নিউইয়র্ক ১২:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মন্ত্রীদের হুঙ্কারেও কমেনি চালের দাম

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৬৬ বার পঠিত

চালের দোকান। ফাইল ছবি

হককথা ডেস্ক : নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর বাজারে চালের দাম কেজিতে চার থেকে ছয় টাকা বেড়েছে। এরপর ১৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের চার দিনের মধ্যে চালের দাম কমিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সেই সময় পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে বাজারে অভিযানও চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। তবু রাজধানীর চালের বাজারে এর বড় কোনো প্রভাব পড়েনি।

ঢাকার বাজারে মোটা চাল (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫৪-৫৫ টাকায়। মাঝারি মানের চালের (পাইজাম ও বিআর ২৮) কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা। আর মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৬৮ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, হাতিরপুল, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা যায়, বছরের শুরুতে ঢাকার বাজারে চালের দাম যতটা বেড়েছে, এখনো তা ততটা কমেনি। প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা কিছু সরু চালের দাম আরও বেশি। বাজার ও বিক্রেতাভেদে দরদাম করে নিলে মোটা ও সরু চালের দাম কেজিতে কোথাও কোথাও এক টাকা কম রাখা হচ্ছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের পরপরই চালের দাম হুট করেই বস্তাপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার পর খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশে মজুদবিরোধী অভিযান শুরু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। নিয়মিত অভিযানের কারণে পাইকারি পর্যায়ে কিছুটা দাম কমতে শুরু করেছে। বিক্রেতারা বলছেন, বস্তায় ৩০০ টাকা বাড়লেও অভিযানের কারণে কমেছে প্রায় ১০০ টাকা। চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে খাদ্য মন্ত্রণালয় একাধিক দিন অভিযান চালায়। কিন্তু অভিযানের খবর পেয়েই দোকান ছেড়ে পালিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। পরে অভিযান শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই দোকানে ফিরে স্বাভাবিক ব্যবসা চালিয়ে যান তারা। রাজধানীর বাড্ডার খুচরা ব্যবসায়ী শহিদুল হক বলেন, পাইকারিতে বস্তায় প্রায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ার পর অভিযানের কারণে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মতো কমেছে। খুবই সামান্য কমার কারণে এখনো খুচরায় কমানো যায়নি।

জেলা পর্যায়ে কমেছে নামে মাত্র ঢাকার বাইরে দেশের চাল উৎপাদনের জেলা হিসেবে খ্যাত দিনাজপুর, বগুড়া, নওগাঁ ও কুষ্টিয়ায় চালের দাম পাইকারি বাজারে কেজিতে ১ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কোথাও দাম কমেছে ১ থেকে ২ টাকা, কোথাও ২ থেকে ৩ টাকা। এ দাম কমার পরও তা আগের অবস্থায় ফেরেনি। গত ২৩ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায় পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৬৪ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল ৬৬ টাকা। আর মোটা চাল ২ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি। এ ছাড়া কুষ্টিয়ার মোকামে জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সরু চালের দাম কার্যকর হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি মোকামে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৬২ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে বগুড়ায় আগের কম দামে চাল বিক্রি না হওয়ায় ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ভোক্তা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের চালের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বাজারে চালের দাম বেশি নিলে ব্যবসায়ী ও চাল নিয়ে গুজবকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে মিনিকেট চাল (জিরা) মিলে ৬২ টাকা, পাইকারি ৬৩ টাকা ও খুচরা ৬৪-৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। আটাশ (মাঝারি) মিলে ৫২, পাইকারি ৫৩ ও খুচরা ৫৪-৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। স্বর্ণা-৫ মিলে ৪৬, পাইকারি ৪৭ ও খুচরা ৪৮-৪৯ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। চিনিগুঁড়া (খোলা) ভোক্তা পর্যায়ে ১১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যারা ধান ও চালের কোনো সংকট সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজব রটিয়ে সরকারকে কোনোভাবেই বিব্রত করা যাবে না। আর যারা এই সিদ্ধান্ত না মানবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি বগুড়ার সভাপতি এটিএম আমিনুল ইসলাম বলেন, চালের দাম মিল, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ধানের দাম বাড়লে তখন এই দামে চাল বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়বে।

দিনাজপুরেও অভিযানের পর নামমাত্র চালের দাম কমেছে, ধানের দামে ঘটেছে বড় দরপতন। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষক তোফায়েল আহম্মেদ জুয়েল ও মো. কালু জানান, ধান মাড়াই করে পাইকারকে খবর দিলে তিনি আগে যে দাম বলেছিলেন তার থেকে বস্তাপ্রতি ৩৫০ টাকা কম দিয়েছেন। মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা করেই ধান কিনছেন না। অভিযান শুরুর আগে বিআর-৫১ জাতের ধান প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) দুই হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা দুই হাজার ২০০ টাকা। বিআর-৯০ জাতের ধান তিন হাজার ৮০০ টাকা থেকে নেমে তিন হাজার ৪০০ টাকা, স্বর্ণা-৫ জাতের ধান দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে নেমে দুই হাজার ২০০ টাকা হয়েছে।

দাম বাড়লেও সুফল পাচ্ছে না কৃষক
শেরপুর জেলায় অভিযান শুরুর পর চলের দাম কেজিপ্রতি দেড় থেকে দুই টাকা করে কমলেও অভিযানের আগে বেড়েছিল পাঁচ-ছয় টাকা করে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালকল মালিকরা চালের দাম যখন বাড়ান, তখন বেশি দামে কিনে বেশি দরেই বিক্রি করতে হয়। পক্ষান্তরে চালকল মালিকরা বলছেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম থাকায় ধানের দাম বেড়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার বারোমারি এলাকার কৃষক সুরুজ্জামান বলেন, ‘চালের দাম বাড়লেও কৃষকরা কিন্তু তার সুফল পাচ্ছে না। দালাল, ফড়িয়া, ব্যবসায়ী, চালকল মালিকরাই লাভবান হয়ে থাকেন।’

নওগাঁ পৌর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, প্রশাসনের মজুদবিরোধী অভিযানে কেজিপ্রতি সব ধরনের চালের দাম এক টাকা করে কমেছে। এতে পাইকারিভাবে আমরা বস্তায় প্রকারভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা আগের চেয়ে কম দামে কিনছি। নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তানভীর রহমান জানান, অবৈধ ধান-চাল মজুদবিরোধী অভিযান চলমান আছে। যেখানেই অবৈধভাবে ধান-চাল মজুদ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট খাদ্য বিপণন আইনের ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মন্ত্রীদের হুঙ্কারেও কমেনি চালের দাম

প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

হককথা ডেস্ক : নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর বাজারে চালের দাম কেজিতে চার থেকে ছয় টাকা বেড়েছে। এরপর ১৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের চার দিনের মধ্যে চালের দাম কমিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সেই সময় পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে বাজারে অভিযানও চালাচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। তবু রাজধানীর চালের বাজারে এর বড় কোনো প্রভাব পড়েনি।

ঢাকার বাজারে মোটা চাল (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫৪-৫৫ টাকায়। মাঝারি মানের চালের (পাইজাম ও বিআর ২৮) কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকা। আর মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৬৮ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, হাতিরপুল, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা যায়, বছরের শুরুতে ঢাকার বাজারে চালের দাম যতটা বেড়েছে, এখনো তা ততটা কমেনি। প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা কিছু সরু চালের দাম আরও বেশি। বাজার ও বিক্রেতাভেদে দরদাম করে নিলে মোটা ও সরু চালের দাম কেজিতে কোথাও কোথাও এক টাকা কম রাখা হচ্ছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের পরপরই চালের দাম হুট করেই বস্তাপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার পর খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সারা দেশে মজুদবিরোধী অভিযান শুরু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। নিয়মিত অভিযানের কারণে পাইকারি পর্যায়ে কিছুটা দাম কমতে শুরু করেছে। বিক্রেতারা বলছেন, বস্তায় ৩০০ টাকা বাড়লেও অভিযানের কারণে কমেছে প্রায় ১০০ টাকা। চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে খাদ্য মন্ত্রণালয় একাধিক দিন অভিযান চালায়। কিন্তু অভিযানের খবর পেয়েই দোকান ছেড়ে পালিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। পরে অভিযান শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই দোকানে ফিরে স্বাভাবিক ব্যবসা চালিয়ে যান তারা। রাজধানীর বাড্ডার খুচরা ব্যবসায়ী শহিদুল হক বলেন, পাইকারিতে বস্তায় প্রায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ার পর অভিযানের কারণে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মতো কমেছে। খুবই সামান্য কমার কারণে এখনো খুচরায় কমানো যায়নি।

জেলা পর্যায়ে কমেছে নামে মাত্র ঢাকার বাইরে দেশের চাল উৎপাদনের জেলা হিসেবে খ্যাত দিনাজপুর, বগুড়া, নওগাঁ ও কুষ্টিয়ায় চালের দাম পাইকারি বাজারে কেজিতে ১ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কোথাও দাম কমেছে ১ থেকে ২ টাকা, কোথাও ২ থেকে ৩ টাকা। এ দাম কমার পরও তা আগের অবস্থায় ফেরেনি। গত ২৩ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায় পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৬৪ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল ৬৬ টাকা। আর মোটা চাল ২ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি। এ ছাড়া কুষ্টিয়ার মোকামে জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সরু চালের দাম কার্যকর হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারি মোকামে প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৬২ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে বগুড়ায় আগের কম দামে চাল বিক্রি না হওয়ায় ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ভোক্তা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের চালের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বাজারে চালের দাম বেশি নিলে ব্যবসায়ী ও চাল নিয়ে গুজবকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে মিনিকেট চাল (জিরা) মিলে ৬২ টাকা, পাইকারি ৬৩ টাকা ও খুচরা ৬৪-৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। আটাশ (মাঝারি) মিলে ৫২, পাইকারি ৫৩ ও খুচরা ৫৪-৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। স্বর্ণা-৫ মিলে ৪৬, পাইকারি ৪৭ ও খুচরা ৪৮-৪৯ টাকা কেজিতে বিক্রি হবে। চিনিগুঁড়া (খোলা) ভোক্তা পর্যায়ে ১১৫ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যারা ধান ও চালের কোনো সংকট সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজব রটিয়ে সরকারকে কোনোভাবেই বিব্রত করা যাবে না। আর যারা এই সিদ্ধান্ত না মানবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি বগুড়ার সভাপতি এটিএম আমিনুল ইসলাম বলেন, চালের দাম মিল, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ধানের দাম বাড়লে তখন এই দামে চাল বিক্রি করা কঠিন হয়ে পড়বে।

দিনাজপুরেও অভিযানের পর নামমাত্র চালের দাম কমেছে, ধানের দামে ঘটেছে বড় দরপতন। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষক তোফায়েল আহম্মেদ জুয়েল ও মো. কালু জানান, ধান মাড়াই করে পাইকারকে খবর দিলে তিনি আগে যে দাম বলেছিলেন তার থেকে বস্তাপ্রতি ৩৫০ টাকা কম দিয়েছেন। মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা করেই ধান কিনছেন না। অভিযান শুরুর আগে বিআর-৫১ জাতের ধান প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) দুই হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা দুই হাজার ২০০ টাকা। বিআর-৯০ জাতের ধান তিন হাজার ৮০০ টাকা থেকে নেমে তিন হাজার ৪০০ টাকা, স্বর্ণা-৫ জাতের ধান দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে নেমে দুই হাজার ২০০ টাকা হয়েছে।

দাম বাড়লেও সুফল পাচ্ছে না কৃষক
শেরপুর জেলায় অভিযান শুরুর পর চলের দাম কেজিপ্রতি দেড় থেকে দুই টাকা করে কমলেও অভিযানের আগে বেড়েছিল পাঁচ-ছয় টাকা করে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালকল মালিকরা চালের দাম যখন বাড়ান, তখন বেশি দামে কিনে বেশি দরেই বিক্রি করতে হয়। পক্ষান্তরে চালকল মালিকরা বলছেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম থাকায় ধানের দাম বেড়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার বারোমারি এলাকার কৃষক সুরুজ্জামান বলেন, ‘চালের দাম বাড়লেও কৃষকরা কিন্তু তার সুফল পাচ্ছে না। দালাল, ফড়িয়া, ব্যবসায়ী, চালকল মালিকরাই লাভবান হয়ে থাকেন।’

নওগাঁ পৌর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, প্রশাসনের মজুদবিরোধী অভিযানে কেজিপ্রতি সব ধরনের চালের দাম এক টাকা করে কমেছে। এতে পাইকারিভাবে আমরা বস্তায় প্রকারভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা আগের চেয়ে কম দামে কিনছি। নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তানভীর রহমান জানান, অবৈধ ধান-চাল মজুদবিরোধী অভিযান চলমান আছে। যেখানেই অবৈধভাবে ধান-চাল মজুদ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট খাদ্য বিপণন আইনের ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

হককথা/নাছরিন