নিউইয়র্ক ০৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ কমলো

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১৮ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক : ঋণখেলাপি থাকলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে খেলাপি থেকে বাঁচতে ঋণ পরিশোধ করেছেন অনেকে। আবার প্রভাব খাটিয়ে নিয়মিত ঋণ করছে অনেক গোষ্ঠী। বেড়েছে ব্যাংক খাতে পুনঃতপশিল। ফলে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে এ খাতে খেলাপি কমেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত ডিসেম্বর প্রান্তিকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, সুশাসন ও খেলাপি ঋণই বর্তমান ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা। এ খাতে সুশাসনের অভাবে দিন দিন খেলাপি বাড়ছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় ঢালাওভাবে ছাড় না দিয়ে পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেরিতে হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সেই উদ্যোগের যথাযথ প্রয়োগ ও নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে মোট ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংক খাত। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। এটি ছিল মোট বিতরণকৃত ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি কমেছে ৯ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এটি ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকের চেয়ে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বেশি। ওই বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, কাগজে-কলমে খেলাপি কমেছে দেখানো হলেও এসব ঋণ পুনঃতপশিল বা অবলোপন হয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংক খাতে পুনঃতপশিল হয়েছে ১৮ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। আর শেষ তিন মাসে পুনঃতপশিল হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর বাইরে গত বছর সুদ মওকুফ করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ কাগজে-কলমে খেলাপি কমলেও মূলত বেড়েছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কালবেলাকে বলেন, খেলাপির প্রকৃত চিত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে আসেনি। প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ। এখানে ঋণ কম দেখানো হয়েছে। এগুলো কি আদায় হয়েছে—প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আদায় না হলে বুঝতে হবে এগুলো মন্দ ঋণ। কাগজে-কলমে কম না দেখিয়ে ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন নুরুল আমিন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাত থেকে বিতরণ হয় ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা ঋণ। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রান্তিকটিতে দেশের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে খেলাপি ঋণ। আর মার্চ শেষে খেলাপির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা, বা মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক কালবেলাকে বলেন, ব্যাংক খাতে অস্বাভাবিক হারে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের শেষ দিক থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এতে খেলাপি কিছুটা কমেছে। আমরা নতুন করে আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। এগুলো কার্যকর করা গেলে খেলাপি আরও কমবে। এ ছাড়া সুশাসন ফেরাতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। ব্যাংক খাতে বড় পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছি।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ধাপে ধাপে কমিয়ে আনতে হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ৫ শতাংশ এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে। কিন্তু বর্তমানে বেসরকারি খাতের খেলাপি ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ২১ শতাংশই খেলাপি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলো একই সময়ে ঋণ বিতরণ করেছে ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৭০ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলো ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৬৬ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৩ হাজার ২০১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৪০ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা ঋণ। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। বিতরণকৃত ঋণের এটি ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

আইএমএফের শর্তমতে, পুনঃতপশিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখাতে হবে। সেক্ষেত্রে আইএমএফের হিসাবে খেলাপি দাঁড়াবে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থান না থাকায় খেলাপি বাড়ছে বলে মত অনেকের।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানিয়েছিলেন, দেশের ব্যাংক খাতের বড় দুই সমস্যা—করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণ। খেলাপি কমাতে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের আরও ভূমিকা নিতে হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি কমাতে ও সুশাসন ফেরাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, খেলাপি কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের তেমন সফলতা আসছে না। যেটুকু কমেছে, সেগুলো আদায় হয়নি। পুনঃতপশিল বা অবলোপন বা সুদ মওকুফের কারণে কমেছে। খেলাপি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আরও কঠোর হতে হবে। খেলাপি কমাতে না পারলে সেসব ব্যাংকের শাখা বন্ধের নির্দেশ দিতে হবে। সূত্র : কালবেলা

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ কমলো

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

হককথা ডেস্ক : ঋণখেলাপি থাকলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে খেলাপি থেকে বাঁচতে ঋণ পরিশোধ করেছেন অনেকে। আবার প্রভাব খাটিয়ে নিয়মিত ঋণ করছে অনেক গোষ্ঠী। বেড়েছে ব্যাংক খাতে পুনঃতপশিল। ফলে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে এ খাতে খেলাপি কমেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত ডিসেম্বর প্রান্তিকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, সুশাসন ও খেলাপি ঋণই বর্তমান ব্যাংক খাতের বড় সমস্যা। এ খাতে সুশাসনের অভাবে দিন দিন খেলাপি বাড়ছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় ঢালাওভাবে ছাড় না দিয়ে পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেরিতে হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সেই উদ্যোগের যথাযথ প্রয়োগ ও নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে মোট ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংক খাত। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। এটি ছিল মোট বিতরণকৃত ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি কমেছে ৯ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এটি ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকের চেয়ে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বেশি। ওই বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, কাগজে-কলমে খেলাপি কমেছে দেখানো হলেও এসব ঋণ পুনঃতপশিল বা অবলোপন হয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংক খাতে পুনঃতপশিল হয়েছে ১৮ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। আর শেষ তিন মাসে পুনঃতপশিল হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর বাইরে গত বছর সুদ মওকুফ করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ কাগজে-কলমে খেলাপি কমলেও মূলত বেড়েছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কালবেলাকে বলেন, খেলাপির প্রকৃত চিত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উঠে আসেনি। প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ। এখানে ঋণ কম দেখানো হয়েছে। এগুলো কি আদায় হয়েছে—প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আদায় না হলে বুঝতে হবে এগুলো মন্দ ঋণ। কাগজে-কলমে কম না দেখিয়ে ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন নুরুল আমিন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাত থেকে বিতরণ হয় ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা ঋণ। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রান্তিকটিতে দেশের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে খেলাপি ঋণ। আর মার্চ শেষে খেলাপির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা, বা মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক কালবেলাকে বলেন, ব্যাংক খাতে অস্বাভাবিক হারে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের শেষ দিক থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এতে খেলাপি কিছুটা কমেছে। আমরা নতুন করে আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। এগুলো কার্যকর করা গেলে খেলাপি আরও কমবে। এ ছাড়া সুশাসন ফেরাতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। ব্যাংক খাতে বড় পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছি।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ধাপে ধাপে কমিয়ে আনতে হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ৫ শতাংশ এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে। কিন্তু বর্তমানে বেসরকারি খাতের খেলাপি ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সরকারি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ২১ শতাংশই খেলাপি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলো একই সময়ে ঋণ বিতরণ করেছে ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৭০ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলো ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে ৬৬ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৩ হাজার ২০১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৪০ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা ঋণ। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৫ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। বিতরণকৃত ঋণের এটি ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

আইএমএফের শর্তমতে, পুনঃতপশিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি দেখাতে হবে। সেক্ষেত্রে আইএমএফের হিসাবে খেলাপি দাঁড়াবে ৪ লাখ কোটি টাকার বেশি। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থান না থাকায় খেলাপি বাড়ছে বলে মত অনেকের।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানিয়েছিলেন, দেশের ব্যাংক খাতের বড় দুই সমস্যা—করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণ। খেলাপি কমাতে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের আরও ভূমিকা নিতে হবে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি কমাতে ও সুশাসন ফেরাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, খেলাপি কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের তেমন সফলতা আসছে না। যেটুকু কমেছে, সেগুলো আদায় হয়নি। পুনঃতপশিল বা অবলোপন বা সুদ মওকুফের কারণে কমেছে। খেলাপি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আরও কঠোর হতে হবে। খেলাপি কমাতে না পারলে সেসব ব্যাংকের শাখা বন্ধের নির্দেশ দিতে হবে। সূত্র : কালবেলা

হককথা/নাছরিন