চলতি বছর নয়, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি প্রতি আউন্সে ৩ হাজার ডলারে পৌঁছবে স্বর্ণের দাম

- প্রকাশের সময় : ০৪:৩৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৭১ বার পঠিত
বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের দাম চলতি বছরের শেষ নাগাদ আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলারে পৌঁছার পূর্বাভাস দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস। কিন্তু এ পূর্বাভাস ২০২৬ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত পেছানো হয়েছে। গোল্ডম্যান স্যাকসের দুই বিশ্লেষক লিনা থমাস ও দান স্ট্রুয়ভেন এক প্রতিবেদনে জানান, চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম হতে পারে ২ হাজার ৯১০ ডলার। এর পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে ডিসেম্বরের প্রত্যাশার তুলনায় কম ইটিএফ প্রবাহ। খবর মাইনিং উইকলি, রয়টার্স।
বিশ্লেষকদের ধারণা, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) প্রত্যাশার তুলনায় কম সুদহার হ্রাস করতে পারে। এছাড়া ২০২৫ সালে মুদ্রানীতি শিথীলায়নের গতি কমে যাওয়ায় ইটিএফে মূল্যবান ধাতুটির চাহিদা কমতে পারে।
নোটে লিনা থমাস ও দান স্ট্রুয়ভেন জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তবে বর্তমানে তা কিছুটা শিথিল হয়েছে। দামে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দিয়ে নতুন বছর শুরু হয়েছে। এসব কারণে আগের দেয়া পূর্বাভাস সংশোধন করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা আরো বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে স্বর্ণের দাম খুব বেশি বাড়েনি। কারণ মুদ্রানীতির কারণে তুলনামূলক কম চাহিদা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর উচ্চ ক্রয়।’
গোল্ডম্যান স্যাকসের বিশ্লেষকদের দেয়া তথ্যমতে, বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর চাহিদা দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে থাকতে পারে। সামনের দিনগুলোয় প্রতি মাসে গড়ে ৩৮ টন স্বর্ণ কেনাবেচা হতে পারে। তা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
স্বর্ণের দাম গত বছর ২৭ শতাংশ বেড়েছিল। এ সময় দাম বাড়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রানীতির শিথীলায়ন, নিরাপদ বিনিয়োগের আশ্রয় খাত হিসেবে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা ও বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রয়। তবে নভেম্বরের প্রথম দিকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কমতে থাকে। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যায়। এছাড়া সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি নিয়ে নতুন উদ্বেগের কারণে মূল্যবান ধাতুটির দাম চাপের মুখে পড়েছে। গোল্ডম্যানের অর্থনীতিবিদরা এর আগে চলতি বছর ফেড ১০০ শতাংশীয় পয়েন্ট সুদহার কমাতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এ পূর্বাভাস সংশোধন করে তারা বলছেন, ২০২৫ সালে ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট সুদহার কমাতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গোল্ডম্যান স্যাকসের রিপোর্টে কৃষি খাত বাদে অন্যান্য সব খাতের চাকরির সংখ্যা, বেকারত্বের হার এবং মজুরি বৃদ্ধির হার অন্তর্ভুক্ত থাকে।
এদিকে বিনিয়োগকারীরা ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর বিষয়ে নির্দেশনা পেতে ডিসেম্বরে প্রকাশিত ননফার্ম পে-রোলস রিপোর্টসহ যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক অর্থনৈতিক ডাটার জন্য অপেক্ষা করছেন। এ কারণে গতকাল স্বর্ণের দাম কমেছে।
স্পট মার্কেটে গতকাল ধাতুটির দাম কমেছে আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৫ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য নেমেছে ২ হাজার ৬২৭ ডলার ৩৬ সেন্টে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম দশমিক ৬ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৬৩৯ ডলার ৪০ সেন্টে স্থির হয়েছে।
এছাড়া স্পট মার্কেটে রৌপ্যের দাম আউন্সপ্রতি ২৯ ডলার ৬৪ সেন্টে স্থিতিশীল ছিল। প্লাটিনামের দাম দশমিক ৬ শতাংশ কমে আউন্সে ৯৩২ ডলার ৫৯ সেন্টে নেমেছে। প্যালাডিয়াম ১ শতাংশ কমে স্থির হয়েছে ৯১২ ডলার ৭৫ সেন্টে।