খেজুরে ১০ শতাংশ শুল্ক ছাড়েও কমছে না দাম
- প্রকাশের সময় : ০৮:১৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
- / ৮১ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : সরকার খেজুরে শুল্ক ছাড় দিয়েছে ১০ শতাংশ। এতে এখন ২৫ শতাংশের বদলে শুল্ক দিতে হচ্ছে ১৫ শতাংশ। শুল্ক কমানোর পর ৯টি দেশ থেকে আমদানি করা খেজুর খালাস করছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ এত দিন এসব খেজুর চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে ছিল।
গত ১৫ দিনে সবচেয়ে বেশি খেজুর বন্দর থেকে খালাস নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আগে বন্দর থেকে খেজুরভর্তি ছয় কনটেইনার খালাস হলে এখন সেটা ৭০ কনটেইনারে গিয়ে টেকেছে। ভোক্তাদের প্রশ্ন, এত খেজুর বন্দর থেকে খালাস হচ্ছে, দাম কি কমবে? ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বেশি শুল্কে পণ্য খালাস করলে বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া ও লোকসানের শঙ্কা থাকে। তাই কয়েক মাস আগে আমদানি হলেও শুল্ক কমানোর আশায় এত দিন খালাস করেননি আমদানিকারকরা।
তাই সরকার ১০ শতাংশ শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেওয়ায় শেষ মুহূর্তে এসে বন্দরে খালাস করার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। শুল্ক কমানোর পরও ভোক্তারা কম দামে খেজুর কিনতে পারছেন না। শুল্ক কমানোর পর পর্যাপ্ত আমদানি হলেও দাম কেন কমছে না বিষয়টি তদারকি করতে হবে। এখন তদারকি না করলে রোজায় খেজুর কেনার কথা ভাবতেও পারবেন না ভোক্তারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (১৪৫ দিন) দেশে দুই কোটি ২৬ লাখ ৬২ হাজার ৯৬৪ কেজি বা ২২ হাজার ৬৬৩ টন খেজুর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস করে বাজারে সরবরাহ করেছেন আমদানিকারকরা। ১৪৫ দিনের মধ্যে গত ১৫ দিনেই বেশি খেজুরের চালান খালাস হয়েছে। ২৮ ধরনের খেজুর দেশের ৮২টি প্রতিষ্ঠান সৌদিয়া আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্দান, মিসর, আলজেরিয়া, নামিবিয়া, তিউনিশিয়া ও আফগানিস্তান থেকে আমদানি করেছে।
জানা গেছে, চার মাস আগে খেজুর আমদানি করলেও শুল্ক কমবে এ আশায় ব্যবসায়ীরা পণ্যটি চট্টগ্রাম বন্দরে গুদাম করে রেখেছিলেন। ফলে বেসরকারি ১৯টি ডিপোতে এক হাজার কনটেইনার (প্রতি কনটেইনারে ২২-২৪ হাজার কেজি খেজুর থাকে) খেজুর পড়ে ছিল।
এখন খেজুরভর্তি ৬০৫টি কনটেইনার খালাস চলছে। এখনো খেজুরভর্তি ৩৯৫টি কনটেইনার খালাসের উদ্যোগ নেয়নি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সুলতান আরেফিন বলেন, শুল্ক ছাড়ের পর থেকে আমদানিকারকরা খেজুর খালাস করছেন। এত দিন তাঁরা খেজুর খালাস নেননি। আগে প্রতিদিন গড়ে খেজুরভর্তি ছয় কনটেইনার খালাস হলে এখন সেটা ৭০ কনটেইনারে গিয়ে টেকেছে। এক সঙ্গে সবাই খেজুর খালাস করতে গিয়ে সময় লাগছে বেশি।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি ৪০ কনটেইনার দামি খেজুর আমদানি করেছেন। এসব খেজুর বন্দর থেকে খালাস করতে শুল্ক পরিশোধ করতে হয়েছে সাড়ে আট কোটি টাকা। এবার কার্টনভেদে শুল্ক দিতে হচ্ছে ১৪০-২০৮ টাকা; যা গত বছর ছিল ১০.৫৮ টাকা। এবার সময়ও লাগছে বেশি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার কাজী ইরাজ ইশতিয়াক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খেজুরের চারটি ক্যাটাগরি রয়েছে। আর ক্যাটাগরিভিত্তিক বিভিন্ন শুল্কহার হয়। ফলে অনেক সময় প্রবণতা থাকে যে উচ্চ শুল্কহারে খেজুর এনে কম শুল্কহারে ঘোষণা দেওয়ার। আমরা এমন বেশ কিছু ঘটনাও পেয়েছি। এ জন্য আমরাও সতর্ক আছি, যেন সরকার রাজস্ব বঞ্চিত না হয়।’
তবে সরকার শুল্ক কমালেও তার কোনো প্রভাব বাজারে পড়েনি। এখনো আগের দামেই খেজুর বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে নিম্নমানের জাহেদি খেজুর প্রতি কেজি ২১০-২৫৫ টাকা, মরিয়ম, আজওয়া ও মাবরুম এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। সূত্র : কালের কণ্ঠ
হককথা/নাছরিন