নিউইয়র্ক ০৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অর্ধেকের বেশি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম বাড়াবে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৪৯ বার পঠিত

মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাঝে বিভিন্ন ধরনের চাপের মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান তিন মাসের মধ্যে পণ্য ও পরিষেবার দাম বাড়াবে বলে ব্রিটিশ চেম্বার্স অব কমার্সের (বিসিসি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, উৎপাদন ও পরিচালন খরচ ক্রমাগত বেড়েছে। বিশেষ করে কর্মী নিয়োগ, বীমা প্রিমিয়াম ও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির মতো চাপ পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য করছে। তবে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা দাম বাড়ানোর কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, যা সাধারণ মানুষের ব্যয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে। অক্টোবরে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রথম বাজেটের ঘোষণার কয়েক মাস পর জরিপটি প্রকাশ হলো। ওই বাজেটের কর্মী নিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত কর বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।

জরিপে ৪ হাজার ৮০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ৫৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান আগামী তিন মাস অর্থাৎ এপ্রিলের আগে পণ্য ও সেবার দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে করা এক জরিপে এ ধরনের মত দিয়েছিল ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। বাজেট ঘোষণায় যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর রাচেল রিভস জানিয়েছিলেন, ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কন্ট্রিবিউশনের (এনআইসি) জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশি অর্থ দিতে হবে। পাশাপাশি বাড়ানো হবে ন্যূনতম মজুরির হার। জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবহন পরিষেবার উন্নতি জন্য এ অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল সরকার। কিছু ব্যবসায়িক গ্রুপের সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকারের এ ঘোষণা। তারা বলছেন, কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াকে কঠিন করে তুলছে নতুন নীতি। তিন-চতুর্থাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, কর্মী নিয়োগের খরচ তাদের মূল চাপের কারণ।

জরিপে আরো দেখা গেছে, বাজেট ঘোষণার পর ব্যবসায়িক আস্থা কমেছে। আগামী বছর আয় বাড়বে বলে আশা করছে ৪৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান, যা গত বছরের জরিপের তুলনায় কম। ব্রিটিশ চেম্বার্স অব কমার্সের মহাপরিচালক শেভান হ্যাভিল্যান্ড এ পরিস্থিতিকে ‘প্রেশার কুকারের’ সঙ্গে তুলনা করেন। যেখানে বাড়তি খরচ ও করের কারণে চাপ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বীমা খরচ বৃদ্ধি বিশেষভাবে ক্ষতিকর। ব্যবসা মালিকরা এরই মধ্যে বিনিয়োগ কমানো শুরু করেছে এবং তারা জানাচ্ছে, আগামী মাসগুলোয় পণ্যের দাম বাড়াতে হবে।’ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২২ সালে রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর গত বছর মূল্যস্ফীতির হার দ্রুত কমেছিল। কিন্তু বছরের শেষের দিকে আবার বাড়তে শুরু করে। এখনকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কারণ সুদহার কাটছাঁটের ক্ষেত্রে এ দিকেই নজর রাখে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। উচ্চ মূল্যস্ফীতি সাধারণত ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের জন্য সুদহার কমানোর প্রক্রিয়াকে কঠিন করে তোলে, ফলে মর্টগেজের হার ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এ জরিপে আরো একবার যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির শক্তিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ব্রিটিশ অর্থনীতি কিছু প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। এর মাধ্যমে ২০২৩ সালের শেষের দিকে দেখা দেয়া হালকা মন্দা থেকে পুনরুদ্ধার লাভ করে দেশটি। কিন্তু তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির গতি ছিল শূন্য। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড চতুর্থ প্রান্তিকের জন্যও শূন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে ২০২৫ সালে অর্থনীতি ১ দশমিক ৫ শতাংশ সম্প্রসারণ হতে পারে।

লেবার পার্টি গত গ্রীষ্মে নির্বাচনে জিতে দেশ পরিচালনার ভার নেয়। মূল অগ্রাধিকার হিসেবে তারা অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলে আসছে। কিন্তু সরকারি ঋণ, আবাসন সংকট, মূল্যস্ফীতি ও সাম্প্রতিক ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক বাধাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতি দেখে আসছে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীনরা। সূত্র : বণিক বার্তা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

অর্ধেকের বেশি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান পণ্যের দাম বাড়াবে

প্রকাশের সময় : ০৪:১৭:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাঝে বিভিন্ন ধরনের চাপের মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান তিন মাসের মধ্যে পণ্য ও পরিষেবার দাম বাড়াবে বলে ব্রিটিশ চেম্বার্স অব কমার্সের (বিসিসি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, উৎপাদন ও পরিচালন খরচ ক্রমাগত বেড়েছে। বিশেষ করে কর্মী নিয়োগ, বীমা প্রিমিয়াম ও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির মতো চাপ পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য করছে। তবে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা দাম বাড়ানোর কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, যা সাধারণ মানুষের ব্যয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে। অক্টোবরে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রথম বাজেটের ঘোষণার কয়েক মাস পর জরিপটি প্রকাশ হলো। ওই বাজেটের কর্মী নিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত কর বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।

জরিপে ৪ হাজার ৮০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ৫৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান আগামী তিন মাস অর্থাৎ এপ্রিলের আগে পণ্য ও সেবার দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে করা এক জরিপে এ ধরনের মত দিয়েছিল ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। বাজেট ঘোষণায় যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর রাচেল রিভস জানিয়েছিলেন, ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কন্ট্রিবিউশনের (এনআইসি) জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেশি অর্থ দিতে হবে। পাশাপাশি বাড়ানো হবে ন্যূনতম মজুরির হার। জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবহন পরিষেবার উন্নতি জন্য এ অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল সরকার। কিছু ব্যবসায়িক গ্রুপের সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকারের এ ঘোষণা। তারা বলছেন, কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াকে কঠিন করে তুলছে নতুন নীতি। তিন-চতুর্থাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, কর্মী নিয়োগের খরচ তাদের মূল চাপের কারণ।

জরিপে আরো দেখা গেছে, বাজেট ঘোষণার পর ব্যবসায়িক আস্থা কমেছে। আগামী বছর আয় বাড়বে বলে আশা করছে ৪৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান, যা গত বছরের জরিপের তুলনায় কম। ব্রিটিশ চেম্বার্স অব কমার্সের মহাপরিচালক শেভান হ্যাভিল্যান্ড এ পরিস্থিতিকে ‘প্রেশার কুকারের’ সঙ্গে তুলনা করেন। যেখানে বাড়তি খরচ ও করের কারণে চাপ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, বীমা খরচ বৃদ্ধি বিশেষভাবে ক্ষতিকর। ব্যবসা মালিকরা এরই মধ্যে বিনিয়োগ কমানো শুরু করেছে এবং তারা জানাচ্ছে, আগামী মাসগুলোয় পণ্যের দাম বাড়াতে হবে।’ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২২ সালে রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর গত বছর মূল্যস্ফীতির হার দ্রুত কমেছিল। কিন্তু বছরের শেষের দিকে আবার বাড়তে শুরু করে। এখনকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কারণ সুদহার কাটছাঁটের ক্ষেত্রে এ দিকেই নজর রাখে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। উচ্চ মূল্যস্ফীতি সাধারণত ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের জন্য সুদহার কমানোর প্রক্রিয়াকে কঠিন করে তোলে, ফলে মর্টগেজের হার ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এ জরিপে আরো একবার যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির শক্তিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ব্রিটিশ অর্থনীতি কিছু প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। এর মাধ্যমে ২০২৩ সালের শেষের দিকে দেখা দেয়া হালকা মন্দা থেকে পুনরুদ্ধার লাভ করে দেশটি। কিন্তু তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির গতি ছিল শূন্য। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড চতুর্থ প্রান্তিকের জন্যও শূন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে ২০২৫ সালে অর্থনীতি ১ দশমিক ৫ শতাংশ সম্প্রসারণ হতে পারে।

লেবার পার্টি গত গ্রীষ্মে নির্বাচনে জিতে দেশ পরিচালনার ভার নেয়। মূল অগ্রাধিকার হিসেবে তারা অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলে আসছে। কিন্তু সরকারি ঋণ, আবাসন সংকট, মূল্যস্ফীতি ও সাম্প্রতিক ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক বাধাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতি দেখে আসছে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীনরা। সূত্র : বণিক বার্তা।