতে যা যা পরিকল্পনা দরকার সব ধরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০৩৩ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। আমানত বাড়ানো, ঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায়ের দিকেও জোর বেশি দিচ্ছি। এছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে পদ্মা ব্যাংক গ্রাহককে স্মাট সেবা দেয়ার চিন্তা নিয়ে কাজ করছি। পদ্মা ব্যাংক এখন একেবারেই প্রান্তিক মানুষকে সেবা দেবে। প্রান্তিক মানুষকে সেবা দিয়ে তাদেরকেও স্মার্ট উদ্যোক্তা তৈরি করবে পদ্মা ব্যাংক।

এই মুহুর্তে করপোরেট ঋণে যেতে চাচ্ছি না। প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আমরা অবদান রাখতে চাই। কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি, গাড়ি কেনার ও বাড়ির তৈরির ঋণ বেশি দিচ্ছি। তারেক রিয়াজ খান, এমডি ও সিইও, পদ্মা ব্যাংক পিএলসি আরও উপশাখা বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে পদ্মা ব্যাংকের ৬০টি শাখা ও ৬টি উপশাখা রয়েছে। এ বছর আরও ৩০টি উপশাখা করার পরিকল্পনা চলছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই উপশাখাগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে নিয়ে যেতে চাচ্ছি আমরা। আমাদের পরিচালনা পর্ষদও চাচ্ছে গ্রামীণ পর্যায়ে আমরা উপশাখাগুলো প্রতিষ্ঠিত করি।’

গ্রাহকদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে তারেক রিয়াজ খান বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা উন্নতি হয়েছে, মানুষের আস্থাও বাড়ছে। গ্রাহকের ভালো সাড়া পাচ্ছি, বিধায় আমানত ও গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। গত দুই বছরে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজারের মতো। তাতে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। ফলে আমানত ও গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া গ্রাহকরা ঘরে বসে সব ধরনের সেবা পেতে পারে সেজন্য রয়েছে একটি অ্যাপ, নাম পদ্মা ওয়ালেট। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই ব্যাংকের একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে সব ধরণের লেনদেন করতে পারে। এছাড়া পদ্মা ব্যাংকের ডেবিট কার্ড দিয়ে ‘বিনা মাশুলে’ দেশের যেকোনো ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন গ্রাহকরা। গ্রাহকের নিরাপদ ও দ্রুত ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে কোর ব্যাংকিং সিস্টেম চালু রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে। এছাড়া অনলাইনেও আমাদের ব্যাংকের সেবা মিলছে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে।’

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, ‘আমানতের জন্য বিশেষ কিছু স্কিম চালু করেছি। যেখানে প্রতিদিন ব্যাংকে আমানত রেখে প্রতিদিন মুনাফা নেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আকর্ষণীয় কিছু স্কিম চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন চারটি ব্যাংকিং স্কিম রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে। স্কিমগুলো হলো- পদ্মা নেক্সটজেন অ্যাকাউন্ট, পদ্মা মাস্টার মাইন্ড অ্যাকাউন্ট, পদ্মা স্পিরিট মান্থলি ডিপোজিট প্ল্যান এবং পদ্মা ব্যাংক স্টুডেন্ট ফাইল। এছাড়া মাসিক ইনকাম স্কিম, টার্গেট ডিপোজিট স্কিম এবং পদ্মা অগ্রজ নামে আমানতের স্কিম চালু রয়েছে।’

তারেক রিয়াজ খান বলেন, ‘বর্তমানে আমরা কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) ঋণ দিয়ে এগিয়ে যেতে চাচ্ছি। এই মুহুর্তে করপোরেট ঋণে যেতে চাচ্ছি না। প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আমরা অবদান রাখতে চাই। কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি, গাড়ি কেনার ও বাড়ির তৈরির ঋণ বেশি দিচ্ছি। কারণ সিএমএসএমই খাতে ঋণ দেওয়া যেমন নিরাপদ অন্যদিকে অনেক মানুষের সঙ্গে ব্যাংকিং করার সুযোগ থাকে। পদ্মা ব্যাংকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তারমধ্যে আমানত সংকট। বড় খেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায়। এছাড়া যেসব খেলাপিদের মামলা রয়েছে সেগুলো থেকে দ্রুত অর্থ আদায়।’ সূত্র : ঢাকা মেইল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‘১০ বছরের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে চাই’

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ে নানা সুযোগ সুবিধা ও ছাড় দেওয়া সত্ত্বেও খেলাপি ঋণ কমাতে পারেনি অনেক ব্যাংক। ঋণখেলাপির তালিকায় যেসব ব্যাংকের নাম শীর্ষে আছে তাদের অন্যতম পদ্মা ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রায় ৬২ শতাংশই খেলাপি ঋণ। ঋণের এমন অবস্থা থেকে উত্তরণে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তারেক রিয়াজ খান। ১০ বছরের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে আনতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।

ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা ও পরিকল্পনা নিয়ে সাক্ষাৎকারে তারেক রিয়াজ খান জানান, ২০৩৩ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এছাড়াও প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছে ব্যাংকটি। চালু করেছে ইসলামী উইন্ডো।

২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়া ব্যাংকের একটি ছিল ফারমার্স ব্যাংক। চার বছর না পেরোতেই সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি ফারমার্স ব্যাংকের নাম বদলে রাখা হয় পদ্মা ব্যাংক। ওই বছর থেকেই নতুন ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে ব্যাংকটি।

২০২২ সালের মার্চ মাসে ব্যাংকটির এমডি ও সিইও হিসেবে যোগ দেন তারেক রিয়াজ খান। ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারেক রিয়াজ বলেন, ‘বর্তমানে পদ্মা ব্যাংকে ১ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে দুই বছরেই গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজারের মত। এছাড়া অনেক সংকটের মধ্যে গত তিন বছরে সাড়ে ৩’শ কোটি টাকা আমানত পেয়েছি। তাতে বর্তমানে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৫ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। খেলাপির ঋণ ৬৭ শতাংশ থেকে ৬১ দশমিক ৮৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছি। এছাড়া পাঁচটি ইসলামী উইন্ডো চালু করেছি। দুই বছরে দুটি পূর্ণাঙ্গ শাখা এবং ১৪টি উপশাখা বেড়েছে পদ্মা ব্যাংকের। গত পাঁচ বছরে পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদের সহযোগিতা ও কর্মীদের দক্ষতার কারণে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ৮৭৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। একই সময়ে সাধারণ আমানতকারীদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এগুলো কিন্তু বড় অর্জন।’

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও জানান, ‘বর্তমানে ব্যাংকের ভালো ও নির্ভরযোগ্য বোর্ড অফ ডিরেক্টরস রয়েছেন। বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের মধ্যে স্বচ্ছতা আছে। তাই অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমত একটি ভালো ব্যাংক তৈরি করতে যা যা পরিকল্পনা দরকার সব ধরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০৩৩ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। আমানত বাড়ানো, ঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায়ের দিকেও জোর বেশি দিচ্ছি। এছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে পদ্মা ব্যাংক গ্রাহককে স্মাট সেবা দেয়ার চিন্তা নিয়ে কাজ করছি। পদ্মা ব্যাংক এখন একেবারেই প্রান্তিক মানুষকে সেবা দেবে। প্রান্তিক মানুষকে সেবা দিয়ে তাদেরকেও স্মার্ট উদ্যোক্তা তৈরি করবে পদ্মা ব্যাংক।

এই মুহুর্তে করপোরেট ঋণে যেতে চাচ্ছি না। প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আমরা অবদান রাখতে চাই। কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি, গাড়ি কেনার ও বাড়ির তৈরির ঋণ বেশি দিচ্ছি। তারেক রিয়াজ খান, এমডি ও সিইও, পদ্মা ব্যাংক পিএলসি আরও উপশাখা বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে পদ্মা ব্যাংকের ৬০টি শাখা ও ৬টি উপশাখা রয়েছে। এ বছর আরও ৩০টি উপশাখা করার পরিকল্পনা চলছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এই উপশাখাগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে নিয়ে যেতে চাচ্ছি আমরা। আমাদের পরিচালনা পর্ষদও চাচ্ছে গ্রামীণ পর্যায়ে আমরা উপশাখাগুলো প্রতিষ্ঠিত করি।’

গ্রাহকদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে তারেক রিয়াজ খান বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা উন্নতি হয়েছে, মানুষের আস্থাও বাড়ছে। গ্রাহকের ভালো সাড়া পাচ্ছি, বিধায় আমানত ও গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। গত দুই বছরে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজারের মতো। তাতে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। ফলে আমানত ও গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া গ্রাহকরা ঘরে বসে সব ধরনের সেবা পেতে পারে সেজন্য রয়েছে একটি অ্যাপ, নাম পদ্মা ওয়ালেট। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই ব্যাংকের একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে সব ধরণের লেনদেন করতে পারে। এছাড়া পদ্মা ব্যাংকের ডেবিট কার্ড দিয়ে ‘বিনা মাশুলে’ দেশের যেকোনো ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন গ্রাহকরা। গ্রাহকের নিরাপদ ও দ্রুত ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে কোর ব্যাংকিং সিস্টেম চালু রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে। এছাড়া অনলাইনেও আমাদের ব্যাংকের সেবা মিলছে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে।’

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, ‘আমানতের জন্য বিশেষ কিছু স্কিম চালু করেছি। যেখানে প্রতিদিন ব্যাংকে আমানত রেখে প্রতিদিন মুনাফা নেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আকর্ষণীয় কিছু স্কিম চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন চারটি ব্যাংকিং স্কিম রয়েছে পদ্মা ব্যাংকে। স্কিমগুলো হলো- পদ্মা নেক্সটজেন অ্যাকাউন্ট, পদ্মা মাস্টার মাইন্ড অ্যাকাউন্ট, পদ্মা স্পিরিট মান্থলি ডিপোজিট প্ল্যান এবং পদ্মা ব্যাংক স্টুডেন্ট ফাইল। এছাড়া মাসিক ইনকাম স্কিম, টার্গেট ডিপোজিট স্কিম এবং পদ্মা অগ্রজ নামে আমানতের স্কিম চালু রয়েছে।’

তারেক রিয়াজ খান বলেন, ‘বর্তমানে আমরা কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) ঋণ দিয়ে এগিয়ে যেতে চাচ্ছি। এই মুহুর্তে করপোরেট ঋণে যেতে চাচ্ছি না। প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি উপশাখার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আমরা অবদান রাখতে চাই। কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি, গাড়ি কেনার ও বাড়ির তৈরির ঋণ বেশি দিচ্ছি। কারণ সিএমএসএমই খাতে ঋণ দেওয়া যেমন নিরাপদ অন্যদিকে অনেক মানুষের সঙ্গে ব্যাংকিং করার সুযোগ থাকে। পদ্মা ব্যাংকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তারমধ্যে আমানত সংকট। বড় খেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায়। এছাড়া যেসব খেলাপিদের মামলা রয়েছে সেগুলো থেকে দ্রুত অর্থ আদায়।’ সূত্র : ঢাকা মেইল।