নিউইয়র্ক ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834
শেলের পূর্বাভাস

২০৪০ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী এলএনজির চাহিদা বাড়তে পারে ৬০ শতাংশ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:০০:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
  • / ৯৬ বার পঠিত

বিশ্বব্যাপী তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা ২০৪০ সালের মধ্যে ৬০ শতাংশ বাড়তে পারে। চাহিদা বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখবে এশিয়ার দেশগুলোর দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং শিল্প খাতকে কার্বনমুক্ত করার উদ্যোগ হিসেবে এলএনজির ব্যবহার বৃদ্ধি। ব্রিটিশ বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি শেলের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস উঠে আসে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

শেলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৪০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক এলএনজির চাহিদা পৌঁছতে পারে ৬৩ কোটি থেকে ৭১ কোটি ৮০ লাখ টনে। গত বছর জ্বালানি পণ্যটির মোট চাহিদা ছিল ৪০ কোটি ৭০ লাখ টন। এর আগে দেয়া পূর্বাভাসে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এলএনজির চাহিদা পৌঁছতে পারে ৬২ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৬৮ কোটি ৫০ লাখ টনে। কোম্পানিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের পূর্বাভাসের তুলনায় এ হার ১০ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। এছাড়া এটি ভারত ও চীনের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার প্রতিফলন।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ আছে, এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ভারী শিল্প ও পরিবহন খাতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা এবং জ্বালানিনির্ভর প্রযুক্তি খাতের উদীয়মান প্রবৃদ্ধির কারণে ২০৪০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক এলএনজি বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি কোম্পানিটি জানায়, ২০৩০ সালের মধ্যে বাড়তি চাহিদা মেটাতে বাজারে ১৭ কোটি টনেরও বেশি নতুন এলএনজির সরবরাহ আসবে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। যদিও দেশটিতে নতুন এলএনজি প্রকল্পগুলো নিয়ন্ত্রণ অনিশ্চয়তা ও নির্মাণ ব্যয়ের ঝুঁকির মুখে রয়েছে। উল্লেখ্য, শেল প্রতি বছর প্রায় ছয় কোটি টন এলএনজি সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের পূর্বাভাস গঠনে উড ম্যাকেঞ্জি ও এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসের মতো বিভিন্ন জ্বালানি বিশ্লেষকের কাছ থেকে ডাটা সংগ্রহ করে।

শেল জানায়, বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি আমদানিকারক চীন তার আমদানি ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি ১৫ কোটি মানুষকে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ দেবে। অন্যদিকে ভারত আগামী পাঁচ বছরে তিন কোটি মানুষকে সংযোগ দিতে অবকাঠামো উন্নত করছে। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ইউরোপ ২০৩০-এর দশক পর্যন্ত এলএনজির ওপর নির্ভর করবে। কারণ এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়লেও বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এলএনজি বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে। শেলের এলএনজি বিভাগের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সেডেরিক ক্রেমার্স বলেন, ‘নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হলে প্রাকৃতিক গ্যাস গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং এটি ব্যাটারির তুলনায় বেশি সাশ্রয়ী। এ কারণেই বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউরোপে এলএনজির চাহিদা ২০৩০-এর দশক পর্যন্ত ধীরে ধীরে বাড়বে।’

জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ জ্বালানি সংকটের সময় এলএনজি আমদানির জন্য ব্যাপকভাবে অবকাঠামোয় বিনিয়োগ করেছে। শেল জানিয়েছে, এ স্থাপনাগুলো ভবিষ্যতে বায়ো-এলএনজি, সিন্থেটিক এলএনজি বা গ্রিন হাইড্রোজেন আমদানির জন্য পুনর্গঠন করা যেতে পারে। শেলসহ অন্যান্য জ্বালানি কোম্পানি প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজিকে কয়লার তুলনায় পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে উপস্থাপন করতে আগ্রহী। যদিও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ালেও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। সূত্র : বণিক বার্তা।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

শেলের পূর্বাভাস

২০৪০ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী এলএনজির চাহিদা বাড়তে পারে ৬০ শতাংশ

প্রকাশের সময় : ০১:০০:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

বিশ্বব্যাপী তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা ২০৪০ সালের মধ্যে ৬০ শতাংশ বাড়তে পারে। চাহিদা বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখবে এশিয়ার দেশগুলোর দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং শিল্প খাতকে কার্বনমুক্ত করার উদ্যোগ হিসেবে এলএনজির ব্যবহার বৃদ্ধি। ব্রিটিশ বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি শেলের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস উঠে আসে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

শেলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৪০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক এলএনজির চাহিদা পৌঁছতে পারে ৬৩ কোটি থেকে ৭১ কোটি ৮০ লাখ টনে। গত বছর জ্বালানি পণ্যটির মোট চাহিদা ছিল ৪০ কোটি ৭০ লাখ টন। এর আগে দেয়া পূর্বাভাসে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এলএনজির চাহিদা পৌঁছতে পারে ৬২ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৬৮ কোটি ৫০ লাখ টনে। কোম্পানিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের পূর্বাভাসের তুলনায় এ হার ১০ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। এছাড়া এটি ভারত ও চীনের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার প্রতিফলন।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ আছে, এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ভারী শিল্প ও পরিবহন খাতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা এবং জ্বালানিনির্ভর প্রযুক্তি খাতের উদীয়মান প্রবৃদ্ধির কারণে ২০৪০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক এলএনজি বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি কোম্পানিটি জানায়, ২০৩০ সালের মধ্যে বাড়তি চাহিদা মেটাতে বাজারে ১৭ কোটি টনেরও বেশি নতুন এলএনজির সরবরাহ আসবে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। যদিও দেশটিতে নতুন এলএনজি প্রকল্পগুলো নিয়ন্ত্রণ অনিশ্চয়তা ও নির্মাণ ব্যয়ের ঝুঁকির মুখে রয়েছে। উল্লেখ্য, শেল প্রতি বছর প্রায় ছয় কোটি টন এলএনজি সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের পূর্বাভাস গঠনে উড ম্যাকেঞ্জি ও এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসের মতো বিভিন্ন জ্বালানি বিশ্লেষকের কাছ থেকে ডাটা সংগ্রহ করে।

শেল জানায়, বিশ্বের বৃহত্তম এলএনজি আমদানিকারক চীন তার আমদানি ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি ১৫ কোটি মানুষকে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ দেবে। অন্যদিকে ভারত আগামী পাঁচ বছরে তিন কোটি মানুষকে সংযোগ দিতে অবকাঠামো উন্নত করছে। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ইউরোপ ২০৩০-এর দশক পর্যন্ত এলএনজির ওপর নির্ভর করবে। কারণ এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়লেও বিদ্যুৎ সরবরাহে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এলএনজি বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে। শেলের এলএনজি বিভাগের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট সেডেরিক ক্রেমার্স বলেন, ‘নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হলে প্রাকৃতিক গ্যাস গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং এটি ব্যাটারির তুলনায় বেশি সাশ্রয়ী। এ কারণেই বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউরোপে এলএনজির চাহিদা ২০৩০-এর দশক পর্যন্ত ধীরে ধীরে বাড়বে।’

জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ জ্বালানি সংকটের সময় এলএনজি আমদানির জন্য ব্যাপকভাবে অবকাঠামোয় বিনিয়োগ করেছে। শেল জানিয়েছে, এ স্থাপনাগুলো ভবিষ্যতে বায়ো-এলএনজি, সিন্থেটিক এলএনজি বা গ্রিন হাইড্রোজেন আমদানির জন্য পুনর্গঠন করা যেতে পারে। শেলসহ অন্যান্য জ্বালানি কোম্পানি প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজিকে কয়লার তুলনায় পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে উপস্থাপন করতে আগ্রহী। যদিও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ালেও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। সূত্র : বণিক বার্তা।