নিউইয়র্ক ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তীব্র তুষার ঝড়ে যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেল উত্তোলন কমেছে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৩৬:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪
  • / ৮১ বার পঠিত

যুক্তরাষ্ট্র গত বছরের ডিসেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত ‍জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছিল। তবে এ বছরের জানুয়ারিতে সে তুলনায় উত্তোলন ৬ শতাংশ কমে গেছে।যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।এতে বলা হয়, জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করে। তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।

দেশটির টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল উত্তোলন হয়। জানুয়ারিতে সেখানে উত্তোলন আগের মাসের তুলনায় ৫ শতাংশ কমে দৈনিক ৫৪ লাখ ব্যারেলে নেমেছে। অন্যদিকে উত্তর ডাকোটায় উত্তোলন হয়েছে দৈনিক ১১ লাখ ব্যারেল করে, যা আগের মাসের তুলনায় ১৩ শতাংশ কম।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তীব্র তুষার ঝড়ের কারণে জানুয়ারিতে টেক্সাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। তুষার ও বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় উত্তোলন ক্ষেত্রগুলো। বন্ধ হয়ে যায় বেশির ভাগ পরিশোধন সক্ষমতাও।

ইআইএর দেয়া তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক ১ কোটি ৩৩ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন হয়, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। ওই সময় টেক্সাস ও উত্তর ডাকোটাসহ শীর্ষ সব অঙ্গরাজ্যে রেকর্ড উত্তোলন হয়।

ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে উত্তর ডাকোটায় গত জানুয়ারিতে জ্বালানি তেল উত্তোলন কমে অর্ধেকে নেমে আসে। প্রতিদিন ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন হয়। অঙ্গরাজ্যটির পাইপলাইন অথরিটি এ তথ্য জানিয়েছে। অন্যান্য অঙ্গরাজ্যেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উত্তোলন ব্যাহত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে কমেছে মটর জ্বালানির ব্যবহারও। ইআইএ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে জানায়, ওই মাসে গ্যাসোলিনের সরবরাহ দৈনিক ছয় লাখ ব্যারেল করে কমে যায়, যা দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সরবরাহের পরিমাণ দাঁড়ায় দৈনিক ৮২ লাখ ব্যারেলে। এদিকে জানুয়ারিতে উত্তোলন কমলেও বিশ্ববাজারে পণ্যটির রফতানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখছে দেশটি। গত বছর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশটির শীর্ষ রফতানি পণ্যে পরিণত হয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল।

জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ও এর মিত্র দেশগুলো গত বছরের শুরু থেকেই পণ্যটির উত্তোলন কমাচ্ছে। উদ্দেশ্য বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। এ সুযোগে যুক্তরাষ্ট্র উত্তোলন বিপুল মাত্রায় বাড়াচ্ছে। চলতি বছর দেশটির উত্তোলন রেকর্ড স্পর্শ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা জানান, ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় গত বছরের শুরুর দিকে রুশ জ্বালানি তেলের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বছরের শেষ দিকে দেশটি থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। জবাবে রাশিয়াও বন্ধুভাবাপন্ন দেশগুলোর বাইরে তেল রফতানি না করার ঘোষণা দেয়। এমন বাস্তবতায় ইইউয়ের জ্বালানি তেল আমদানির নির্ভরযোগ্য উৎস হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি জ্বালানি তেল রফতানি প্রবৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর দেশটি জ্বালানি বাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইআইএর এনার্জি আউটলুকে বলা হয়, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়ায় দৈনিক ১ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে। চলতি বছর তা আরো বেড়ে দৈনিক ১ কোটি ৩১ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র : বণিক বার্তা

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

তীব্র তুষার ঝড়ে যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেল উত্তোলন কমেছে

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৬:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র গত বছরের ডিসেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত ‍জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছিল। তবে এ বছরের জানুয়ারিতে সে তুলনায় উত্তোলন ৬ শতাংশ কমে গেছে।যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।এতে বলা হয়, জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করে। তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।

দেশটির টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল উত্তোলন হয়। জানুয়ারিতে সেখানে উত্তোলন আগের মাসের তুলনায় ৫ শতাংশ কমে দৈনিক ৫৪ লাখ ব্যারেলে নেমেছে। অন্যদিকে উত্তর ডাকোটায় উত্তোলন হয়েছে দৈনিক ১১ লাখ ব্যারেল করে, যা আগের মাসের তুলনায় ১৩ শতাংশ কম।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তীব্র তুষার ঝড়ের কারণে জানুয়ারিতে টেক্সাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। তুষার ও বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় উত্তোলন ক্ষেত্রগুলো। বন্ধ হয়ে যায় বেশির ভাগ পরিশোধন সক্ষমতাও।

ইআইএর দেয়া তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক ১ কোটি ৩৩ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন হয়, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। ওই সময় টেক্সাস ও উত্তর ডাকোটাসহ শীর্ষ সব অঙ্গরাজ্যে রেকর্ড উত্তোলন হয়।

ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে উত্তর ডাকোটায় গত জানুয়ারিতে জ্বালানি তেল উত্তোলন কমে অর্ধেকে নেমে আসে। প্রতিদিন ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন হয়। অঙ্গরাজ্যটির পাইপলাইন অথরিটি এ তথ্য জানিয়েছে। অন্যান্য অঙ্গরাজ্যেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উত্তোলন ব্যাহত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে কমেছে মটর জ্বালানির ব্যবহারও। ইআইএ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে জানায়, ওই মাসে গ্যাসোলিনের সরবরাহ দৈনিক ছয় লাখ ব্যারেল করে কমে যায়, যা দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সরবরাহের পরিমাণ দাঁড়ায় দৈনিক ৮২ লাখ ব্যারেলে। এদিকে জানুয়ারিতে উত্তোলন কমলেও বিশ্ববাজারে পণ্যটির রফতানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখছে দেশটি। গত বছর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশটির শীর্ষ রফতানি পণ্যে পরিণত হয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল।

জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ও এর মিত্র দেশগুলো গত বছরের শুরু থেকেই পণ্যটির উত্তোলন কমাচ্ছে। উদ্দেশ্য বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। এ সুযোগে যুক্তরাষ্ট্র উত্তোলন বিপুল মাত্রায় বাড়াচ্ছে। চলতি বছর দেশটির উত্তোলন রেকর্ড স্পর্শ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা জানান, ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় গত বছরের শুরুর দিকে রুশ জ্বালানি তেলের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বছরের শেষ দিকে দেশটি থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। জবাবে রাশিয়াও বন্ধুভাবাপন্ন দেশগুলোর বাইরে তেল রফতানি না করার ঘোষণা দেয়। এমন বাস্তবতায় ইইউয়ের জ্বালানি তেল আমদানির নির্ভরযোগ্য উৎস হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি জ্বালানি তেল রফতানি প্রবৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর দেশটি জ্বালানি বাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইআইএর এনার্জি আউটলুকে বলা হয়, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়ায় দৈনিক ১ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে। চলতি বছর তা আরো বেড়ে দৈনিক ১ কোটি ৩১ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র : বণিক বার্তা

হককথা/নাছরিন