নিউইয়র্ক ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

৮ মাসেই এক বছরের রফতানিকে ছাড়াল চা খাত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪
  • / ১৪৮ বার পঠিত

বাগান থেকে চা পাতা সংগ্রহ করছেন নারী শ্রমিকরা ছবি : নিজস্ব আলোকচিত্রী

দেশে কয়েক বছর ধরে চা উৎপাদন বাড়ছে। দেশীয় ভোগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন বাড়ায় রফতানি বাজারও চাঙ্গা হচ্ছে। এরই মধ্যে আট মাসে আগের অর্থবছরের মোট রফতানিকে ছাড়িয়ে গেছে চা খাত।

একসময় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চা উৎপাদন ও রফতানিকারক ছিল বাংলাদেশ। তবে এক-দেড় দশক ধরে চা উৎপাদন আশানুরূপ না বাড়ায় রফতানি স্তিমিত হয়ে যায়। অন্যদিকে দেশীয় ভোগ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ উল্টো আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়। তবে চা খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের পর কয়েক বছর ধরে ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছে দেশের চা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারা। সর্বশেষ ২০২৩ সালে দেশে রেকর্ড ১০ কোটি কেজির বেশি চা উৎপাদন করেছেন বাগান মালিকরা।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চা রফতানি হয়েছে ৮ লাখ ৪৯ হাজার কেজি। তবে সর্বশেষ সাত মাসে রফতানি হয়েছে (২০২৩-২৪ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত) ৭ লাখ ৯৪ হাজার কেজি। ফেব্রুয়ারিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চা রফতানি হয়েছে। অর্থাৎ সর্বশেষ আট মাসে বাংলাদেশ থেকে চা রফতানি হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়েও বেশি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে চায়ের রফতানি বাজার আরো সম্প্রসারণ হবে বলে মনে করছেন চা বোর্ড কর্মকর্তারা।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০০১-০২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চা রফতানি হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি। পরবর্তী কয়েক বছর রফতানি ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ১ কোটি ২৫ লাখ কেজির আশপাশে ছিল। তবে রফতানিতে ধস নামে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে। এক লাফে রফতানি নেমে আসে ৯০ লাখ ২২ হাজার কেজিতে। পরের অর্থবছরে (২০০৬-০৭) রফতানি আরো কমে ৪৮ লাখ ২৮ হাজার কেজিতে নামে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চা রফতানি ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজিতে নেমে যায়, যা দেশের চা রফতানির ইতিহাসে রেকর্ড হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

জানতে চাইলে চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌বাংলাদেশের চা একসময় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ছিল। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে ভোগপ্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় চাহিদা মেটানোর দিকে নজর দেয়া হয়েছে। আমরা এখন চা উৎপাদন ও দেশীয় চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়তি চা উৎপাদন করবেন। এজন্য চায়ের হারানো রফতানি বাজারকে ফিরে পেতে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করি, ২০২৫ সালের পর বাংলাদেশ চা রফতানিতে প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো সমানতালে এগিয়ে যাবে।’

চা বোর্ডের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে (জানুয়ারি পর্যন্ত) খোলা চা রফতানি হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার কেজি। অন্যদিকে ভ্যালু অ্যাডেড বা মোড়কজাত ভালো মানের চা রফতানি হয়েছে ৬ লাখ ৩২ হাজার কেজি। যদিও আগে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া চায়ের ৯৯ শতাংশই ছিল খোলা চা। ২০০১-০২ অর্থবছরে রফতানি হওয়া ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি চায়ের মধ্যে ১ কোটি ৩১ লাখ ১৫ হাজার কেজিই ছিল খোলা চা। বর্তমানে মূল্য সংযোজিত ভালো মানের মোড়কজাত চা রফতানির কারণে চায়ের ভালো মূল্যমান পাচ্ছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে খোলা চায়ের পরিবর্তে উন্নত মানের চা রফতানির পরিকল্পনা করছেন চা বোর্ড ও দেশীয় উদ্যোক্তারা। সূত্র : বণিক বার্তা

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

৮ মাসেই এক বছরের রফতানিকে ছাড়াল চা খাত

প্রকাশের সময় : ০৬:০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

দেশে কয়েক বছর ধরে চা উৎপাদন বাড়ছে। দেশীয় ভোগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন বাড়ায় রফতানি বাজারও চাঙ্গা হচ্ছে। এরই মধ্যে আট মাসে আগের অর্থবছরের মোট রফতানিকে ছাড়িয়ে গেছে চা খাত।

একসময় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চা উৎপাদন ও রফতানিকারক ছিল বাংলাদেশ। তবে এক-দেড় দশক ধরে চা উৎপাদন আশানুরূপ না বাড়ায় রফতানি স্তিমিত হয়ে যায়। অন্যদিকে দেশীয় ভোগ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ উল্টো আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়। তবে চা খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের পর কয়েক বছর ধরে ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছে দেশের চা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারা। সর্বশেষ ২০২৩ সালে দেশে রেকর্ড ১০ কোটি কেজির বেশি চা উৎপাদন করেছেন বাগান মালিকরা।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চা রফতানি হয়েছে ৮ লাখ ৪৯ হাজার কেজি। তবে সর্বশেষ সাত মাসে রফতানি হয়েছে (২০২৩-২৪ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত) ৭ লাখ ৯৪ হাজার কেজি। ফেব্রুয়ারিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চা রফতানি হয়েছে। অর্থাৎ সর্বশেষ আট মাসে বাংলাদেশ থেকে চা রফতানি হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়েও বেশি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে চায়ের রফতানি বাজার আরো সম্প্রসারণ হবে বলে মনে করছেন চা বোর্ড কর্মকর্তারা।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০০১-০২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে চা রফতানি হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি। পরবর্তী কয়েক বছর রফতানি ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ১ কোটি ২৫ লাখ কেজির আশপাশে ছিল। তবে রফতানিতে ধস নামে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে। এক লাফে রফতানি নেমে আসে ৯০ লাখ ২২ হাজার কেজিতে। পরের অর্থবছরে (২০০৬-০৭) রফতানি আরো কমে ৪৮ লাখ ২৮ হাজার কেজিতে নামে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চা রফতানি ৪ লাখ ৭৬ হাজার কেজিতে নেমে যায়, যা দেশের চা রফতানির ইতিহাসে রেকর্ড হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

জানতে চাইলে চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌বাংলাদেশের চা একসময় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ছিল। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে ভোগপ্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় চাহিদা মেটানোর দিকে নজর দেয়া হয়েছে। আমরা এখন চা উৎপাদন ও দেশীয় চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়তি চা উৎপাদন করবেন। এজন্য চায়ের হারানো রফতানি বাজারকে ফিরে পেতে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করি, ২০২৫ সালের পর বাংলাদেশ চা রফতানিতে প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো সমানতালে এগিয়ে যাবে।’

চা বোর্ডের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে (জানুয়ারি পর্যন্ত) খোলা চা রফতানি হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার কেজি। অন্যদিকে ভ্যালু অ্যাডেড বা মোড়কজাত ভালো মানের চা রফতানি হয়েছে ৬ লাখ ৩২ হাজার কেজি। যদিও আগে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া চায়ের ৯৯ শতাংশই ছিল খোলা চা। ২০০১-০২ অর্থবছরে রফতানি হওয়া ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি চায়ের মধ্যে ১ কোটি ৩১ লাখ ১৫ হাজার কেজিই ছিল খোলা চা। বর্তমানে মূল্য সংযোজিত ভালো মানের মোড়কজাত চা রফতানির কারণে চায়ের ভালো মূল্যমান পাচ্ছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে খোলা চায়ের পরিবর্তে উন্নত মানের চা রফতানির পরিকল্পনা করছেন চা বোর্ড ও দেশীয় উদ্যোক্তারা। সূত্র : বণিক বার্তা

হককথা/নাছরিন