নিউইয়র্ক ০১:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

দুই বছরে রাশিয়ায় রপ্তানি কমেছে ৩৩ শতাংশ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৪২:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
  • / ৩৬ বার পঠিত

দেশের রপ্তানি পণ্যের অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বড় বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয় রাশিয়াকে। দেশটির মাধ্যমে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন দেশগুলোর জোট কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেনডেন্ট স্টেটসের (সিআইএস) ১১টি দেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। প্রতিবেশী ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জেরে সেই সম্ভাবনায় ছেদ পড়ে। যুদ্ধ শুরুর প্রথম বছর রপ্তানি কমে ৫০ শতাংশের নিচে নেমে আসে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে বটে, তবে তা যুদ্ধ শুরুর আগের স্বাভাবিক গতিতে ফেরেনি। যুদ্ধ শুরুর আগের একই সময়ের চেয়ে গত জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে রপ্তানি ৩৩ শতাংশ কমেছে।

দুই বছর আগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় রাশিয়া। যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংকের ওপর। এ কারণে পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো রাশিয়ায় ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। রাশিয়ায়জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হয়। এ রকম আরও কিছু কারণে রপ্তানি বিঘ্নিত হয়। ঝামেলা এড়াতে অনেক কারখানা কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করতে রাজি হয়নি।

রাশিয়ায় উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, পাট, সিরামিক, সবজি, বিভিন্ন ধরনের মাছ ইত্যাদি। ইপিবির তথ্য বলছে, যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত রাশিয়ায় রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৩ কোটি ডলার। পরের অর্থবছরে তা কমে ২৯ কোটি ডলারেরও নিচে নেমে আসে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কিছুটা বেড়ে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ কোটি ডলারের মতো।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধ শুরুর আগে মোট ৩৪টি কারখানা রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি করত। অনেক কারখানাই এখন আর দেশটিতে রপ্তানি করছে না। ঢাকার সবুজবাগের এমন একটি কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমকালকে জানান, যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়ায় পোল্যান্ডভিত্তিক ব্র্যান্ড এলপিপির কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ ডলার মূল্যের একটি রপ্তানি আদেশ পান তারা। যুদ্ধ শুরু হলে সব প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদিত পণ্য নিয়ে বিপদে পড়েন তারা। অনেক দেনদরবারের পর পর্যায়ক্রমে কিছু পোশাক নিয়েছে, কিছু মূল্যও পরিশোধ করেছে এলপিপি। তবে এখনও অনাদায়ী অর্থ অর্ধেকের মতো। এক বছর ধরে অর্থ সংকটে নতুন করে আর রপ্তানি আদেশ নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ব্যাংকও অর্থায়ন করতে রাজি হয়নি। কারখানা এবং নিজের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন তিনি।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধের আগে এক বছরে প্রায় ৮০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে দেশটিতে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর আগের মাস জানুয়ারিতে রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৩২ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি শেষে রপ্তানি আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি হয়। মার্চে তা ৫৫ শতাংশ কমে যায়। যুদ্ধের পরের মাসগুলোতেও রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। সে ধারা এখনও চলছে।

পোশাকের মধ্যে নিট ক্যাটেগরির পণ্য বেশি রপ্তানি হয় রাশিয়ায়। নিট পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি এবং ফতুল্লা অ্যাপারেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে শামীম এহসান সমকালকে বলেন, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকা কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করা যাচ্ছে না। কারণ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো দেশটিতে ব্যবসা করছে না। তৃতীয় দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের মাধ্যমে এখন কিছু পণ্য রাশিয়ায় রপ্তানি হয়। এ ছাড়া রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বেড়েছে। ওইসব দেশের মাধ্যমে রাশিয়ায় কিছু পোশাক যাচ্ছে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক বড় ব্র্যান্ডগুলোর শোরুম স্থানীয়রা কিনে নিচ্ছে। কিছু ব্র্যান্ড রাশিয়ায় আবার ব্যবসা শুরু করবে বলে তারা জানতে পেরেছেন। সূত্র : সমকাল

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

দুই বছরে রাশিয়ায় রপ্তানি কমেছে ৩৩ শতাংশ

প্রকাশের সময় : ০৪:৪২:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪

দেশের রপ্তানি পণ্যের অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বড় বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয় রাশিয়াকে। দেশটির মাধ্যমে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন দেশগুলোর জোট কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেনডেন্ট স্টেটসের (সিআইএস) ১১টি দেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। প্রতিবেশী ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জেরে সেই সম্ভাবনায় ছেদ পড়ে। যুদ্ধ শুরুর প্রথম বছর রপ্তানি কমে ৫০ শতাংশের নিচে নেমে আসে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে বটে, তবে তা যুদ্ধ শুরুর আগের স্বাভাবিক গতিতে ফেরেনি। যুদ্ধ শুরুর আগের একই সময়ের চেয়ে গত জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে রপ্তানি ৩৩ শতাংশ কমেছে।

দুই বছর আগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায় রাশিয়া। যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংকের ওপর। এ কারণে পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো রাশিয়ায় ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। রাশিয়ায়জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হয়। এ রকম আরও কিছু কারণে রপ্তানি বিঘ্নিত হয়। ঝামেলা এড়াতে অনেক কারখানা কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করতে রাজি হয়নি।

রাশিয়ায় উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, পাট, সিরামিক, সবজি, বিভিন্ন ধরনের মাছ ইত্যাদি। ইপিবির তথ্য বলছে, যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত রাশিয়ায় রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৩ কোটি ডলার। পরের অর্থবছরে তা কমে ২৯ কোটি ডলারেরও নিচে নেমে আসে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কিছুটা বেড়ে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ কোটি ডলারের মতো।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধ শুরুর আগে মোট ৩৪টি কারখানা রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি করত। অনেক কারখানাই এখন আর দেশটিতে রপ্তানি করছে না। ঢাকার সবুজবাগের এমন একটি কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমকালকে জানান, যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়ায় পোল্যান্ডভিত্তিক ব্র্যান্ড এলপিপির কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ ডলার মূল্যের একটি রপ্তানি আদেশ পান তারা। যুদ্ধ শুরু হলে সব প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদিত পণ্য নিয়ে বিপদে পড়েন তারা। অনেক দেনদরবারের পর পর্যায়ক্রমে কিছু পোশাক নিয়েছে, কিছু মূল্যও পরিশোধ করেছে এলপিপি। তবে এখনও অনাদায়ী অর্থ অর্ধেকের মতো। এক বছর ধরে অর্থ সংকটে নতুন করে আর রপ্তানি আদেশ নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ব্যাংকও অর্থায়ন করতে রাজি হয়নি। কারখানা এবং নিজের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন তিনি।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধের আগে এক বছরে প্রায় ৮০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে দেশটিতে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর আগের মাস জানুয়ারিতে রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৩২ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি শেষে রপ্তানি আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি হয়। মার্চে তা ৫৫ শতাংশ কমে যায়। যুদ্ধের পরের মাসগুলোতেও রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। সে ধারা এখনও চলছে।

পোশাকের মধ্যে নিট ক্যাটেগরির পণ্য বেশি রপ্তানি হয় রাশিয়ায়। নিট পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি এবং ফতুল্লা অ্যাপারেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে শামীম এহসান সমকালকে বলেন, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকা কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করা যাচ্ছে না। কারণ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো দেশটিতে ব্যবসা করছে না। তৃতীয় দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের মাধ্যমে এখন কিছু পণ্য রাশিয়ায় রপ্তানি হয়। এ ছাড়া রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বেড়েছে। ওইসব দেশের মাধ্যমে রাশিয়ায় কিছু পোশাক যাচ্ছে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক বড় ব্র্যান্ডগুলোর শোরুম স্থানীয়রা কিনে নিচ্ছে। কিছু ব্র্যান্ড রাশিয়ায় আবার ব্যবসা শুরু করবে বলে তারা জানতে পেরেছেন। সূত্র : সমকাল

হককথা/নাছরিন