সর্বোচ্চ ঋণ মোচনের অর্থবছর ২০২৪-২৫

- প্রকাশের সময় : ০৫:১৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৯১ বার পঠিত
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ক্রমেই বড় হয়েছে সরকারের ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক হিসাবে উঠে এসেছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধ বাবদ সবচেয়ে বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে সরকারকে। এমনকি এ ব্যয় এবার রাজস্ব আহরণকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মিশনের প্রতিনিধিরাও। পর্যাপ্ত রাজস্ব আয়ের সংস্থান করতে না পারলেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে প্রতি বছরই বড় হয়েছে বাজেটের আকার। এর সঙ্গে সঙ্গে বড় হয়েছে বাজেটের ঘাটতি। এ ঘাটতি পূরণে স্থানীয় ও বিদেশী উৎস থেকে নেয়া ঋণের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। বেড়েছে ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয়ের পরিমাণও, যা এবারই সর্বোচ্চ পর্যায়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকারকে স্থানীয় ও বিদেশী মিলিয়ে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এর সঙ্গে ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। যদিও অর্থবছর শেষে সুদ ব্যয়ের পরিমাণ আরো বেশি হবে। সেজন্য এ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। ফলে চলতি অর্থবছর শেষে আসল ও সুদ মিলিয়ে সরকারের ঋণ পরিশোধ ৪ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে। সরকারি ঋণের বড় অংশই নেয়া হয়েছে ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে স্থানীয় উৎস থেকে। ট্রেজারি বিলের বাইরে সরকারের নেয়া ঋণের উল্লেখযোগ্য একটি অংশের সুদহার নির্ধারিত। এর বাইরে অল্প কিছু পরিমাণ ঋণের সুদহার পরিবর্তনশীল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরে সরকারে ঋণ পরিশোধ সর্বোচ্চ হবে। এর পরের অর্থবছরগুলোয় ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকলেও তা ২০২৮-২৯ অর্থবছর পর্যন্ত তুলনামূলক বেশি থাকবে। এর মধ্যে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি, ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি এবং ২০২৮-২৯ অর্থবছরে দেড় লাখ কোটি টাকারও বেশি ঋণ শোধ করতে হবে সরকারকে। এর সঙ্গে যোগ হবে ঋণের সুদও।
ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধসহ সার্বিক পরিচালন ব্যয় মেটাতে সরকারকে রাজস্ব আহরণের ওপর নির্ভর করতে হয়। অন্যদিকে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া অনুদান ও ঋণের অর্থে বাস্তবায়িত হয় উন্নয়ন ব্যয়ের বড় অংশ। তবে প্রতি বছরই কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে রাজস্ব আহরণে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। যদিও কখনই বাজেটে ঘোষিত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারে না সরকার। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত আলোচ্য অর্থবছরে ৪ লাখ ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৫ লাখ ৪১ হাজার ২ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে। তবে সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিস্থিতির কারণে এবার রাজস্ব আহরণে সরকারকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
ঋণ ও ঋণের সুদ বাবদ এবারই সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানালেও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করছেন, সামনের দিনগুলোয় অর্থ পরিশোধের চাপ আরো বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনা করা হলে চলতি অর্থবছরের সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়বে। কিন্তু আজকের তুলনায় আগামীতে এটি আরো বড় হবে। অন্তত আগামী তিন বছর ১ বিলিয়ন ডলার করে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়বে। ডেট সাসটেইনেবিলিটির যে হিসাব করা হয়, সেখানে সূচক ও তথ্যের সমস্যা রয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ডেট সাসটেইনেবিলিটি ইনডেক্সকে আরো গভীরভাবে দেখা উচিত। জিডিপি কিংবা রাজস্ব আয়ের হিসাবে আমাদের দায় পরিমাপ করাটা প্রয়োজন, কিন্তু যথেষ্ট নয়। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রায় দায়-দেনা পরিশোধের সক্ষমতাও মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। সে মূল্যায়ন এখনো হয়নি। দায়-দেনা বৃদ্ধির যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেটি আগামী কয়েক বছর অবধারিতভাবে থাকবে। শ্বেতপত্রে আমরা বলেছি যে সরকারের দায়-দেনা পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়নের জন্য ঋণদাতাদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।’
ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থছাড়ের আগে ৩ ডিসেম্বর দেশে আইএমএফের একটি মিশন আসে। গতকালই এ মিশন শেষ হয়েছে। মিশনটির কর্মকর্তারা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে আইএমএফের পক্ষ থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ের তুলনায় ঋণ পরিশোধে বেশি অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিষয়টিতে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন আইএমএফ প্রতিনিধিরা। এক্ষেত্রে সংস্থাটির পক্ষ থেকে চলতি অর্থবছরে ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজস্ব নীতি ও প্রশাসনকে পৃথক করতেও বলা হয়েছে।সংস্থাটির মিশন শেষে দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও সরকারের ঋণ পরিশোধ ও রাজস্ব আহরণের বিষয়ে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আইএমএফের বক্তব্য হলো বিদেশী অর্থায়নে উদ্ভূত ঘাটতি এবং জেঁকে বসা মূল্যস্ফীতির সমস্যাগুলো মোকাবেলার জন্য কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ করা অতি জরুরি। আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য রাজস্বসংক্রান্ত বাড়তি পদক্ষেপ যেমন করছাড় তুলে নেয়া এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সীমিত করাও প্রয়োজন। মুদ্রানীতির কঠোরতা, বিনিময় হারে আরো নমনীয়তা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষিত রাখা অর্থনীতির স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত অত্যন্ত কম উল্লেখ করে আইএমএফ বলছে, এজন্য জরুরি কর সংস্কার প্রয়োজন; যাতে একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় এবং রাজস্ব স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি করছাড় যৌক্তিকীকরণ, আইন পরিপালনে উন্নতি এবং কর নীতি ও প্রশাসন আলাদা করার ওপর জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে, একটি সমন্বিত কৌশল প্রয়োজন যাতে ভর্তুকির খরচ কমানো যায় এবং বিদ্যুৎ ও সার খাতে পুঞ্জীভূত হয়ে পড়া বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি সমাধান করা যায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের ঋণের স্থিতি ছিল ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যা পরের অর্থবছরে (২০২২-২৩) বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ লাখ ৬০ হাজার ১০০ কোটি টাকায়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ঋণের স্থিতি ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দাঁড়ানোর কথা জানানো হয়েছিল। তবে সর্বশেষ হিসাবে তা ১৯ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সরকারের প্রক্ষেপণ অনুসারে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঋণের স্থিতি ২১ লাখ ৬২ হাজার ৪০০ কোটি টাকায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২৪ লাখ ৪৫ হাজার ১০০ কোটি এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে সরকারের ঋণ স্থিতি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে।
ঋণের সুদ বাবদ সরকারের ব্যয়ের বোঝা ক্রমেই স্ফীত হয়ে উঠছে। এক সময় সরকারের পরিচালন ব্যয়ের ৩০ শতাংশেরও কম অর্থ ব্যয় হতো ঋণের সুদ পরিশোধে। কিন্তু চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পরিচালন ব্যয়ের অর্ধেকের বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে এ খাতে। গত কয়েক অর্থবছরে সরকারের পরিচালন ও সুদ ব্যয়ের পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, এর আগে কখনই এ বাবদ এত বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়নি। সুদ বাবদ সরকারের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ দেশে ট্রেজারি বিল বন্ডের সুদের হার বেড়ে যাওয়া এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। দেশের ব্যাংক খাতে তারল্য সংকটের প্রভাবে তিন বছর ধরেই ঋণের সুদহারের পাশাপাশি ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার বাড়ছে।ট্রেজারি বিলের মতোই সুদহার চার-পাঁচ গুণ বেড়েছে ট্রেজারি বন্ডের। এ অবস্থার মধ্যেও নগদ অর্থের সংকটের কারণে সরকারকে বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও সারে ভর্তুকির বকেয়া অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা এ দুই খাতের ভর্তুকি পরিশোধের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সরকার এখন ঋণের দুষ্টচক্রে আটকে গেছে। গত বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দিয়েছিল। এখন সেটি বন্ধ হওয়ায় ট্রেজারি বিলের সুদহার এতটা উচ্চতায় উঠে গেছে। উচ্চ সুদের এ ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে সরকারের অর্থ সংকট আরো তীব্র হবে। তখন আরো বেশি সুদে ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনা দেশের ঋণ কম রয়েছে বলে আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই। বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ অত্যন্ত কম। আর এ আয়ের পুরোটাই চলে যাচ্ছে সরকারের ঋণ পরিশোধ ও পরিচালন ব্যয়ের পেছনে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সার্বিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা যাচ্ছে। তার ওপর বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে কর ও শুল্ক ছাড় দিচ্ছে সরকার। এতে করে আমদানি খাতে সরকারের রাজস্ব আহরণ আরো কমতে পারে। এ অবস্থায় রাজস্ব আয় বাড়াতে না পারলে সামনের দিনগুলোয় সরকারের ঋণচাপ আরো তীব্র হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, ‘জিডিপির সঙ্গে তুলনা করা হলে আমাদের ঋণের পরিমাণ অন্য অনেক দেশের তুলনায় কম এবং সে হিসাবে এটি ততটা বিপজ্জনক নয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের রাজস্ব আয় অনেক কম। এর সিংহভাগ চলে যাচ্ছে ঋণ পরিশোধে। অন্যদিকে সরকারের পরিচালন ব্যয়ও বাড়ছে। এসব ব্যয় করার পর উন্নয়ন খাতে ব্যয় করার জন্য সরকারের কাছে পর্যাপ্ত তহবিল থাকে না। রাজস্ব আয় না বাড়াতে পারলে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি বিরাট বোঝা হিসেবে আমাদের অর্থনীতির কর্মকাণ্ডকে সীমিত করে ফেলছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে জিডিপির অনুপাতে কম অর্থ ব্যয় করছি। এটি আরো বেশি হওয়া উচিত। আমাদের উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যকীয় যেসব ব্যয় করা প্রয়োজন, তার কাছাকাছিও আমরা যেতে পারছি না। আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত অন্যতম সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। যেহেতু আমাদের সরকারের আয় কম, সেহেতু আমরা প্রয়োজনীয় ব্যয় করতে পারছি না। এতে আমরা সরকারের নিম্ন আয়ের ফাঁদের মধ্যে পড়ে গেছি। সব মিলিয়ে এটি এখন আমাদের জন্য বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর সমাধান খুঁজতে হবে সরকারের আয় বাড়ানোর মাধ্যমে। আয় কীভাবে বাড়ানো যায়, সেটি সবাই জানি। কিন্তু আমরা সেটি করছি না বা করতে পারছি না। এক্ষেত্রে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন, যাতে সরকারের আয় বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। এগুলোকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে আমরা ঋণের সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পাব।’ সূত্র : বণিক বার্তা।