নিউইয়র্ক ০৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১১:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪
  • / ৯৪ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। চীনের বাজারে জ্বালানিটির চাহিদা প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে আসার বিষয়টি এ দাম কমার পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। খবর রয়টার্স।

আইসিই ফিউচারস ইউরোপে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২ শতাংশ বা ১২ সেন্ট কমেছে। প্রতি ব্যারেল গতকাল তা কেনাবেচা হচ্ছিল ৮১ ডলার ৯৬ সেন্টে। অন্যদিকে আমেরিকার বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ২১ সেন্ট বা দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেল কেনাবেচা হয়েছে ৭৭ ডলার ৮০ সেন্টে।

উভয় বাজার আদর্শ জ্বালানি তেলের দর গত সপ্তাহে কমেছে। ব্রেন্ট ১ দশমিক ৮ ও ডব্লিউটিআই ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।

আগামী বছরগুলোয় চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে আসবে বলে আগেই জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্র মালিকানাধীন জ্বালানি তেল ও গ্যাস করপোরেশন সিএনপিসি। বিশ্বের শীর্ষ ব্যবহারকারী হওয়ায় চীনের চাহিদা কমার বিষয়টি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারকে নিম্নমুখী চাপের মুখে ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।

চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের গবেষণা ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আগামী বছরগুলোয় গাড়ি শিল্পে পেট্রল-ডিজেলচালিত গাড়ির বাজার অনেকটাই দখলে নেবে বিদ্যুচ্চালিত বাহন। ফলে এ খাতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ব্যাপক মাত্রায় কমতে পারে। পাশাপাশি পরিবহন খাতে জ্বালানি তেলের বদলে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ব্যবহার বৃদ্ধিও চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সিএনপিসির ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনোলজি রিসার্চের প্রেসিডেন্ট লু রুকওয়ান বলেন, ‘বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি বিক্রি এবং এলএনজি-চালিত ট্রাকের ব্যবহার চীনে ডিজেল ও গ্যাসোলিনের চাহিদা ১০-১২ শতাংশ কমাতে পারে। মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে। তবে এ প্রবৃদ্ধির গতি থাকবে মন্থর।’

নিশান সিকিউরিটিজের একটি ইউনিট এনএস ট্রেডিংয়ের প্রেসিডেন্ট হিরোইউকি কিকুকাওয়া বলেন, ‘‌চীনে চাহিদা দুর্বল হয়ে ওঠার বিষয়টি এখন বাজারে ওপেক প্লাসের সরবরাহ হ্রাসের চেয়েও বড় খবর হয়ে উঠেছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থানের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মিশ্র প্রবণতার খবরেও অনেক ব্যবসায়ী বাজার সংশোধনে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন। তবে পণ্যটির বাজারদরের এ নিম্নমুখিতায় লাগাম টেনে ধরতে পারে ভূরাজনীতির বর্ধিত ঝুঁকি। এরই মধ্যে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে না পৌঁছা এবং সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত আরো বড় হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

গত সপ্তাহের তথ্যে দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির বাজার প্রসারিত হয়েছে। তবে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি ও মজুরি বাড়ায় ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার অপরিবর্তিত রেখেছে। এদিকে গত সপ্তাহে চীন ২০২৪ সালে প্রায় ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য, যা অর্জন করা সহজ হবে না।

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে। তবে আগের মাসের তুলনায় আমদানির পরিমাণ কম ছিল। এতে বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশটির স্বল্প ক্রয়প্রবণতা অব্যাহত।

বিশ্লেষকরা জানান, চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়লে বৈশ্বিক চাহিদাও কমতে পারে। ফলে জ্বালানিটির দাম নিম্নমুখী চাপে পড়বে। এ পরিস্থিতি দেখা দিলে ওপেক প্লাস উত্তোলন আরো কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এরই আগে আগামী দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে জোটটির সদস্যরা। চলতি মাসের শুরুর দিকেই এমন সিদ্ধান্ত জানায় ওপেক প্লাস।

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী

প্রকাশের সময় : ০৬:১১:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। চীনের বাজারে জ্বালানিটির চাহিদা প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে আসার বিষয়টি এ দাম কমার পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। খবর রয়টার্স।

আইসিই ফিউচারস ইউরোপে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২ শতাংশ বা ১২ সেন্ট কমেছে। প্রতি ব্যারেল গতকাল তা কেনাবেচা হচ্ছিল ৮১ ডলার ৯৬ সেন্টে। অন্যদিকে আমেরিকার বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ২১ সেন্ট বা দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেল কেনাবেচা হয়েছে ৭৭ ডলার ৮০ সেন্টে।

উভয় বাজার আদর্শ জ্বালানি তেলের দর গত সপ্তাহে কমেছে। ব্রেন্ট ১ দশমিক ৮ ও ডব্লিউটিআই ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।

আগামী বছরগুলোয় চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে আসবে বলে আগেই জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্র মালিকানাধীন জ্বালানি তেল ও গ্যাস করপোরেশন সিএনপিসি। বিশ্বের শীর্ষ ব্যবহারকারী হওয়ায় চীনের চাহিদা কমার বিষয়টি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারকে নিম্নমুখী চাপের মুখে ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।

চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের গবেষণা ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আগামী বছরগুলোয় গাড়ি শিল্পে পেট্রল-ডিজেলচালিত গাড়ির বাজার অনেকটাই দখলে নেবে বিদ্যুচ্চালিত বাহন। ফলে এ খাতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ব্যাপক মাত্রায় কমতে পারে। পাশাপাশি পরিবহন খাতে জ্বালানি তেলের বদলে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ব্যবহার বৃদ্ধিও চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সিএনপিসির ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনোলজি রিসার্চের প্রেসিডেন্ট লু রুকওয়ান বলেন, ‘বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি বিক্রি এবং এলএনজি-চালিত ট্রাকের ব্যবহার চীনে ডিজেল ও গ্যাসোলিনের চাহিদা ১০-১২ শতাংশ কমাতে পারে। মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে। তবে এ প্রবৃদ্ধির গতি থাকবে মন্থর।’

নিশান সিকিউরিটিজের একটি ইউনিট এনএস ট্রেডিংয়ের প্রেসিডেন্ট হিরোইউকি কিকুকাওয়া বলেন, ‘‌চীনে চাহিদা দুর্বল হয়ে ওঠার বিষয়টি এখন বাজারে ওপেক প্লাসের সরবরাহ হ্রাসের চেয়েও বড় খবর হয়ে উঠেছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থানের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মিশ্র প্রবণতার খবরেও অনেক ব্যবসায়ী বাজার সংশোধনে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন। তবে পণ্যটির বাজারদরের এ নিম্নমুখিতায় লাগাম টেনে ধরতে পারে ভূরাজনীতির বর্ধিত ঝুঁকি। এরই মধ্যে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে না পৌঁছা এবং সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত আরো বড় হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’

গত সপ্তাহের তথ্যে দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির বাজার প্রসারিত হয়েছে। তবে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি ও মজুরি বাড়ায় ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার অপরিবর্তিত রেখেছে। এদিকে গত সপ্তাহে চীন ২০২৪ সালে প্রায় ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করার ঘোষণা দিয়েছে। যদিও অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি একটি উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য, যা অর্জন করা সহজ হবে না।

সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে। তবে আগের মাসের তুলনায় আমদানির পরিমাণ কম ছিল। এতে বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশটির স্বল্প ক্রয়প্রবণতা অব্যাহত।

বিশ্লেষকরা জানান, চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়লে বৈশ্বিক চাহিদাও কমতে পারে। ফলে জ্বালানিটির দাম নিম্নমুখী চাপে পড়বে। এ পরিস্থিতি দেখা দিলে ওপেক প্লাস উত্তোলন আরো কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এরই আগে আগামী দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে জোটটির সদস্যরা। চলতি মাসের শুরুর দিকেই এমন সিদ্ধান্ত জানায় ওপেক প্লাস।

হককথা/নাছরিন